গাজী রাকায়েত

গাজী রাকায়েত একজন নাট্য রচয়িতা, নির্দেশক, অভিনেতা এবং চলচ্চিত্র পরিচালক। মৃত্তিকা মায়া চলচ্চিত্রের মাধ্যমে তিনি চলচ্চিত্র পরিচালক হিসেবে আবির্ভূত হন এবং সর্বাধিক শাখায় জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করে ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে নিজের নাম খোদাই করে নিতে সক্ষম হন।

গাজী রাকায়েত অভিনয় শুরু করেছেন ১২-১৩ বছর বয়সে। বাসার পাশে গেন্ডারিয়া ফায়ার সার্ভিসের কাছে পাড়ার বাচ্চাদের সঙ্গে একটি মঞ্চনাটকে প্রথম বৃদ্ধের চরিত্রে অভিনয় করেন তিনি। ১৯৮৩ সালে এসএসসি পরীক্ষার পর বন্ধুর সঙ্গে বেইলী রোডে নাটক দেখতে যান। ১৯৮৮ সালে বুয়েটে ভর্তির পর আবদুল্লাহ আল মামুনের ‘তোমরাই’ এবং নাগরিক নাট্যাঙ্গনের ‘দেওয়ান গাজীর কিসসা’ নাটকটি দেখার পর সিদ্ধান্ত নেন নাটকে অভিনয় করবেন। এরপর সৈয়দ মইদুল ইসলামের ‘ব্যতিক্রম থিয়েটার’-এ যোগ দেন। সেখানে ‘অমৃত বিষদ’ নামে একটি নাটকে অভিনয় করেন। কিরণ মিত্রের লেখা এই নাটকে সাংবাদিক মুন্নী সাহাও অভিনয় করেছিলেন। ১৯৮৯ সালে নাগরিক নাট্য সম্প্রদায়ে যোগ দেন এবং এ দলের হয়ে ‘কালসন্ধ্যা’, ‘রক্তকরবী’, ‘নাট্যত্রয়ী’, ‘রথের রশি’, ‘গ্যালিলিও’সহ বেশকিছু নাটকে অভিনয় করেন। নাগরিকেই সর্বপ্রথম তিনি ‘মৃত্যু সংবাদ’ নামে একটি নাটক পরিচালনা করেন। এরপর ২০১০ সালে দল ছেড়ে দিয়ে গড়ে তোলেন চারুনীড়ম স্কুল অব অ্যাক্টিং প্রতিষ্ঠানটি। সর্বপ্রথম ১৯৯৩ সালে খ ম হারুনের পরিচালনায় ‘সংগীত পদযাত্রা’ নামে একটি নাটকে অভিনয় করেন। এরপর অনেক নাটকে অভিনয় ও পরিচালনা করেছেন। তার অভিনীত নাটকগুলোর মধ্যে ‘একজন আয়নাল লস্কর’, ‘সাকিন’, ‘জন্মসূত্র’, ‘চিঠি’, ‘বৃষ্টি রাতের গল্প’, ‘অনিরুদ্ধ’, ‘সাম্প্রতিক একটি আত্মহত্যা’ উল্লেখযোগ্য।

প্রথম চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন তানভীর মোকাম্মেলের ‘নদীর নাম মধুমতিতে’। এরপর এনামুল করিম নির্ঝরের ‘আহা’, মোরশেদুল ইসলামের ‘খেলাঘর’, ‘আমার বন্ধু রাশেদ’, ‘প্রিয়তমেষু’, মুরাদ পারভেজের ‘চন্দ্রগ্রহণ’, নাসির উদ্দিন ইউসুফের ‘গেরিলা’ ছবিতে অভিনয় করেছেন। সর্বশেষ খালিদ মাহমুদ মিঠুর ‘জোনাকীর আলো’ চলচ্চিত্রে তিনি চিত্রশিল্পী এস এম সুলতানের চরিত্রে অভিনয় করেছেন। সতেরটি বিভাগে জাতীয় পুরস্কার পাওয়া ‘মৃত্তিকা মায়া’ ছবি পরিচালনা করার আগে ‘ঘুণ’ (২০০৪), ‘জীবনমৃত’ (২০০৫) নামে দুটি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছেন তিনি। ‘মৃত্তিকা মায়া’ তার প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র। ছবিটির কাহিনি, চিত্রনাট্য ও পরিচালনা করেছেন গাজী রাকায়েত। তার পরিচালিত দ্বিতীয় চলচ্চিত্র ‘গোর দ্য গ্রেভ’ বাংলা ও ইংরেজি দুই ভাষাতেই নির্মিত হয়।

ব্যতিক্রমী নামের একটি নাট্য দলে কাজ করতেন আফসানা মিমি, সে সময় তার সাথে গাজী রাকায়েতের পরিচয় হয়। পরবর্তীতে দুজন একসাথে চলে আসেন নাগরিক নাট্য সম্প্রদায়ে। একসময় সখ্যতা গড়ে ওঠে তাদের মধ্যে। তারপর প্রেম-বিয়ে। কিন্তু বেশীদিন স্থায়ী হয় নি তাদের সম্পর্ক। ১৯৯৬ সালে সে সংসার ভেঙ্গে যায়। তারপর গাজী রাকায়েত দ্বিতীয় বিয়ে করেন। স্ত্রী গাজী নায়রা শাহরিন।

গাজী রাকায়েতের পিতা আবদুল আউয়াল গাজী এবং মাতা বিলকিস বেগম। তিনি গেন্ডারিয়া উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৮৩ সালে এসএসসি, নটরডেম কলেজ থেকে ১৯৮৫ সালে এইচএসসি এবং ১৯৯৩ সালে বুয়েট থেকে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং এ স্নাতক সম্পন্ন করেন।

গাজী রাকায়েত সম্পর্কে আরও জানুন এখানে

সূত্র: এই সময়

 

ব্যক্তিগত তথ্যাবলি

পুরো নামগাজী রাকায়েত
জন্ম তারিখজুন ১৫, ১৯৬৬

কর্মপরিধি

পুরষ্কার

পুরষ্কারবছরফলাফলবিভাগ/গ্রহীতাচলচ্চিত্র
জয়ীশ্রেষ্ঠ খল অভিনয়শিল্পী বিউটি সার্কাস