বাংলা চলচ্চিত্রের শক্তিশালী অভিনেতা এবং খলনায়কের নাম আদিল। পেশায় আইনজীবি আদিল আশি ও নব্বই দশকে খলচরিত্রে অভিনয় করে বেশ আলোচিত হন। খলচরিত্রে অভিনয়ের জন্য তিনি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারেও ভূষিত হন।
ছাত্রজীবন থেকেই তিনি মঞ্চে অভিনয়ের পাশাপাশি পাকিস্তান আমলে টেলিভিশনের নাটকে অভিনয় করেছেন। ১৯৭২ সালে হাসমত পরিচালিত ‘এখানে আকাশ নীল’ সিনেমার মাধ্যমে চলচ্চিত্রে পদার্পন করেন। ‘নসীব’, ‘নীলিমা’ ও ‘উছিলা’ ছবিতে অভিনয় করে তিনি তিনবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান। পরবর্তীতে রাজমহল, বারুদ, বন্দুক, বুলবুল এ বাগদাদ, ঈমান, চন্দ্রলেখা, মোকাবেলা, তাজ ও তলোয়ার, সওদাগর, নাগিনী কন্যা, তিন বাহাদুর, শাহী দরবার, নসীব, রাজিয়া সুলতানা, নেপালী মেয়ে, পাতাল বিজয়, অশান্তিসহ অসংখ্য ছবিতে খলচরিত্রে অভিনয় করে আদিল খলনায়ক হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেন। অভিনয় জীবনে তিনি প্রায় তিনশতাধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। ২০১১ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ব্যবসাসফল ছবি ‘কোটি টাকার কাবিন’ ছিল চলচ্চিত্রে তার অভিনীত শেষ ছবি।
আদিল দীর্ঘদিন ধরেই ডায়াবেটিসে ভুগছিলেন, তার হৃদপিণ্ডেও সমস্যা ছিল। বেশ কয়েক বছর আগে চলচ্চিত্রকে বিদায় জানানো অভিনেতা আদিল আইনজীবী হিসেবে কাজ করতেন। ২০১৪ সালে হঠাৎ তার স্মৃতিশক্তি বিলুপ্ত হতে শুরু করে নিজেকে আইন পেশা থেকে সরিয়ে নেন। তারপর ঘরেই কাটছিলো তার দিন।
৩ অক্টোবার ২০১৫ শনিবার রাত ১২টার দিকে আদিল বুকে ব্যথা ও শ্বাসকষ্ট শুরু হলে তাকে স্থানীয় হাসপাতালে নেয়ার পথেই তিনি মারা যান। হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদেরকে জানিয়েছেন, হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে তার মৃত্যু হয়েছে। পরদিন রোববার দুপুরে বাদ জোহর স্থানীয় মসজিদে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তার নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজা শেষে নারায়ণগঞ্জ জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও আইনজীবী সমিতির পক্ষ থেকে মরহুমের মরদেহে ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। পরে শহরের মাসদাইরে পৌর কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়।
আদিলের দুটি সন্তান – মেয়ে মুনিয়া এবং ছেলে বাবুজ রাইয়ান।