দিলারা জামান

৬০’ দশকের শুরুতে বাংলা নাটকে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে দিলারা জামানের অভিষেক। প্রথম জীবনে নায়িকা, পরবর্তী সময়ে কখনো বড় বোন, মা, খালা, দাদী চরিত্রে অভিনয় করে দিলারা জামান তার সুপ্ত প্রতিভার স্বাক্ষর রেখে চলেছেন। পাঁচ শতাধিক বাংলা নাটকে অভিনয় করেছেন খ্যাতিমান গুণী অভিনয় শিল্পী দিলারা জামান।

দিলারা জামান ১৯৪০ সালে ভারতের বর্ধমান গ্রামীণ পল্লীতে জন্মগ্রহণ করেন। তাহার মা পুরোপুরি গৃহিনী হলেও পিতা ছিলেন সরকারি চাকরিজীবী। ভারতের হিন্দুমুসলিম দাঙ্গা শুরু হলে দিলারা জামান পরিবারের সাথে ৬০’ দশকের শুরুতে ভারতের বর্ধমান থেকে যশোরে চলে আসেন। যশোরে আসার পর দিলারা জামান সর্বপ্রথম পিতামাতার অনুপ্রেরণায় নৃত্যকলায় যোগ দেন। নৃত্যকলায় মন বসছেনা ভেবে অংশগ্রহণ করেন সঙ্গীত সাধনায়। এখানেই একই অবস্থা। তারপর দেশের প্রখ্যাত নাট্যকার মুনীর চৌধুরীর সাথে পরিচয়, তিনি বললেন ‘দিলার তোমাকে গান ও নৃত্য দিয়ে হবে না। তুমি আমার রচিত পাঠশালা নাটকে অভিনয় করবে’। ১৯৬৫ থেকে শুরু করে দীর্ঘ ৫০ বছরের বেশী দিলারা জামানের অভিনয় জীবনের বয়স।

দিলারা জামানের স্বামী ফখরুজ্জামান চৌধুরী একজন সাবেক সরকারি আমলা, সুপরিচিত কলামিস্ট। দীর্ঘদিন দৈনিক ভোরের কাগজে মৌলিক ধারার কলাম লিখেছেন। বর্তমানে তিনি অসুস্থ। ৭০ দশকে আমার স্বামী ফখরুজ্জামান চৌধুরী যখন চট্টগ্রামে জেলা প্রশাসক ছিলেন তখনই তিনি দিলারা জামানকে নাটক করার বিষয়ে উৎসাহ দিতেন। যে কারণে তিনি চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় গিয়ে বিটিভি’র নাটকে অংশ নিতাম। ২ মেয়ে নিয়ে তাদের সুখের সংসার।  বর্তমানে দুই মেয়েই যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী।

অভিনয়ের জন্য দিলারা জামান বাবামা, স্বামী এবং এরপর যাদের কাছে কৃতজ্ঞ তারা হলেন প্রখ্যাত নাট্যকার মুনীর চৌধুরী স্যার, ওনার সহধর্মীনি লিলি চৌধুরী, অভিনেতা মো.জাকেরিয়া, আহসান আলী সিডনি, আসকার ইবনে শায়খ, আব্দুল্লাহ আল মামুন, হুমায়ুন আহমেদ,আসাদুজ্জামান নূর।

দৈনিক আজাদীর সাথে এক সাক্ষাতকারে দিলারা জামান বাংলা নাটকের একাল সেকাল সম্পর্কে বলেন, সেকালের বাংলা নাটক মানে একটি টিম ওয়ার্কের সম্মিলিত কাজ এবং একটি নাটক তৈরি করতে কি পরিমাণ কষ্ট করতে হয় সেটা নিজের চোখে না দেখা ছাড়া বিশ্বাস করা কঠিন। তখন কিন্তু তথ্যপ্রযুক্তি এত অগ্রসর ছিল না। যে কারণে আমাদের মত অনেক নাট্যশিল্পীকে কষ্ট করতে হয়েছে। একালের বাংলা নাটক মানে মুড়ির মোয়া। হাতের নাগালে সবই পাওয়া যাচ্ছে। টিমওয়ার্কতো দূরের কথা। ২/৩ দিনের মধ্যে একটি নাটক নির্মাণ কাজ শেষ হচ্ছে। তথ্যপ্রযুক্তি ব্যাপক অগ্রসর হওয়ার কারণে বেশি বেশি নাটক তৈরি হচ্ছে এবং নতুনদের কাজ করার পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।

 

উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র

ব্যক্তিগত তথ্যাবলি

পুরো নামদিলারা জামান