কাজী হায়াৎ (Kazi Hayat) একাধারে একজন পরিচালক, কাহিনীকার, চিত্রনাট্যকার, প্রযোজক এবং অভিনেতা। ১৯৭৯ সালে ‘দি ফাদার’ নামের চলচ্চিত্রের মাধ্যমে পরিচালনা জীবন শুরু করেন। এর আগে পরিচালক মমতাজ আলীর সহকারী হিসেবে চলচ্চিত্রজগতে কর্মজীবন শুরু করেন।
ছাত্রজীবন থেকেই চলচ্চিত্র পরিচালনার আগ্রহ ছিল বলেই এমকম পরীক্ষা দেয়ার পরপরই তিনি চলচ্চিত্র পরিচালক সহকারীর প্রধান সহকারী হিসেবে তিনি কাজ শুরু করেন। পরবর্তীতে আলমগীর কবিরের ‘সীমানা পেরিয়ে’ ছবিতে কাজ করেন। এর পরে তিনি ‘দি ফাদার’ চলচ্চিত্র পরিচালনা করেন যা শৈল্পিক দিক থেকে প্রশংসিত হয়। কিন্তু সিনেমা মুক্তির তিনদিন পরে ছবির প্রযোজক তাকে অফিসে ঢুকতে দেন নি, কারণ ছবিটি শহরে চললেও গ্রামে চলে নি। এই শিক্ষা থেকে তিনি মূলধারার চলচ্চিত্র নির্মানে এগিয়ে আসেন যা চলচ্চিত্রকে লাভজনকও করে। তার ভাষায়, চলচ্চিত্র পরিচালকের কান্না পাওয়া যায় তার দ্বিতীয় ছবি ‘দিলদার আলী’ চলচ্চিত্রে।
কাজী হায়াতের ছবিগুলোতে সমাজের বিভিন্ন অনিয়ম, অরাজকতা ইত্যাদি উঠে আসে। চলচ্চিত্র নির্মানে তিনি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার সহ বিভিন্ন দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কার অর্জন করেছেন। তার পরিচালিত চলচ্চিত্রগুলোকে তিনি দেশপ্রেমিক চলচ্চিত্র হিসেবে আখ্যায়িত করেন। বিবিসি’র এক সাক্ষাতকারে তিনি অকপটে স্বীকার করেছেন বাণিজ্যিক বিবেচনায় শিল্পের সঙ্গে তিনি সমঝোতা করেছেন, শিল্পের প্রতি তাঁর দায়িত্বে অবিচার করেছেন।
তার ‘ধর’ ছবিটি অশ্লীল সংলাপের অভিযোগে ব্যাপকভাবে সমালোচিত হলেও তিনি ছবির প্রয়োজনেই এই সংলাপ ব্যবহার করেছেন বলে তিনি দাবী করেন। তিনি মনে করেন ছবিতে দর্শকদের প্রতি একটা অঙ্গীকার থাকা উচিত, সাধারণ মানুষকে বিনোদনের বাইরে বাড়তি কিছু দেয়া উচিত।
চলচ্চিত্র নির্মানের পাশাপাশি কাজী হায়াৎ চলচ্চিত্রে অভিনয়ও করেন। ফজর আলীর লুঙ্গির মাধ্যমে তিনি বিজ্ঞাপনের মডেল হিসেবেও আত্মপ্রকাশ করেন। ‘ইভটিজিং’ চলচ্চিত্র নির্মানের মাধ্যমে তিনি চলচ্চিত্র পরিচালনা থেকে বিদায়ের ঘোষনা দেন। ২০১৩ সালের জুলাই মাসে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে পরিচালক সমিতির কার্যকরী পরিষদের কিছু সিদ্ধান্ত ও কার্যকলাপে ব্যথিত হয়ে সদস্যপদ প্রত্যাহার করে নেন। অবশ্য তিনি এরপরও কয়েকটি চলচ্চিত্র পরিচালনা করেছেন। ‘বীর’ চলচ্চিত্র দিয়ে তিনি ৫০টি চলচ্চিত্র পরিচালনার মাইলফলক স্পর্শ করেন।