২০০২ : মরমী কবি হাছন রাজার জীবনীনির্ভর ছবি চাষী নজরুল ইসলামের ‘হাছন রাজা’ সর্বোচ্চ ৭টি শাখায় পুরস্কার অর্জন করে। প্রখ্যাত পরিচালক কাজী হায়াতের জাতীয় পুরস্কার লাভ করেন ইতিহাস ছবির জন্য,পাশাপাশি তার ছেলে কাজী হায়াত একই ছবির জন্য প্রথমবারের মতো জাতীয় পুরস্কার লাভ করেন। Continue reading
ক্যাটাগরী আর্কাইভঃ ব্লগ
বাংলা মুভি ডাটাবেজ ব্লগ
যোদ্ধা : মাল্টিস্টারার ফুল প্যাকেজ কমার্শিয়াল
একটা সিনেমা নিয়ে কথা বলতে গিয়ে প্রথমেই তার অফিসিয়াল পোস্টার নিয়ে কথা বলতে হয়। অফিসিয়াল পোস্টার লঞ্চ করতে অাজকের ডিজিটাল ঢালিউডে অনেক পলিসি অাছে। শুধু পোস্টারই বা কেন! এখন টিজার, ট্রেলার অারো অনেক পলিসি অাছে। ৩৫ মিলিমিটারের সিনেমার সময় নিকট অতীতে ‘যোদ্ধা’ সিনেমার অফিসিয়াল পোস্টারে একটা বিশেষ বুদ্ধিদীপ্ত টেকনিক অ্যাপ্লাই করেছিলেন সময়ের থেকে এগিয়ে থাকা পরিচালক শহীদুল ইসলাম খোকন। লাল অাবরণের পোস্টারের গায়ে লেখা ‘এটি একটি সিনেমার পোস্টার”। ‘যোদ্ধা’ নামটি লাল অক্ষরের এবং তার প্রতীকী অর্থ অাসে যুদ্ধ থেকে যোদ্ধা হতে হয় তাই রক্তের লাল রং একটা সূক্ষ্ম চিন্তা এখানে। সমাজ ও রাজনীতির সে যোদ্ধা লড়াকু নায়ক রুবেল। Continue reading
সিনেমার ভুল: এক পৃথিবী প্রেম
এক পৃথিবী প্রেম একটি মধ্যম মানের মিউজিকাল রোমান্টিক ড্রামা মুভি। এস এ হক অলিক পরিচালিত এই সিনেমায় অভিনয় করেছেন আইরিন, আসিফ নূর, সৈয়দ হাসান ইমাম, এটিএম শামসুজ্জামান, আবুল হায়াত প্রমুখ।এই ছবির মাত্র ৪টি ভুল আমাদের চোখে পড়েছে।
১. আফজাল শরীফ যখন স্বদেশ চ্যানেলের হেডের রুমে ঢুকতে গিয়ে ভুলে কাঁচের দরজায় মুখে আঘাত পায়, তখন (স্পেশাল এফেক্টের মাধ্যমে) দেখানো হলো কাঁচ ভেঙে গুড়োগুড়ো হওয়ার মত অবস্থা। অথচ পরের শটেই দেখা গেল কাঁচ ভাঙা তো দূরে থাক একটা আঁচড় পর্যন্ত নেই ✋ Continue reading
‘অভিমান’ মুক্তিতে দেশপ্রেমের প্রতিযোগিতা নেই
ভারতীয় সিনেমা ‘অভিমান’ মুক্তি পাচ্ছে ৩০ ডিসেম্বর। এর আগে ‘কেলোর কীর্তি’র মুক্তির সময় দেশপ্রেম দেখানোর প্রতিযোগিতায় নামতে দেখেছিলাম সবাইকে।কিন্তু এখন সবাই নিশ্চুপ। কারণগুলো হলো— Continue reading
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার (১৯৯৯-২০০১)
১৯৯৯ : ব্রিটিশ ভারত ভাগ নিয়ে বাংলাদেশের একমাত্র চলচ্চিত্র তানভীর মোকাম্মেলের ‘ চিত্রা নদীর পাড়ে’ ও হুমায়ূন আহমেদের ‘ শ্রাবণ মেঘের দিন’ যৌথভাবে সর্বোচ্চ ৭ টি শাখায় জাতীয় পুরস্কার অর্জন করে। ‘শ্রাবণ মেঘের দিন’ ৭ টি শাখায় পুরস্কৃত হলেও হুমায়ূন আহমেদ পুরস্কৃত হননি। আফসানা মিমি,শাওনের সঙ্গে প্রতিদন্দ্বিতা করে প্রথম সিনেমায় সিমলা জাতীয় পুরস্কার জিতেন।অন্যদিকে মান্নার সাথে প্রতিদন্দ্বিতা করে জনপ্রিয় টিভি অভিনেতা জাহিদ হাসান প্রথম ও একমাত্র জাতীয় পুরস্কার অর্জন করেন।এই বছর সেরা গায়িকা, শিশুশিল্পীসহ কয়েকটি শাখায় পুরস্কার দেওয়া হয়নি। এই বছর ১৮টি শাখায় পুরস্কার প্রদান করা হয়- Continue reading
চাঁদনীর অভাবনীয় সাফল্য বাংলাদেশের চলচ্চিত্রকে পাল্টে দেয়
৯০ দশকের শুরুর দিকে বলিউডের হিন্দি চলচ্চিত্রে অমিতাভ, ধর্মেন্দ্র, জিতেন্দ্র, ঋষিকাপুর, মিঠুন চক্রবর্তীদের মতো পুরাতন মুখগুলোর পাশাপাশি বলিউড ও এই দেশের দর্শকরা পেয়েছিল আমির খান, সালমান খান, রাহুল রায়, অজয় দেবগন, জুহি চাওলা, মাধুরী দিক্ষিত, দিব্য ভারতী’র মতো একবারে নতুন টগবগে তরুণ মুখগুলো। কিন্তু বাংলাদেশের সিনেমার দর্শকরা তখনও রাজ্জাক, আলমগীর, সোহেল রানা, জসিম,ইলিয়াস কাঞ্চন, জাফর ইকবালদের মতো একই মুখগুলো ঘুরে ফিরে বারবার দেখতে দেখতে ক্লান্ত হচ্ছিল। Continue reading
পূর্ণিমার অালোয়
বন্ধুমহলে পূর্ণিমাকে নিয়ে বাজি ধরেছিলাম। বাজিটা টিকে যাবে তা ভেবে বাজিটা ধরিনি কিন্তু।তারপরেও টিকে গেছে।বন্ধুদের সাথে গ্রামের খাড়ি নদীর পুলে বসে এক সন্ধ্যা তুমুল তর্ক হয়ে গেল সেবার। ১৯৯৮ সালের এক সন্ধ্যায় ‘এ জীবন তোমার আমার’ সিনেমাটি দেখে বন্ধুদের বললাম ‘মেয়েটা কী সুন্দরী দেখেছিস! এ মেয়ে অনেকদূর যাবে। ‘এই ‘অনেকদূর’ শব্দটাকে বন্ধুরা মানতে চাইল না।এক বন্ধু বলল ‘তুই বললেই হবে নাকিরে?’ বললাম ‘আমার মনটা বলে মেয়েটা অনেকদূর যাবে।’ Continue reading
জাতীয় পুরস্কারে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র
মুক্তিযুদ্ধকে কেন্দ্র করে স্বাধীনতার পর থেকেই চলচ্চিত্র নির্মান শুরু হয়েছে। চাষী নজরুল ইসলাম নির্মান করেছিলেন মুক্তিযুদ্ধের প্রথম চলচ্চিত্র – ওরা ১১ জন। প্রতি বছরই মুক্তিযুদ্ধকেন্দ্রিক চলচ্চিত্র নির্মিত হয়েছে। এর মধ্য থেকে সুনির্মিত চলচ্চিত্রগুলো যোগ্যতার বলে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে ভূষিত হয়েছে। এই পোস্টে আমরা জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারজয়ী মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্রের তালিকা উপস্থাপন করছি। Continue reading
মহানায়ক : প্লেবয় অ্যাডভেঞ্চার
একজন অালোকবর্তি নির্মাতা অালমগীর কবির। তাঁর চেতনার জায়গাটা তাঁর সময়ের থেকে কমপক্ষে পঞ্চাশ বছর এগিয়ে। তিনি ঢালিউডে গ্রাম-শহর জীবনের সাথে সেতুবন্ধ তৈরির একজন অাদর্শ সিনেমাযোদ্ধা। উঁচুতলার ও নিচুতলার মানুষের বিভেদ ঘুচিয়ে দিয়েছেন তাঁর সিনেমার ভাষায়। অামাদের অাকিরা কুরোসাওয়া, অাব্বাস কিয়ারোস্তমি না থাকলেও চেতনার জাগরণ ঘটানোর ক্ষেত্রে যে নির্মাতারা অবদান রেখেছেন তাঁদের মধ্যে অালমগীর কবির প্রথম কাতারের। অাশ্চর্য হলেও সত্য তাঁর মতো লিজেন্ড নির্মাতাকে দৃষ্কৃতিকারীরা অারিচা ঘাটে পেছন থেকে ধাক্কা মেরে পানিতে ফেলে দিয়ে মেরে ফেলে। তাঁর অারিচা ঘাটে পৌঁছানোর খবর দৃষ্কৃতিকারীদের কাছে অাগেই পৌঁছে গিয়েছিল। অামাদের বুদ্ধিবৃত্তিক পাপের একটা অংশ অন্ধকারে নিমজ্জিত থেকেছে এ নির্মাতাকে বাঁচতে না দেয়া। যে অন্ধকারে বাঙালি জাগরণ থমকে গেছে জহির রায়হানের মতো মাস্টার অার্টিস্টকে হারিয়ে।নিঃসঙ্গতার পথে এগিয়ে গেছি অামরা।
বুলবুল অাহমেদ ঢালিউডের জেন্টেলম্যান অ্যাক্টর। তাঁর অভিনয়, ব্যক্তিত্ব, স্টারডম এসবে একটা ক্লাসিক বৈশিষ্ট্য ছিল। তিনি সিনেমা অল্প করেছেন। যা করেছেন বেছে বেছে করেছেন। তাঁর চরিত্রের গুরুত্ব দেখে কাজ করেছেন। তাঁর সাথে অালমগীর কবিরের সংযোগ ঘটেছিল ব্যাটেবলে তাই এই দুই নির্মাতা ও শিল্পী মিলে অাদর্শ শিল্প নির্মিত হয়েছে। ‘সূর্যকন্যা, সীমানা পেরিয়ে’ এ ধরনের ওয়ার্ল্ড ক্লাস সিনেমার ধারাবাহিকতায় নির্মিত হয় ‘মহানায়ক’ নামের অার একটি মাস্টারপিস ক্লাসিক সিনেমা। এ সিনেমা একবার দেখলে অার একবার দেখতে ইচ্ছে করে। একজন প্লেবয়কে শুধুই প্লেবয় হিশেবে অালমগীর কবির দেখাননি। এর পাশাপাশি অন্যায়ের সাথে মানুষের বিবেককে জাগানোর কাজও করেছেন।
গলি থেকে রাজপথ, রাজপথ থেকে ফাইভ স্টার হোটেল সব জায়গায় পৌঁছে যায় বুলবুল অাহমেদ। কাজ তাঁর প্রতারণা। প্রতারণার প্রধান অস্ত্র প্রেম তার সাথে মানুষের সাথে মিশে পারিবারিক ও অাত্মিক সম্পর্ক তৈরি করা। শুরুটা হয়েছিল দিলদারকে দিয়ে। পকেট মারতে সেন্ট্রাল শপের বাইরে বুলবুল অাহমেদকে দাঁড় করায় দিলদার। বুঝিয়ে দেয় তাঁকে-‘কেউ যদি অামাকে ধরার জন্য দৌড় দেয় অাপনি অামাকে চেনেন না।’ তারপর গাড়িতে উঠতে গিয়ে একজন লোকের মানিব্যাগ পড়ে যায়। সেটা ফেরত দিতে পেছন থেকে যাক দেন বুলবুল অাহমেদ। দিলদার সে যাত্রায় পাবলিকের কাছ থেকে তাঁকে সেভ করে পাগলের পরিচয় দিয়ে। বুলবুল অাহমেদ মানিব্যাগটা ফেরত দিতে চাইলে দিলদার কৌতুক করে-‘অাল্লাহ অাপনার জন্য রহমত পাঠাইছে অার অাপনি ফেরত দিবেন?অাল্লাহ নারাজ হবেন না!’ ইমোশনাল পার্টকে এখানেই শুধু না পুরো সিনেমায় ব্যবহার করেছেন পরিচালক। বুলবুল অাহমেদ ভাগ্যক্রমে নতুন পার্টি পান। অাহমেদ শরীফ তার উপরে ওঠার সিঁড়ি করে দেন। প্রতারণা পর্বের অভিজাত পর্ব শুরু হয়। অভিজাত বলছি কারণ প্রতারণা করতে গিয়ে বুলবুল অাহমেদের গেটঅাপ পরিবর্তন হতে থাকে রাজসিকভাবে।গোঁফছাড়া, গোঁফযুক্ত, স্যুট-টাই পরা পারফেক্ট জেন্টেলম্যান তখন। পর্যটক হয়ে নেপাল, বার্মা (বর্তমান মিয়ানমার) শ্রীলংকা ঘোরার সাথে প্রেমের ফাঁদে ফেলার কাজটাও তার সাথে করে ফেলে। সুবর্ণা পোখরেলকে বশ করে। বলা হয় প্রথম প্রেম ভোলা যায় না। সুবর্ণা পোখরেল বুলবুলকে মন থেকে ভালোবেসেছিল তাই প্রথম প্রেমের কাছেই তাকে ফিরে অাসতে হয়েছিল সবকিছুর পরে। হৈমন্তী শুক্লার কণ্ঠে ‘তুমি চাও প্রিয় নদী হয়ে’ গানটি এ জুটির অন্যতম সুন্দর রোমান্টিক গান। সেখানে অাহমেদ শরীফের বনিবনা হয় না।সমস্যা বাঁধে এবং কেরামত মওলা ঘটনাক্রমে মারা যায়।নেপালে অাসার পর যে মেয়েটির সাথে ঘোরাফেরা করে বুলবুল অাহমেদ সে মেয়েটিও তাঁকে ভালোবেসে ফেলে। কিন্তু বু্লবুল অাহমেদ জানেন প্রতারণাই তার শেষ সম্বল। ‘অামার এ দুটি চোখ পাথর তো নয়’ এ গানটি তাঁর অন্তর্দহনের কথা বলে। নেপাল ছাড়ার সময় মেয়েটি বলে-‘তুমি অাসবে না অামাকে দেখতে?’বুলবুলের উত্তর-‘তোমার সাথে অার কোনোদিন দেখা হবে কিনা জানি না। তোমার চোখে দেখা এই হিমালয়কন্যা নেপালকে অামি কোনোদিন ভুলব না।’ এটা একইসাথে বুলবুল অাহমেদের বিবেকবোধ অাবার ইমোশনাল ব্ল্যাকমেইল দুটোকেই দেখায়। পরের মক্কেল কাজরী। কাজরীর পরিবার বিশেষ করে তার বাবা শওকত অাকবর বুলবুলকে গ্রহণ করে দারুণভাবে।যেহেতু অভিজাত পরিবার তাই বাড়ি, গাড়ি এসবের কথা বলে ম্যানেজ করে। কাজরী বুলবুলকে ভালোবেসে ফেলে তাঁর স্মার্টনেসের কারণে।কাউকে ভালোবাসে কিনা জানতে চাইলে ‘হাজার মনের কাছে প্রশ্ন রেখে’ গান ধরে। এ সিনেমার অন্যতম সেরা গান এটি। কাজরীকে বিয়ের প্রস্তাবটা নিজে থেকেই দেন বুলবুল অাহমেদ। অনাথ, এতিম বলে পরিচিতি দেয়া বুলবুল কাজরীর মা-বাবার কাছে ততদিনে মন থেকে জায়গা করেছে। শওকত অাকবরের কাছে ক্যাশ টাকা কৌশলে নেবার পর প্রতারণা করে। সে যাত্রায়ও সফল হয়। দেশে ফিরে পুলিশি অ্যাকশনে বাচ্চা কিডন্যাপ করেন বুলবুল অাহমেদ। সুবর্ণা পোখরেলকে পুলিশ কাজে লাগিয়ে মধ্যস্থতা করে। জেল থেকে বেরিয়ে সু্বর্ণার সাথেই মিল হয়। প্রথম প্রেমই হয় শেষ অাশ্রয়।
অালমগীর কবির নিজের ক্রিয়েটিভিটির জায়গাগুলোকে তীক্ষ্ণ করে দেখান সিনেমায়। বুলবুল অাহমেদকে স্টাইলিশ প্লেবয় হিশেবে তুলে ধরেন। বুলবুলের চরিত্রটি এতই রাজসিক যে তার প্রেমে অনায়াসে পড়ে গিয়েছিল নায়িকারা, তিনি অাগে পড়েননি। পার্টনার অাহসান অালির সাথে মিলে প্রতারণার পর্বগুলোর শেষপর্বে এসে শওকত অাকবরের সই জালিয়াতি করার সময় বুলবুল অাহমেদ তাকে বলেন-‘এ লাইনে আপনাকে গুরু মানলাম। সই জালিয়াতে অাপনাকে মেডেল দেয়া উচিত। ‘অাহসান অালির জবাব দারুণ- “অামাকে সই জালিয়াত বললেন! মনে বড় দুঃখ পেলাম। আমি কিন্তু নিজেকে একজন ‘signature artist’ মনে করি।” বুলবুল অাহমেদের পাল্টা কাউন্টারটা অারো জোস-“অামিও কিন্তু নিজেকে একজন বড় ‘pocket scientist’ বলে মনে করি।” প্রতারণাকে অার্টের পর্যায়ে নিয়ে একটা অালাদা মাত্রা যোগ করেছেন পরিচালক। বুলবুল অাহমেদ কাজরীকে দেবার জন্য একটা চিঠি পোস্ট করতে বলে অাহসান অালিকে। তখন অাহসান অালি বলে-‘অামাদের মতো অার্টিস্টদের জন্য প্রেম জিনিসটা হচ্ছে বিষ। ‘বুলবুল অাহমেদ বলেন-‘প্রেমের থেকেও দুর্ধর্ষ বিষ হচ্ছে বিবেক সে অাপনি বুঝবেন না।’ এখানে এসেই বুলবুল অাহমেদের ক্যারেক্টারাইজেশন চূড়ান্ত মেসেজটা দেয় সেটা হলো প্লেবয়রাও পরিস্থিতির শিকার হয়ে কাজ করে এবং বিবেক তাদেরও অাছে। সিনেমার কাজ শুধুই বিনোদন নয় মানবিক বোধ জাগানো বা দেখানোও তার কাজ। অালমগীর কবির সেটা দেখিয়েছেন। সিনেমাটিতে প্রেম, প্রতারণা, বিবেববোধ সব মিলিয়েই পূর্ণাঙ্গ চরিত্রের মহানায়ক বুলবুল অাহমেদ।
একজন বু্লবুল অাহমেদের চুজি ক্যারেক্টারের সিনেমা বাছাই অার স্টাইলিশ অভিনয়কে কেন্দ্র করে তাঁকে ঢালিউডে যতটা স্পেস দেয়া উচিত ছিল ততটা দেয়া হয়নি। বুলবুল অাহমেদকে নিয়ে দর্শকের অাক্ষেপের জায়গা এটাই। তারপরেও তাঁর যে সিনেমাগুলো অাছে সেগুলো দেখা ও অালাপ-অালোচনা চালু রাখার কাজটা করলে বুলবুল অাহমেদের বিশেষত্ব পৌঁছে যাবে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে।
অজ্ঞাতনামাঃ লাশের গল্পে রাজনৈতিক সিনেমা
তৌকির আহমেদের “অজ্ঞা্তনামা” দেখতে দেখতে আরো দুটো লাশকেন্দ্রিক সিনেমার কথা মনে পড়লো। মোরশেদুল ইসলামের শর্টফিল্ম “চাকা” এবং শ্রীলঙ্কান নির্মাতা প্রশন্ন ভিতানাগে (Prasanna Vithanage)’র Purahanda Kaluwara (Death on a Full Moon Day)।
চাকাকে বাংলাদেশের স্বাধীনধারার চলচ্চিত্রের ইতিহাসে অন্যতম পথিকৃৎ ধরা হয় (মোরশেদুল ইসলামের “আগামী”, তানভির মোকাম্মেল এর শর্টফিল্ম “হুলিয়া” এবং তারেক মাসুদের “নরসুন্দর” এর সাথে সাথে)। এটিও একটি নাম পরিচয়হীন (অজ্ঞাতনামা) লাশকে নিয়ে আবর্তিত হয়, যে লাশটি অতি আবশ্যকীয়ভাবেই ধর্ম-জাতের পরিচয়হীন। লাশটিকে তার গ্রামে পৌছানোর দায়িত্বে থাকা মুসলমান গারোয়ানের মধ্যে সেই নাম পরিচয়হীন ও ধর্মের পরিচয়হীন লাশের প্রতি যে মায়া তৈরি হয়, যে শ্রদ্ধাবোধ জাগ্রত হয় সেটিই চলচ্চিত্রটিকে আলাদা মাত্রা দেয়। সেলিম আল দীনের অসাধারণ একটি রচনা (কথানাট্য) থেকে বানানো এই স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রটি বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি মাইল ফলক। এর বদৌলতে আন্তর্জাতিক পরিসরে GRAND PRIX পুরস্কার প্রাপ্তিও একটা উল্লেখযোগ্য ঘটনা বলতে হবে। Continue reading