রোজী ১৯৬৪ সালে চলচ্চিত্রকার জিল্লুর রহমানের পরিচালনায় ‘এই তো জীবন’ ছবিতে অভিনয়ের মাধ্যমে চলচ্চিত্রে আসেন। তবে প্রথম খ্যাতি অর্জন করেন জহির রায়হান পরিচালিত ‘জীবন থেকে নেয়া’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করে।
রোজী আফসারী অভিনীত উল্লেখযোগ্য আরো কয়েকটি ছবি হলো ‘এতটুকু আশা’, ‘নীল আকাশের নিচে’, ‘মানুষের মন’, ‘তিতাস একটি নদীর নাম’, ‘আলোর মিছিল’, ‘লাঠিয়াল’, ‘গাঁয়ের বধু’, ‘বন্দন’, ‘কাঁচ কাটা হীরে’, ‘অশিক্ষিত’, ‘সূর্যগ্রহণ’, ‘ছোট মা’, ‘সূর্য সংগ্রাম’, ‘ক্ষমা’, ‘এই ঘর এই সংসার’ ইত্যাদি। চল্লিশোর্ধ বছরের ক্যারিয়ারে প্রায় ৩৫০টি ছবিতে অভিনয় করেছেন রোজী আফসারী। এর মধ্যে পাকিস্তানের ‘জাগে হুয়া সাবেরা’, ‘পুনম কি রাত’সহ প্রায় ২৫টি উর্দু ছবি রয়েছে। রোজীর সর্বশেষ অভিনীত ছবি ‘পরম প্রিয়’ ২০০৫ সালে মুক্তি পেয়েছিল।
অভিনয়ের গণ্ডি ছাড়িয়ে রোজী আফসারী নিজের প্রতিষ্ঠান রোজী ফিল্মসের ব্যানারে অসংখ্য ছবি প্রযোজনা করেছেন। অভিনয় আর প্রযোজনার পাশাপাশি রোজী আফসারী একটি চলচ্চিত্রও তৈরি করেন। ১৯৮৬ সালে তার পরিচালিত ছবি ‘আশা নিরাশা’ মুক্তি পায়। চলচ্চিত্রে অনবদ্য ভূমিকার জন্য পাঁচবার জহির রায়হান পদক, পাকিস্তানের সর্বোচ্চ পুরস্কার ‘নিগার’সহ দেশি-বিদেশি প্রায় ৫০টি পুরস্কারে ভূষিত হন তিনি। ১৯৭৪ সালে ‘আলোর মিছিল’ ছবিতে অভিনয় জন্য সেরা পার্শ্ব অভিনেত্রী হিসেবে বাচসাস পুরস্কার এবং ১৯৭৫ সালে ‘লাঠিয়াল’ ছবিতে অভিনয়ের জন্য সেরা পার্শ্ব অভিনেত্রী হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন রোজী আফসারী।
১৯৮১ সালে চলচ্চিত্র পরিচালক ও প্রযোজক মালেক আফসারীকে বিয়ে করেন রোজী। তিনি ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে তিনি ‘এ’ লেভেল শেষ করে চলচ্চিত্র জীবন শুরু করেছিলেন।
রোজী আফসারী দীর্ঘদিন ধরে কিডনির সমস্যায় ভুগছিলেন। তার দুটি কিডনিই নষ্ট হয়ে যায়। চার বছর আগে থেকে নষ্ট হয়ে যাওয়া কিডনি নিয়ে তিনি বেঁচে থাকার জন্য লড়ছিলেন। ২০০৭ সালের ৯ মার্চ ৫৭ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।