বাংলাদেশের জনপ্রিয় সুরকার এবং সঙ্গীতশিল্পী হাবিব ওয়াহিদ সকলের কাছে হাবিব নামেই পরিচিত। বিখ্যাত পপ শিল্পী ফেরদৌস ওয়াহিদের সুযোগ্য পুত্র হাবিব ওয়াহিদ অনেক হিট অ্যালবাম এবং গানের সুরকার। বাংলাদেশের লোকগীতি, বিশেষতঃ হাসন রাজা, শাহ আবদুল করিম প্রভৃতির গানকে আধুনিক সুর ও সঙ্গীতে নতুন গায়কীর মাধ্যমে সারাদেশে পরিচিত করে তুলেন হাবিব ওয়াহিদ। চলচ্চিত্রের সঙ্গীত পরিচালনায়ও তিনি সফলতা অর্জন করেন।
তার প্রথম লোকসংগীতের রিমিক্স অ্যালবাম ‘কৃষ্ণ’। লন্ডনে স্কুল অব অডিও ইঞ্জিনিয়ারিং এর ছাত্র থাকাকালীন এটি প্রকাশ হয়। এ অ্যালবামের কনসেপ্ট ও সুর অনেক পূর্বেই তৈরি করেছিলেন এবং শুধু একজন গায়কের জন্য অপেক্ষা করছিলেন বলে জানা যায়। লন্ডনে একজন সিলেটী রেস্তোঁরার মালিক কায়া ছিলেন একজন অপরিনত গায়ক, যার মত কন্ঠই হাবিবের দরকার ছিল। তাদের মিলিত গানগুলো লন্ডনে প্রচণ্ড জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিল। যখন এই অ্যালবাম কৃষ্ণ শিরোনামে প্রথমবারের মত বাংলাদেশে মুক্তি পায় তখন সেটি অসম্ভব জনপ্রিয়তা অর্জন করে। এতে ছিল পুরোনো স্বাদের লোকসঙ্গীত এবং পাশ্চাত্যের ইলেকট্রনিকা এর মিশ্রণ যা বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো প্রচলিত হয়। এরপর থেকে হাবিব ‘মায়া (২০০৪) ও ‘ময়না গো’ (২০০৫) নামে আরো দু’টি অ্যালবাম প্রকাশ করেন। দু’টোই শ্রোতাপ্রিয়তার শীর্ষে উঠে আসে তখন। হাবিবের উল্লেখযোগ্য অ্যালবামগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘শোন’ (২০০৬) ‘পাঞ্জাবীওয়ালা’ (২০০৭), ‘আকাশ ছোঁয়া ভালোবাসা’ (২০০৮), ‘এই তো প্রেম’ (২০০৮), ‘চন্দ্রগ্রহণ’, ‘হৃদয়ের কথা’ (২০০৮), ‘অবশেষে’ (২০০৮), ‘প্রজাপতি’ (২০১০), ‘আহ্বান’ (২০১১), ‘বলছি তোমাকে’ (২০১২), ‘রঙ’ (২০১২), স্বাধীন (২০১২), ‘তুমি সুন্দর মেঘমালা’ (২০১২)। এছাড়া বিভিন্ন সময় ইউটিউবে একক গান দিয়ে ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছেন এ শিল্পী।
ব্যক্তিগত জীবনে হাবিব প্রথম বিয়ে করেন লুবায়না নামের এক নারীকে। অবশ্য ২০০৩ সালে কৃষ্ণ অ্যালবাম প্রকাশের পর এই দম্পত্তির মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটে। ২০১১ সালের ১২ অক্টোবর তারিখে চট্টগ্রামের বাঁশখালীর মেয়ে রেহানকে বিয়ে করেন হাবিব ওয়াহিদ। ২০১২ সালের ২৪ ডিসেম্বর তারিখে তাদের প্রথম সন্তান আলীম ওয়াহিদ জন্মগ্রহণ করেন। ২০১৭ সালের ১৯ জানুয়ারী তারিখে এই দম্পত্তির মধ্যে পারস্পরিক সমঝোতায় বিচ্ছেদ ঘটে।