কাহিনী সংক্ষেপ
ইসরাফিল শাহিনের গ্যাং বাংলাদেশের ভেতরে সন্ত্রাসী আক্রমন করতে চায়। অন্যদিকে আরিফ হায়দারের গ্যাং চায় তা প্রতিহত করতে। ফলে শুরু হয়ে গ্যাং ওয়ার।
ইসরাফিল শাহিনের গ্যাং বাংলাদেশের ভেতরে সন্ত্রাসী আক্রমন করতে চায়। অন্যদিকে আরিফ হায়দারের গ্যাং চায় তা প্রতিহত করতে। ফলে শুরু হয়ে গ্যাং ওয়ার।
মৌটুসী বিশ্বাস | ||
ইরফান সাজ্জাদ | ||
শিপন মিত্র | ||
মিশা সওদাগর | ||
শহীদুজ্জামান সেলিম | ||
সোনিয়া হোসেন | বর্ষা | |
আইরিন | আনুশকা |
কাহিনী | আলভী আহমেদ |
চিত্রনাট্য | আলভী আহমেদ |
সংলাপ | আলভী আহমেদ |
সঙ্গীত পরিচালক | ফুয়াদ আল মুক্তাদির |
সুরকার | - |
গীতিকার | শাহান কবন্ধ |
মুক্তির তারিখ | ২৯ মে, ২০১৫ |
ফরম্যাট | ডিজিটাল |
রং | রঙিন |
দেশ | বাংলাদেশ |
ভাষা | বাংলা |
ফালতু কাহিনী।
টাকা এবং সময় ২ টাই নষ্ট হয়েছে আমার।
সিনেমা পর্যালোচনা : ইউ – টার্ন
শিপনের নয় , ভারসেটাইল মিডিয়ার ইউ – টার্ন , হলেও হতে পারতো বাংলা সিনেমার ইউ – টার্ন
আমি প্রতিবারের মত এবারেও বলাকা সিনেমা হলে মর্নিং শোতে সিনেমা দেখে ফেললাম । সিনেমার নায়ক শিপন সহ সিনেমাটির সাথে জড়িত বেশ কয়েকজন হলে উপস্থিত ছিলেন ।
সিনেমার শুরুতেই লেখা উঠল ” Highly Inspired from Mario Puzo ”
আমার মনে হল , যাক বাংলা সিনেমা তাহলে অবশেষে দক্ষিনী সিনেমা বাদ দিয়ে উপরের লেভেলের কিছু জিনিস থেকে ইন্সপিরেশন নিতে শিখেছে । সিনেমা শেষ হবার পরেও আমি একই কথা বলব ।
ইউ টার্ন এমন একটি সিনেমা , যেটি দেখার পর অনেকদিন পর বলতে পারলাম একটি বাংলা একশন ধর্মী সিনেমা তেলুগু তামিল সিনেমার ধুম ধারাক্কা মারপিত ও ফালতু মশালা থেকে বের হয়ে আসতে চেষ্টা করেছে ।
সিনেমার কাহিনী গড়ে উঠেছে দুইটি আন্ডার ওয়ার্ল্ড গ্যাং কে কেন্দ্র করে । প্রথম অর্ধেক বেশ ধীর গতিতে এগিয়েছে , কিন্তু ২য় অর্ধেক বেশ ভালো ছিল । এই সিনেমা কারও কাছে নাটক বলে মনে হতে পারে , কারণ অমুক তমুক খানের সিনেমার মত মশালা এখানে পাবেন না । কিন্তু আমার কাছে ইউ টার্ন হল একটি উৎকৃষ্ট আন্ডার ওয়ার্ল্ড ক্রাইম সিনেমার উদাহরণ ।
আমি স্পয়লার করতে চাই না , তাই কাহিনী বলব না , সিনেমার বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করবো ।
সবার আগে বলতে হয় চিত্র নাট্য ও সংলাপ নিয়ে । হোক , মারিও পুজোর প্রচুর প্রভাব আছে সিনেমার প্লটে , তারপরেও ইউ টার্নের কাহিনী বেশ জমাটি ছিল , সংলাপ কিছু কিছু জায়গায় জাস্ট অনবদ্য । ” কালো টাকা সাদা করার বেস্ট উপায় হল মিডিয়াতে ইনভেস্ট করা ” “আপনার ভাইকে ডেকে আনা আপনার মাথা ব্যাথা । এই জিনিস (বন্দুক) যার হাতে থাকে তার কোন দায়িত্ব থাকে না ”
” মিডিয়াকে তোমাদের বিয়ের সংবাদ দিলাম যেন তারা দিশেহারা হয়ে যায় বোমাবাজির নিউজ বেশি কাভার করবে না তোমাদের বিয়ের নিউজ ” এরকম অনেকগুলি চমকপ্রদ সংলাপ ছিল এই সিনেমায়।
এমন একটি ক্রাইম থ্রিলার সিনেমায় বেশ কিছু চমকপ্রদ টুইস্ট থাকা দরকার । এই সিনেমা সেই ক্ষেত্রে সফল । অন্তত ২ টি টুইস্ট আমি নিজেই প্রেডিক্ট করতে পারি নাই !! ‘
সিনেমার গান সবগুলো শ্রুতি মধুর । গানের পাশাপাশি কোরিওগ্রাফিও চমৎকার । মিশা সওদাগরের আস্তানায় করা গানটির কোরিওগ্রাফিও বেশ ভালো ছিল । আইটেম সং এমনটাই হওয়া উচিৎ ।
সিনেমার পরিচালক প্রচুর খেটেছেন । তাকে আমি লাল সালাম দেই । ডিরেকশনের পাশাপাশি ক্যামেরার কাজ বেশ ভালো হয়েছে । ক্যামেরার কাজ নিয়ে প্রচুর এক্সপেরিমেন্ট করা হয়েছে । সব ক্ষেত্রে ভালো হয়নি , তবে অন্য পাঁচটা বাংলা সিনেমার তুলনায় বেশ ভালো ছিল ।
এই সিনেমার সবচেয়ে বড় প্লাস পয়েন্ট শহিদুজ্জামান সেলিম । অসাধারন অভিনয় করেছেন । আর মিশা সওদাগর যে বস সেটা তিনি আবার প্রমাণ করেছেন । আরশাদ আদনানও খারাপ করেননি তার চরিত্রে । সোনিয়া খুব চমৎকার অভিনয় করেছেন । ভালো লাগে নি আইরিন , রুমা ও সাজ্জাদের অভিনয় ।
এবার আসি শিপনের ব্যাপারে । শিপন আমাকে চরমভাবে হতাশ করছে । জড় বস্তুর অভিনয় শিপনের চেয়ে ভালো হবে । ইউ টার্নের নেগেটিভ পয়েন্ট শিপন । প্রথম অর্ধেক সময় বুঝতেই পারি নি নায়ক কি আসলে শিপন , নাকি শহিদুজ্জামান সেলিম । শিপনের অভিনয় দেখে মনে হল ওকে জোর করে বাধ্য করা হয়েছে এই সিনেমায় অভিনয় করতে !!! আমি শিপনের শুভাকাঙ্ক্ষী হিসেবে বলব , ভাই আপনি আগে যত্ন করে অভিনয় শিখেন , তারপর সিনেমায় আসেন । শিপনের জায়গায় আরেফিন শুভ বা অনন্ত জলিল অভিনয় করলে ইউ টার্ন ব্লক ব্লাস্টার হইতে পারতো ।
ইউ টার্নের এন্ডিং আমার ভালো লাগে নাই ।
তবে ইউ টার্ন – ২ আসবে বলে সিনেমার শেষে বলা হইসে । আমি সেটা দেখার অপেক্ষায় থাকব ।
সবশেষে বলব ইউ টার্ন সবার দেখা দরকার । কারণ শিপনের ক্যারিয়ারের না হলেও ভারসেটাইল মিডিয়ার ইউ টার্ন অচিরেই ঘটবে এবং আমার বিশ্বাস তারা বাংলা সিনেমায় ভালো অবদান রাখতে পারবে ।
আমি ইউ টার্নকে দিবো ১০ এ ৭ ।