তৌকীর আহমেদ (Touquir Ahmed) মূলত একজন অভিনেতা, কাজ করেছেন মঞ্চে, টেলিভিশনে এবং চলচ্চিত্রে। তবে অভিনয় থেকে তিনি নাট্য নির্দেশনা এবং চলচ্চিত্র পরিচালনায় আসেন। বর্তমানে তিনি পরিচালনার কাজ নিয়েই বেশী ব্যস্ত।
তৌকীর আহমেদ ঝিনাইদহ ক্যাডেট কলেজের ছাত্র ছিলেন। সে সময়ই আন্তঃহল নাটক প্রতিযোগিতা, বাৎসরিক নাটকের মাধ্যমে মঞ্চ নাটকের সাথে যুক্ত হন। তবে ক্যাডেট কলেজের পাঠ চুকিয়ে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) এর স্থাপত্যবিদ্যায় ভর্তি হওয়ার পর বেইলি রোড, গাইড হাউস প্রভৃতির মঞ্চ নাটক দেখে তিনি অভিনয়ের প্রতি আকর্ষণ অনুভব করেন। একদিন থিয়েটারে সদস্য আহবান বিজ্ঞপ্তি দেখে আবেদন করেন তৌকীর এবং সাক্ষাতকার শেষে থিয়েটারের সদস্য হয়ে যান। সেই শুরু। পরবর্তীতে অভিনয়ের জন্য তিনি কোরিয়া, ইংল্যান্ড প্রভৃতি দেশে স্কলারশিপ নিয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। মঞ্চে কাজ করার পাশাপাশি মঞ্চ পরিকল্পনা, নির্দেশনা প্রভৃতির সাথে যুক্ত হন তৌকীর আহমেদ। একই সময়ে টেলিভিশনের সাথেও জড়িত হন। মাত্র বাইশ বছর বয়সে ‘ফিরিয়ে দাও অরণ্য’ নামের চার পর্বের ধারাবাহিক টিভি নাটকে একজন মাদকাসক্ত যুবকের ভূমিকায় অভিনয়ের মাধ্যমে ছোট পর্দায় আত্মপ্রকাশ করেন তৌকীর।
মঞ্চ এবং টিভিতে অভিনয়ের সময়ই তৌকীর চলচ্চিত্রের সাথে যুক্ত হন। তিনি নদীর নাম মধুমতি, চিত্রা নদীর পারে ইত্যাদি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র জয়যাত্রা’র মাধ্যমে চলচ্চিত্র পরিচালক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন ২০০৪ সালে। মুক্তিযুদ্ধের সময়ে কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পে থাকার অভিজ্ঞতা থেকেই জয়যাত্রা চলচ্চিত্র নির্মানের প্রেরণা পান বলে তিনি মনে মনে করেন।
টিভি নাটকে অভিনেত্রী বিপাশা হায়াতের সাথে অসংখ্য জনপ্রিয় এবং দর্শকপ্রিয় নাটক উপহার দেয়ার পর ১৯৯৯ সালে এই জুটি বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। বর্তমানে সংসারের পাশাপাশি দুজনে একত্রে নাটক এবং চলচ্চিত্র নির্মানের সাথে জড়িত আছেন। বিপাশা হায়াতের চিত্রনাট্যে তৌকীর আহমেদ বেশ অনেকগুলো নাটক টেলিফিল্ম পরিচালনা করেছেন।
তৌকীর আহমেদ স্থাপত্য পেশায় নিয়োজিত ছিলেন প্রায় ১৪ বছর। তবে বর্তমানে টিভিনাটক এবং চলচ্চিত্র নির্মানে পুরোপুরি মনযোগ দিয়েছেন। সাম্প্রতিক এক সাক্ষাতকারে তিনি ভাষা আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে একটি চলচ্চিত্র নির্মানের আকাঙ্খা ব্যক্ত করেন। অভিনয়, চলচ্চিত্র নির্মান এবং স্থাপত্য পেশার পাশাপাশি লেখক হিসেবেও আত্মপ্রকাশ করেছেন তৌকীর। তার দুটো বই প্রকাশিত হয়েছে। এগুলো হল প্রতিসরন এবং ইচ্ছা মৃত্যু।