মোহাম্মদ রফিকউজ্জামান

বাংলা গানে যে কজন মেধাবী গীতিকার রয়েছেন তাদের মধ্যে মোহাম্মদ রফিকউজ্জামান অন্যতম। আধুনিক, চলচ্চিত্র, দেশাত্মবোধক সব মৌলিক গানে রয়েছে তার অবাধ বিচরণ। বিশেষ করে চলচ্চিত্রের গানে মোহাম্মদ রফিকউজ্জামানের অবদান অনন্য।

এ যাবৎ তিনি গান রচনা করেছেন দুই শতাধিক চলচ্চিত্রে। কাহিনী, চিত্রনাট্য, সংলাপ রচনা করেছেন নব্বইটিরও বেশী চলচ্চিত্রের জন্যে। গান লিখতে লিখতেই নাট্যকার রফিকউজ্জামান ১৯৭৫ সালেজড়িয়ে পড়েন চিত্রনাট্য রচনায়। চলচ্চিত্রের জন্যে ক্রমে তিনি হয়ে উঠেন সর্বাপেক্ষা সফল কাহিনীকার, চিত্রনাট্যকার, সংলাপ রচয়িতা ও সঙ্গীত রচয়িতা। তিনিই একমাত্র চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব, যিনি সীমান্ত পেরিয়ে ভারতের কলকাতার অনেক ছবির জন্যেও একাধারে কাহিনি সংলাপ চিত্রনাট্য ও গান রচনা করেছেন।

মোহাম্মদ রফিকউজ্জামানের লেখা চলচ্চিত্রের উল্লেখযোগ্য চিত্রনাট্যগুলো হচ্ছে- ‘দেবদাস’, ‘ঘর সংসার’, ‘সৎ ভাই’, ‘কাজললতা’, ‘বিরাজ বউ’, ‘শুভদা’, ‘সহযাত্রী’, ‘ছেলেকার’, ‘জন্মদাতা’, ‘চরম আঘাত’, ‘না বলো না’ এবং ‘মরণের পরে’সহ আরও অনেক।

তিনি একাধিক জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। ১৯৮৪ সালে ‘চন্দ্রনাথ’ ও ১৯৮৬ সালে ‘শুভদা’ চলচ্চিত্রের জন্য শ্রেষ্ঠ গীতিকার এবং ২০০৮ সালে ‘মেঘের কোলে রোদ’ চলচ্চিত্রের জন্য শ্রেষ্ঠ কাহিনীকার বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্রের পুরস্কার লাভ করেন ।

১৯৪৩ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি মোহাম্মদ রফিকউজ্জামান নানা বাড়ী ঝিনাইদহ জেলার ফুরসুন্দি-লক্ষ্মীপুরে জন্মগ্রহণ করেন। কিন্তু তার পৈতৃক নিবাস যশোর শহরের খড়কী এলাকায়। মো. শাহাদত আলী ও বেগম সাজেদা খাতুনের দ্বিতীয় পুত্র রফিকউজ্জামান। তার বড়ভাই ড. মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রধান। একই সাথে তিনি ছিলেন একজন স্বনামধন্য কবি, সাহিত্যিক ও গীতিকবি। তার অপর ভাইয়েরা হচ্ছেন- জাতীয় দলের প্রাক্তন ফুটবলার মোহাম্মদ শফিকুজ্জামান, বামপন্থী রাজনীতিবিদ মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান, মোহাম্মদ আকতারুজ্জামান, মোহাম্মদ ইমামুজ্জামান, মোহাম্মদ এনামুজ্জামান, মোহাম্মদ হাবিবুজ্জামান এবং প্রাক্তন জাতীয় দলের হকি খেলোয়াড় মোহাম্মদ তারিকুজ্জামান।

তিনি ১৯৬০ সালে যশোর জিলা স্কুল থেকে ম্যট্রিক পাশ করেন। শিক্ষাজীবনের দ্বিতীয় পর্যায়ে যশোর সরকারী মাইকেল মধুসূদন কলেজ থেকে ১৯৬৩ সালে আই. এ পাশ করেন। ১৯৬৫ সালে তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে অনার্স এবং পরে ১৯৬৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।

 

ব্যক্তিগত তথ্যাবলি

কর্মপরিধি