সোহেল রানা

সোহেল রানা একজন অভিনেতা, প্রযোজক এবং পরিচালক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মনোবিজ্ঞানে এমএ ডিগ্রি নিয়েছেন পড়াশোনায়। এর পর করেছেন এলএলবি। ‘ওরা ১১ জন’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে প্রযোজক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। অভিনীত এবং পরিচালিত প্রথম ছবি ‘মাসুদ রানা’।

সোহেল রানা বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতি ও বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রযোজক পরিবেশক সমিতির সাবেক সভাপতি। তার প্রযোজনা সংস্থার নাম পারভেজ ফিল্মস।

সোহেল রানার জন্ম ১৯৪৭ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ঢাকায়। তার আসল নাম মাসুদ পারভেজ। তার পৈত্রিক নিবাস বরিশাল জেলায়। তার ছোট ভাই মাসুম পারভেজ রুবেলও একজন অভিনেতা।

ছাত্রজীবনে তিনি ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিলেন। ১৯৭১ সালে তিনি মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েন। যুদ্ধের পর তিনি চলচ্চিত্রে যুক্ত হন। ২০০৯ সালে তিনি জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্যপদ গ্রহণ করে জাতীয় পার্টিতে যোগ দেন। তিনি জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদের নির্বাচন বিষয়ক উপদেষ্টা ছিলেন।

১৯৯০ সালে তিনি ডা. জিনাত পারভেজকে বিয়ে করেন। তাদের একমাত্র সন্তান পুত্র মাশরুর পারভেজ জীবরান, যিনি ইউল রাইয়ান নামে চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন।

গোলাম মুস্তাফা

গোলাম মুস্তাফা একজন প্রখ্যাত চলচ্চিত্র অভিনেতা ও আবৃত্তিকার। মঞ্চে, বেতারে, টিভিতে সমানভাবে জনপ্রিয় ছিলেন। ১৯৬০ সালে ‘রাজধানীর বুকে’ ছবিতে জমিদারের ভূমিকায় প্রথম অভিনয় করেন। প্রথম ছবি থেকেই তিনি নানা চরিত্রের শক্তিমান অভিনেতা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। প্রায় দুই শতাধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছিলেন তিনি। টেলিভিশনেও ছিল তাঁর দাপুটে পদচারণ। চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য পেয়েছেন তিনটি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, ও একাধিক বাচসাস পুরস্কার এবং একুশে পদকে ভূষিত হয়েছেন।

তার জন্ম ১৯৩৫ সালের ২ মার্চ বরিশালের নলছিটির দপদপিয়া গ্রামে। গোলাম মুস্তাফার স্ত্রী অভিনেত্রী হোসনে আরা। তাদের দুই মেয়ে – অভিনেত্রী সুবর্ণা মুস্তাফা ও ক্যামেলিয়া মুস্তাফা। তার জামাতা হুমায়ুন ফরীদিও কিংবদন্তি অভিনেতা। ২০০৩ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি তিনি ঢাকায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

খলিল

বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে খলিল (Khalil) শক্তিশালী অভিনেতা হিসেবে সুপরিচিত।  ১৯৬২ সালে ‘সোনার কাজল’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে চলচ্চিত্রে যাত্রা শুরু করেন। এর আগে তিনি মঞ্চে অভিনয় করেছেন। চলচ্চিত্রের পাশাপাশি মঞ্চ ও টিভি নাটকে অভিনয় করে তিনি সুপরিচিত। Continue reading

সুজাতা

সুজাতা (Sujata) ফোক সম্রাজ্ঞী হিসেবে খ্যাত কারণ তিনি প্রায় তিন শতাধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন যার মধ্যে পঞ্চাশটিরও বেশী ফোক ঘরানার চলচ্চিত্র। সুজাতা একজন অভিনেত্রী, চলচ্চিত্র প্রযোজক এবং পরিচালক। Continue reading

সুমিতা দেবী

বাংলাদেশি চলচ্চিত্রের ‘ফার্স্ট লেডি’ হিসেবে খ্যাত অভিনেত্রী সুমিতা দেবী। দীর্ঘ অভিনয় জীবনে তিনি বেতার, টেলিভিশন এবং মঞ্চ নাটকেও সমান তালে অভিনয় করেছেন। Continue reading

শাবানা

বাংলাদেশী চলচ্চিত্রে কিংবদন্তী অভিনেত্রীর নাম শাবানা (Shabana)। মাত্র নয় বছর বয়সে চলচ্চিত্রে অভিনয় শুরু করেছিলেন, দাপটের সাথে অভিনয় চালিয়ে গেছেন দীর্ঘদিন, তারপর হঠাৎ করেই চলচ্চিত্রকেই শুধু বিদায় জানাননি, জীবনযাত্রায় আমূল পরিবর্তন এনে দেশ থেকে বিদায় নিয়ে স্বামী সন্তানসহ প্রবাসী হয়েছেন। বর্তমানে অভিনেত্রী শাবানা সজীব হয়ে আছেন সিনেমার দর্শকদের মনে, ব্যক্তি শাবানা স্বেচ্ছা নির্বাসনে আছেন। Continue reading

শবনম

পাকিস্তান এবং বাংলাদেশের একসময়কার জনপ্রিয় অভিনেত্রী শবনম। বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের প্রায় শুরু থেকেই তিনি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। অবশ্য পরবর্তীতে তিনি উর্দু চলচ্চিত্রে সফলতা লাভ করেন এবং পাকিস্তানের ছবিতে অভিনয় করেন। আশির দশকের শেষভাগে তিনি পুনরায় বাংলা চলচ্চিত্রে অভিনয় করতে শুরু করেন। কাজী হায়াৎ পরিচালিত আম্মাজান চলচ্চিত্রে আম্মা চরিত্রে অভিনয়ের জন্য তিনি সুখ্যাতি অর্জন করেন। Continue reading

বুলবুল আহমেদ

বাংলা চলচ্চিত্রের মহানায়ক খ্যাত বুলবুল আহমেদ ১৯৭৩ সালে ‘ইয়ে করে বিয়ে’ দিয়ে চলচ্চিত্রাঙ্গনে যাত্রা শুরু করেন। এই চলচ্চিত্রের পরিচালক আবদুল্লাহ ইউসুফ ইমাম তার নাম রাখলেন ‘বুলবুল’। তিনি স্মরণীয় হয়ে থাকবেন সীমানা পেরিয়ে, দেবদাস, রূপালী সৈকত, মহানায়ক এবং জীবন নিয়ে জুয়া ছবির জন্য।

তাঁর অন্যান্য উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র হল — ‘পুরস্কার’, ‘সোহাগ’, ‘বৌরানী’, ‘ঘর সংসার’, ‘বধূ বিদায়’, ‘ছোট মা’, ‘আরাধনা’, ‘সঙ্গিনী’, ‘সময় কথা বলে’, ‘স্মৃতি তুমি বেদনা’, ‘শেষ উত্তর’, ‘স্বামী’, ‘ওয়াদা’, ‘গাঙচিল’, ‘কলমিলতা’, ‘জন্ম থেকে জ্বলছি’, ‘ভালো মানুষ’, ‘বদনাম’, ‘দুই জীবন’, ‘দিপু নাম্বার টু’, ‘ফেরারি বসন্ত’, ‘দ্য ফাদার’, ‘রাজলক্ষ্মী-শ্রীকান্ত’ প্রভৃতি। তার অভিনীত সর্বশেষ চলচ্চিত্র ‘পরম প্রিয়’।

অভিনয়ের জন্য বুলবুল আহমেদ তিনবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেছেন। ১৯৭৭ সালে ‘সীমানা পেরিয়ে’, ১৯৭৮ সালে ‘বধূ বিদায়’, ও ১৯৮০ সালে ‘শেষ উত্তর’ ছবির জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন।

বুলবুল আহমেদের জন্ম ১৯৪১ সালে পুরান ঢাকার আগামসিহ লেনে। তাঁর প্রকৃত নাম তাবারক আহমেদ। বাবা-মা আদর করে ডাকতেন ‘বুলবুল’। বাবা মায়ের আট সন্তানের মধ্যে তিনি ছিলেন অষ্টম।

বুলবুল আহমেদের স্ত্রী ডেইজি আহমেদ। এই দম্পতির তিন সন্তানেরা হলেন – মেয়ে ঐন্দ্রিলা ও তিলোত্তমা এবং ছেলে শুভ।

জনপ্রিয় এই তারকা ২০১০ সালের ১৪ জুলাই হার্ট অ্যাটাকের পর তাকে ঢাকার একটি হাসপাতালে নেয়ার পর ইন্তেকাল করেন। ৭১ বছর বয়সী বুলবুল আহমেদ দীর্ঘদিন ধরে হৃদরোগ এবং উচ্চ রক্তচাপে ভুগছিলেন।

ফেরদৌস আহমেদ

জনপ্রিয় চলচ্চিত্র অভিনেতা সালমান শাহ’র মৃত্যুর পর ‘বুকের ভেতর আগুন’ ছবিতে তার স্থলাভিষিক্ত হয়ে চলচ্চিত্রে যাত্রা শুরু করেন ফেরদৌস আহমেদ (Ferdous Ahmed)। তিনি চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারসহ আরও অনেকগুলো পুরস্কার জিতেছেন, দেশে বিদেশে সম্মান কুড়িয়েছেন।

সালমান শাহের অকাল প্রয়ানে চলমান বেশ কিছু চলচ্চিত্রের কাজ বন্ধ হয়ে যায়। এর মধ্যে একটি ছিল ছটকু আহমেদ পরিচালিত ‘বুকের ভেতর আগুন’ চলচ্চিত্রটি। গল্পে কিছুটা পরিবর্তন করে অসমাপ্ত কাজ শেষ করার উদ্যোগ নেন ছটকু আহমেদ আর এভাবেই ফেরদৌস চলচ্চিত্রাঙ্গনে পরিচিত হয়ে ওঠেন। একক নায়ক হিসেবে ফেরদৌসের যাত্রা শুরু হয় অঞ্জন চৌধুরী পরিচালিত ‘পৃথিবী আমারে চায় না’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে। নৃত্য পরিচালক আমির হোসেন বাবুর হাত ধরে চলচ্চিত্র জগতে এসেছিলেন তিনি। আমির হোসেন বাবু পরিকল্পনা করেছিলেন নৃতবিষয়ক একটি চলচ্চিত্র পরিচালনা করবেন। ছবির নাম হবে ‘নাচ ময়ূরী নাচ’। ছবিতে নায়ক চরিত্রে অভিনয়ের জন্য তিনি ফেরদৌসকে নির্বাচন করেছিলেন, কিন্তু চলচ্চিত্রটি নির্মান করা হয়ে উঠে নি।

বাসু চ্যাটার্জীর ‘হঠাৎ বৃষ্টি’ ছবি দিয়ে ফেরদৌস জনপ্রিয়তা ও পরিচিতি অর্জন করেন। এরপর তিনি মৌসুমী, শাবনূর, পপি, পূর্ণিমা-সহ সকল শীর্ষস্থানীয় চিত্রনায়িকার সাথে কাজ করেন। চলচ্চিত্রে অভিনয়ে দেশের গন্ডি পেরিয়ে কলকাতার চলচ্চিত্রে অভিনয় করে জনপ্রিয়তা অর্জন করেন তিনি। বলিউডের একটি চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেছেন ফেরদৌস, ছবির নাম ‘মিট্টি’।

চলচ্চিত্রে অভিনয়ের আগে ফেরদৌস একজন র‌্যাম্প মডেল হিসেবে কাজ শুরু করেছিলেন। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ফ্যাশন ডিজাইনার বিবি রাসেলের হাত ধরে র‌্যাম্প জগতে যাত্রা শুরু করেন ফেরদৌস। নব্বইয়ের দশকের শুরুতে বেশ কিছু বড় ফ্যাশন শো’র র‌্যাম্পিং এ অংশ নিয়েছিলেন ফেরদৌস। বর্তমানে চলচ্চিত্রের পাশাপাশি বিজ্ঞাপনের মডেল হিসেবেও কাজ করছেন তিনি।

অভিনয়ের মাধ্যমে চলচ্চিত্রে যাত্রা শুরু করলেও ফেরদৌস বর্তমানে ছবি প্রযোজনাও করছেন। তার প্রতিষ্ঠান ‘সিনেমা স্কোপ’ এর প্রযোজনায় দুটি চলচ্চিত্র নির্মিত। এদের একটি বাসু চ্যাটার্জীর পরিচালনায় ‘হঠাৎ সেদিন’ (২০১৩) এবং অন্যটি ইমতিয়াজ নেয়ামুলের পরিচালনায় ‘এক কাপ চা’ (২০১৪)। উল্লেখ্য, বাসু চ্যাটার্জী পরিচালিত ‘হঠাৎ বৃষ্টি’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করেই ফেরদৌস কলকাতা জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। দুই বাংলায় জনপ্রিয়তা অর্জন করা প্রসঙ্গে বাংলামেইলের এক প্রশ্নের জবাবে ফেরদৌস নিজেকে সৌভাগ্যবান দাবী করেন এবং জানান, জন্মভূমির প্রতিই তার বেশী টান, তবে তিনি দুই বাংলায়ই জনপ্রিয়তা ধরে রাখতে চান।

২০১২ সালের জানুয়ারী মাসে বাংলানিউজ২৪ এর সাথে এক সাক্ষাতকারে ফেরদৌস জানান কুয়াকাটা এবং সেন্টমার্টিনে তিনি দুটি রিসোর্ট গড়ে তোলার কাজ শুরু করেছেন। সেন্টমার্টিনের রিসোর্টটি প্রখ্যাত উপন্যাসিক হুমায়ূন আহমেদের সাথে মিলে তার মালিকানাধীন জমিতে তৈরী। একই সাক্ষাতকারে ফেরদৌস জানান হলিউড অভিনেত্রী অ্যাঞ্জেলিনা জোলি তার প্রিয় অভিনেত্রী এবং তার সাথে একবার অভিনয় করার সুযোগ পেলে তিনি ধন্য হতেন।

ফেরদৌসের ব্যক্তিগত লাইফস্টাইল সম্পর্কে জানা যায় অজানা সব তথ্য। যেমন পোশাক আশাকের ক্ষেত্রে ট্রু রিলিজিওন, ডি অ্যান্ড জি, আরমানি, এক্সপ্রেশনস ও স্পাইকার ব্র্যান্ডের জিনস তার পছন্দ। আর আরমানি, গুচির সাধারণ নকশার রংচটা ধরনের টি-শার্ট সব সময় পরেন। ভাসাভি, নাবিলা, মান্যবর বা মানিশ মালহোত্রার বিশেষ নকশার পাঞ্জাবি যেমন পরেন, আবার পরিবেশ বুঝে সুতি বা খদ্দরের পাঞ্জাবিও পরে থাকেন। ফরমাল অনুষ্ঠানে প্রিন্স কোট বেছে নিচ্ছেন কিছুদিন ধরে। বাংলাদেশে সানমুনের দূত তিনি। সানমুনের বাইরে আরমানি ও গুচির স্যুট-কোট পরেন। ফেরদৌসের রামিম রাজ নামের একজন নিজস্ব ডিজাইনার আছেন। ব্র্যান্ডের বাইরে বেশির ভাগ পোশাকের নকশা তিনি করে থাকেন। নাইকি, রিবোক ও অ্যাডিডাসের রং-বেরঙের স্নিকারস পরতে ভালোবাসেন। নটিকা, ইসে মিয়াকে, গুচি ও ব্ল্যাক ব্র্যান্ডের সুগন্ধি ঘুরে-ফিরে ব্যবহার করেন।

পারিবারিক জীবনে বিবাহিত ফেরদৌসের স্ত্রী তানিয়া ফেরদৌস একজন বৈমানিক। পুত্র নুজহাত ফেরদৌস এবং কন্যা নুজরান ফেরদৌসকে নিয়ে তাদের সুখের সংসার।

সালমান শাহ

বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে নব্বইয়ের দশকের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ও সুদর্শন নায়কের নাম সালমান শাহ (Salman Shah)। মাত্র চার বছরের চলচ্চিত্র জীবন তার। সোহানুর রহমান সোহানের হাত ধরে কেয়ামত থেকে কেয়ামত চলচ্চিত্রের মাধ্যমে চলচ্চিত্রজগতে পদার্পন করেন সালমান শাহ। প্রথম ছবিতেই জনপ্রিয়তা অর্জন করতে সক্ষম হন। তারপর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয় নি তাকে। একের পর এক ব্যবসাসফল চলচ্চিত্র উপহার দিয়ে গেছেন। Continue reading