বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে প্রায় সাড়ে তিন শতাধিক চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় অভিনেত্রী নূতন। শৈশবে গান দিয়ে সাংস্কৃতিক কার্যক্রমের সাথে যুক্ত হলেও পরবর্তীতে নৃত্য এবং মঞ্চ অভিনয়ের মাধ্যমে চলচ্চিত্রে অভিনয় শুরু করেন নূতন। প্রথম ছবিতেই তিনি সফলতা লাভ করেন। ১৯৭০ সালে তার প্রথম চলচ্চিত্র মুক্তি পায় এবং তিনি এখনো অভিনয় করে যাচ্ছেন। নূতনের আরেকটি পরিচয় হল তিনি একজন সফল চলচ্চিত্র প্রযোজক।
নূতনের বড় বোন গীতার হাত ধরে চলচ্চিত্রে অভিনয়ের সুযোগ পান নূতন। চলচ্চিত্রে অভিনয়ের আগে থেকেই তিনি গান, নাচ এবং অভিনয়ের সাথে যুক্ত ছিলেন। শৈশবে তিনি গান শিখেন। পরবর্তীতে নৃত্যের প্রতি আগ্রহ থেকে নাচ শিখেন। তারপর ময়মনসিংহের মঞ্চ নাটকের সাথে জড়িত হন এবং সফলতা অর্জন করেন। নতুনের বড় বোন গীতা চলচ্চিত্রে অভিনয় করতেন। তিনি নূতনকে নায়িকা বানানোর আগ্রহ নিয়ে অভিনেত্রী সুমিতা দেবীর সাথে পরিচয় করিয়ে দেন। সুমিতা দেবী নতুন প্রভাত নামে একটি চলচ্চিত্র নির্মানের জন্য নতুন নায়ক নায়িকার খোঁজে ছিলেন। তার ইচ্ছে ছিল নায়িকার নাম থাকবে নূতন এবং নায়কের নাম হবে প্রভাত। নায়িকা হিসেবে নূতন নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি পারিবারিক নাম রত্না থেকে ‘নূতন’ হয়ে যান। প্রভাত নামে নতুন একজন অভিনেতা নির্বাচিত হলেও পরবর্তীতে তিনি অভিনয় করেন নি, নূতনের বিপরীতে অভিনয় করেন আনসার। নতুন প্রভাত পরিচালনা করেছিলেন মোস্তফা মেহমুদ। আর এভাবেই ১৯৭০ সালে রূপালী পর্দায় নূতনের অভিষেক ঘটে।
প্রথম ছবিতেই নূতন পরিচিতি অর্জনে সক্ষম হন। স্বাধীনতা যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে প্রথম মুক্তিযুদ্ধের চলচ্চিত্র ‘ওরা ১১ জন’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করে তিনি প্রশংসিত হন। কিছুদিন নিয়মিত চলচ্চিত্রে অভিনয় করলেও প্রায় পাঁচ বছর তিনি চলচ্চিত্র থেকে দূরে ছিলেন। নায়করাজ রাজ্জাক পরিচালিত ‘পাগলা রাজা’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে নূতন আবারও নতুনভাবে যাত্রা শুরু করেন। ‘স্ত্রীর পাওনা’ চলচ্চিত্রে অসাধারণ অভিনয়ের জন্য নূতন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে ভূষিত হন।
চলচ্চিত্রে অভিনয়ের পাশাপাশি তিনি চলচ্চিত্র প্রযোজনাও করেছেন। তার প্রযোজনা সংস্থার নাম বিএন প্রোডাকশন। তার প্রযোজিত প্রথম চলচ্চিত্র ‘চান সুরুজ’। এরপর ‘কাবিন’, ‘সাহস’, ‘রূপের রাণী গানের রাজা’, ‘নাচে নাগিন’, ‘শত্রু ধ্বংস’সহ আরও বেশ কয়েকটি ছবি প্রযোজনা করেন তিনি।
জন্মসূত্রে নূতন হিন্দু ধর্মাবলাম্বী ছিলেন। পরবর্তীতে তিনি ধর্মান্তরিত হয়ে মুসলমান হন এবং প্রযোজক-পরিচালক রুহুল আমিন বাবুলকে বিয়ে করেন।