‌আঁচল

আঁচলের চলচ্চিত্রে আগমন রাজু আহম্মেদের ‘ভুল’ ছবি দিয়ে। সেই ছবিতে আঁচলের নাম ছিল আঁখি। অভিষেকেই সবাইকে চমকে দিয়েছিলেন চিত্রনায়িকা হাসনাহেনা আঁখি আঁচল। কারণ তিনিই প্রথম কোন নবাগত নায়িকা যার পর পর দুই সপ্তাহে দুটি ছবি মুক্তি পেয়েছিল। তার দ্বিতীয় ছবি ছিল মাসুদ কায়নাতের ‘বেইলি রোড’। ছবিগুলো খুব ব্যবসা না করলেও আঁচলের অভিনয় ও সুন্দর চেহারা খুব সহজেই দর্শকের নজর কাড়ে।

‘ভুল’ ও ‘বেইলী রোড’ ছবি দুটোর পর তিনি নাবিল আশরাফের ‘ভালোবাসার রংধনু’ ছবিতে অভিনয় করেন। সেখানে তার বিপরীতে অভিনয় করেন ছোট পর্দার অভিনেতা নাঈম। বাপ্পির নায়িকা হওয়া এবং জুটিবদ্ধ হয়ে কাজ করাটা একেবারেই ছিল হঠাৎ একটি ঘটনা। এক রাতে কাহিনীকার আবদুল্লাহ জহির বাবু যোগাযোগ করে আঁচলের সঙ্গে বললেন, শাহীন সুমনের ছবি ‘জটিল প্রেম’ এ কাজ করার কথা। সকাল বেলা সাইনিং এবং সকাল থেকেই শুটিং। এমন একটা সুযোগের অপেক্ষায় ছিলেন আঁচল। কোন প্রকার চিন্তা-ভাবনা না করেই রাজি হয়ে যান। রাতে গুছিয়ে রাখেন ল্যাগেজ। সকাল বেলা চুক্তিবদ্ধ হয়েই ছুটে যান হোতাপাড়ায় খতিব খামার বাড়িতে। বাপ্পির সঙ্গে ‘জটিল প্রেম’-এর পাশাপাশি চুক্তিবদ্ধ হয়ে যান ‘প্রেম প্রেম পাগলামী’ এবং ‘কি প্রেম দেখাইলা’ ছবিতে।

এরপর তিনি ওয়াজেদ আলী সুমনের ‘কি দারুণ দেখতে’, সাফি উদ্দিন সাফির ‘ফাঁদ’ ছবিতে শাকিব খানের বিপরীতে, ওয়াজেদ আলী সুমনের ‘আজব প্রেম’ ছবিতে বাপ্পির বিপরীতে  এবং মনিরুল ইসলাম সোহেলের ‘স্বপ্ন যে তুই’ ছবিতে ইমনের বিপরীতে অভিনয় করেছেন।

আঁচল প্রথম ক্লাস এইটে পড়াকালীন সময়ে এসিআই এর একটি বিজ্ঞাপনে মডেল হয়েছিলেন, বাবা-মা’র অগোচরেই। অভিনয় শুরুর আগে তিনি কিছু বিজ্ঞাপনে মডেলিং করেন। এগুলো হল শরীফ মেলামাইন, তিব্বত কদুর তেল এবং বোটানিক অ্যারোমা ফেয়ারনেস ক্রিম। মডেলিং এর পাশাপাশি মহানগর নাট্যাঙ্গন এবং রেনেসা থিয়েটারেও যোগ দিয়েছিলেন অভিনয় শেখার জন্য।

মায়ের বাড়িও ছেড়েছিলেন আঁচল প্রেমের টানে। এ কেমন প্রেমের গল্প’ ছবি নির্মাণের মাধ্যমে জুয়েল নামে এক প্রযোজকের সাথে সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ছবিটি পরিচালনা করার কথা ছিল নবাগত ফয়সাল রদ্দির। কিন্তু ছবির শুটিংয়ের আগেই প্রযোজক জুয়েল ও নায়িকা আঁচলের মধ্যে বন্ধুত্ব তৈরি হয়। তারপর প্রেম। নির্মাতা সূত্রে জানা যায়, ছবি নির্মাণের ইচ্ছা ছিল না প্রযোজকের। ছবি ছিল উপলক্ষ মাত্র। নায়িকার সঙ্গে প্রেম করতেই প্রযোজকের ছবি নির্মাণে আসা। ছবি শুরুর আগেই প্রেমটা শুরু হয়ে যাওয়ায় সাইনিং এবং ফটোসেশনের পর আর বেশি বিনিয়োগ করতে হয়নি প্রযোজকের। ২০১২ সালের ১২ ডিসেম্বর গোপনে বিয়ে করেন এবং চলচ্চিত্র থেকে দূরে সরে যান আঁচল। কিন্তু এ বিয়ে বেশি দিন টেকেনি। ২০১৪ সালের ১৪ এপ্রিল স্বামী জুয়েলকে তালাক দেন তিনি।

আঁচলের বাবা মোঃ হাফিজুর রহমান এবং মাতা সালমা বেগম। তার বড় ভাই আশিকুর রহমান। আঁচল খুলনা পায়োনিয়ার গার্লস স্কুল থেকে এসএসসি এবং এইচএসসি পড়াশোনা শেষ করে স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটিতে বিবিএ অধ্যয়ন করেছেন।

 

উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র

ব্যক্তিগত তথ্যাবলি

পুরো নাম হাসনাহেনা আঁখি আঁচল
ডাকনাম আঁচল
জন্মস্থান খালিশপুর, খুলনা।
উচ্চতা ১৬৫ সে.মি.