চিত্রনায়িকা পূর্ণিমা (Purnima) প্রথম চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন ‘শত্রু ঘায়েল’ ছবিতে শিশুশিল্পী হিসেবে। নায়িকা হিসেবে জাকির হোসেন রাজু পরিচালিত ‘এ জীবন তোমার আমার’ ছবির মাধ্যমে যাত্রা শুরু করেন ১৯৯৮ সালে। এ সময় তিনি মাত্র নবম শ্রেণীতে পড়তেন। তার প্রথম ছবির নায়ক ছিলেন রিয়াজ।
শুরুটা তার ভালো হয় নি। প্রথম ছবি মুক্তির দিনে মুক্তি পায় শহীদুল ইসলাম খোকন পরিচালিত চলচ্চিত্র ‘ভন্ড’ যেখানে নায়ক রুবেলের বিপরীতে ছিলেন নবাগত নায়িকা তামান্না। ভন্ড ছবির সাফল্যে পূর্ণিমার প্রথম ছবি ভরাডুবি হয় যা পূর্ণিমার ক্যারিয়ারকে ঝুঁকির মুখে ফেলে দেয়। নতুন ছবির এ ব্যর্থতা প্রসঙ্গে পূর্ণিমা বলেছিলেন, ‘এটা ছিল আমার জন্য দুঃস্বপ্নের মতো। ছবি মুক্তির আগের দিন আমি রিকশা করে বাসার সামনে রিকশাওয়ালার কাছে জানতে চাইলাম, শুক্রবার দুটি ছবি মুক্তি পাবে। তুমি কোনটি দেখবে? সে কালক্ষেপন না করেই বলল ‘ভন্ড’ ছবিটি দেখব। আর ছবি মুক্তির পর থেকে কয়েক সপ্তাহ আমি বিছানা থেকে উঠিনি।’
পূর্ণিমা এক বছর সময় নেন পুনরায় চলচ্চিত্রে ফিরে আসতে। কিন্তু আরও দুটো ছবি ফ্লপ হওয়ায় তাকে ‘কুফা’ নায়িকা বলা শুরু হয়েছিল। যে শহীদুল ইসলাম খোকনের চলচ্চিত্রের কারণে তার প্রথম চলচ্চিত্র ব্যর্থতার মুখে পড়ে সেই খোকনেরই ‘যোদ্ধা’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে ফিরে আসেন পূর্ণিমা। খোকনের ‘যোদ্ধা’ এবং বাদশা ভাই পরিচালিত ‘কাল্লু মামা’ হিট হয়। তারপর পূর্ণিমাকে আর ফিরে তাকাতে হয় নি।
ক্যারিয়ারে তুঙ্গে থাকা অবস্থায় গোপনে বিয়ে করেছেন এমন গুজবে সাময়িক ধ্বস নামে তার। ‘ওই সময়টা আমার সবচেয়ে খারাপ, কেটেছে। মানুষ নানামুখী গসিপ–গুঞ্জন রটিয়ে আমাকে ডিস্টার্ব করে রেখেছিল। যে কারণে চলচ্চিত্রাভিনয় থেকে নিজেকে কিছুটা সরিয়ে নিয়েছিলাম’ – এক সাক্ষাতকারে বলেছিলেন পূর্ণিমা। কিন্তু আবারও ফিরে আসেন সাফল্যের সাথে।
২০১০ সালে ঘোষনা দিয়েই ফাহাদের সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন পূর্ণিমা। বিয়ের পরে চলচ্চিত্রকে বিদায় জানিয়ে জাপানে স্থায়ী হবেন এমন ঘোষনা দিলেও পরে ফিরে আসেন। ফাহাদের সাথে সম্পর্কের টানাপোড়েন নিয়েও সংবাদ হন পূর্ণিমা। বর্তমানে স্বামীর সাথে চট্টগ্রামে থাকছেন তিনি। চলচ্চিত্রকে বিদায় না জানালেও দূরে রয়েছেন, নতুন চলচ্চিত্রে চুক্তিবদ্ধও হচ্ছেন না বর্তমানে। এক সাক্ষাতকারে বেছে বেছে ভালো গল্পের চলচ্চিত্র, টিভি নাটক এবং মডেলিং করবেন বলে জানিয়েছেন পূর্ণিমা।
২০১৪ সালের ১৩ এপ্রিল সন্ধ্যায় পূর্ণিমা রাজধানীর উত্তরাস্থ সালাউদ্দিন হাসপাতালে সিজারের মাধ্যমে একটি কন্যা সন্তানের জন্ম দেন।
পূর্ণিমার বাবা মরহুম মোঃ হানিফ এবং মা সুফিয়া বেগম। পূর্ণিমারা দুই বোন, বোনের নাম রেখা। চলচ্চিত্রে ভালো অভিনয়ের স্বীকৃতি স্বরূপ ২০১০ সালে ‘ওরা আমাকে ভালো হতে দিল না’ ছবির জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান পূর্ণিমা।