বাংলা চলচ্চিত্রের প্লেব্যাক সম্রাট হিসেবে খ্যাত গায়ক এন্ড্রু কিশোর। তিনি ‘মেইল ট্রেন’ ছবিতে প্লেব্যাক করার মধ্য দিয়ে চলচ্চিত্রে তার কর্মজীবন শুরু করেন, তবে ছবিটি মুক্তি পায়নি। এরপর তিনি ‘এমিলের গোয়েন্দা বাহিনী’ ছবিতে প্লেব্যাক করেন। মূলধারার চলচ্চিত্রে তার প্রথম প্লেব্যাক ছিল ‘প্রতিজ্ঞা’ ছবিতে।
তার গাওয়া উল্লেখযোগ্য গান হল ‘বড় ভাল লোক ছিল’ ছবির “হায়রে মানুষ রঙিন ফানুস”, ‘নয়নের আলো’ ছবির “আমার বাবার মুখে”, “আমার সারা দেহ খেয়ো গো মাটি”, ‘লাল মেম সাহেব’ ছবির “ওগো বিদেশিনী তোমার চেরী ফুল দাও”, ‘ভাই বন্ধু’ ছবির “ভেঙ্গেছে পিঞ্জর মেলেছে ডানা”, ‘সারেন্ডার’ ছবির “সবাইতো ভালোবাসা চায়”, “জীবনের গল্প আছে বাকি অল্প”, “ডাক দিয়াছেন দয়াল আমারে”, ‘অনুতপ্ত’ ছবির “তুমি এসেছিলে পরশু”, ‘আশা ভালবাসা’ ছবির “গান আমি গেয়ে যাবো”, ‘শেষ ঠিকানা’ ছবির “আমি পাথরে ফুল ফুটাবো”, ‘হারানো প্রেম’ ছবির “এলো বসন্ত আমার গানে”, ‘প্রেমগীত’ ছবির “সুখেরও নীড়ে আমি নীড়হারা পাখি”, ‘প্রেমের সমাধি’ ছবির শিরোনাম গান ও “জীবনের নৌকা চলে”, ‘প্রাণের চেয়ে প্রিয়’ ছবির “পড়েনা চোখের পলক”, ‘বিয়ের ফুল’ ছবির “ঐ চাঁদ মুখে যেন লাগে না গ্রহণ” ও ‘নারীর মন’ ছবির “ঘুমিয়ে থাকো গো সজনী”, ‘আজ গায়ে হলুদ’ ছবির “চোখ যে মনের কথা বলে” প্রভৃতি।
তার গাওয়া অসংখ্য জনপ্রিয় দ্বৈত গানের মধ্যে রয়েছে সাবিনা ইয়াসমিনের সাথে “কি দিয়া মন কাড়িলা”, ‘দোলনা’ ছবির “তুমি আমার কত চেনা”, ‘প্রিয়জন’ ছবির “এ জীবনে যারে চেয়েছি”, ‘স্বপ্নের ঠিকানা’ ছবির “ও সাথীরে যেওনা কখনো দূরে”, ‘হৃদয়ের আয়না’ ছবির “তুমি চাঁদের জোছনা নও”; সামিনা চৌধুরীর সাথে ‘নয়নের আলো’ ছবির “আমার বুকের মধ্যেখানে”; রিজিয়া পারভীনের সাথে ‘ভাংচুর’ ছবির “সবার জীবনে প্রেম আসে”, ডলি সায়ন্তনীর সাথ ‘বাস্তব’ ছবির “বুক চিন চিন করছে হায়” প্রভৃতি।
রুনা লায়লার সাথে এন্ড্রু কিশোরের গাওয়া জনপ্রিয় গানগুলো হল ‘অবুঝ হৃদয়’ ছবির “তুমি আমার জীবন”, ‘দুই জীবন’ ছবির “তুমি আজ কথা দিয়েছো” ও “আমি একদিন তোমায় না দেখিলে”, ‘আশীর্বাদ’ ছবির “চাঁদের সাথে আমি দেব না”, ‘প্রেমের অহংকার’ ছবির “প্রিয়া প্রিয়া বলে ডাকি যতবার”, ‘অধিকার চাই’ ছবির “মন মানেনা মানে না”, ‘বস্তির মেয়ে’ ছবির “আমার মনেরই অঙ্গনে সুখের ফাগুন এলো” প্রভৃতি।
১৯৯০-এর দশকের মাঝামাঝি থেকে কনকচাঁপার সাথে তার রোমান্টিক গানের জুটি গড়ে ওঠে। কনকচাঁপার সাথে তার গাওয়া উল্লেখযোগ্য দ্বৈত গানসমূহ হল ‘তোমাকে চাই’ ছবির শিরোনাম গান ও “ভালো আছি ভালো থেকো”, ‘সত্যের মৃত্যু নেই’ ছবির “নয়নের কাছে থেকো”, ‘আনন্দ অশ্রু’ ছবির “তুমি মোর জীবনের ভাবনা”, ‘কাজের মেয়ে’ ছবির “একদিন তোমাকে না দেখলে”, ‘ভুলনা আমায়’ ছবির “একদিকে পৃথিবী একদিকে তুমি যদি থাক”, ‘মন মানেনা’ ছবির “তুমি হাজার ফুলের মাঝে একটি গোলাপ” ও “একটু চাওয়া একটু পাওয়া”, ‘অন্তরে ঝড়’ ছবির “সবারই মনে আছে একটি আশা”, ‘বিদ্রোহ চারিদিকে’ ছবির “জীবন ফুরিয়ে যাবে”, ‘বিয়ের ফুল’ ছবির “তোমায় দেখলে মনে হয়”, ‘ও প্রিয়া তুমি কোথায়’ ছবির “এত প্রেম ছিল তোমারই বুকে”, ‘প্রেমের তাজমহল’ ছবির “ছোট্ট একটা জীবন নিয়ে”, ‘প্রেমের জ্বালা’ ছবির “সাগরের মতই গভীর”, ‘ফুল নেবে না অশ্রু নেবে’ ছবির “আমার হৃদয় একটা আয়না”, ‘দিল তো পাগল’ ছবির “জীবনে এসেছো তুমি ধীরে ধীরে”, ‘আমার প্রাণের প্রিয়া’ ছবির “কি যাদু করেছ বলোনা”, ‘মনে প্রাণে আছো তুমি’ ছবির “এক বিন্দু ভালোবাসা দাও” প্রভৃতি।
তার জন্ম ১৯৫৫ সালের ৪ নভেম্বর রাজশাহী শহরে। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ম্যানেজমেন্ট বিষয়ে এম কম ডিগ্রি অর্জন করেন।