জনপ্রিয় অভিনেতা ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আফজাল হোসেন (Afzal Hossain) কে বাংলাদেশের মানুষ মাত্রই এক নামে চিনে। বহুপ্রতিভার অধিকারী এই মানুষটি একাধারে একজন অভিনেতা, কবি, লেখক, চিত্রশিল্পী, নির্মাতা এবং বিজ্ঞাপন শিল্পের অন্যতম প্রধান ব্যক্তি। মঞ্চ থেকে শুরু করে টেলিভিশন এবং পরবর্তীতে চলচ্চিত্রে জায়গা করে নিতে সক্ষম হয়েছিলেন এই গুণী ব্যক্তি, তবে শেষ পর্যন্ত থিতু হয়েছেন বিজ্ঞাপন শিল্পে।
নিজের জীবনের টার্নিং পয়েন্ট হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলায় ভর্তি হওয়াকে চিহ্নিত করেন আফজাল হোসেন। চারুকলায় পড়াকালীন সময়েই মঞ্চে অভিনয়ের সাথে যুক্ত হন তিনি। তখন ১৯৭৬ সাল। ঢাকা থিয়েটারে যোগদানের মাধ্যমে অভিনয় জীবনের শুরু। সেখানে ভালো করার কারণে বাংলাদেশ টেলিভিশনে কাজ করার সুযোগ পান এবং খুব দ্রুত জনপ্রিয়তার শীর্ষে চলে আসেন। একই বছর আনিস চৌধুরীর রচনা ও আতিকুল হক চৌধুরীর প্রযোজনায় ‘চেহারা’ নাটকের মাধ্যমে টিভিতে প্রথমবার একসঙ্গে অভিনয় করেন ঢাকা থিয়েটারের সহকর্মী আফজাল হোসেন ও সুবর্ণা মুস্তাফা। এই জুটিটি দর্শকরা সাদরে গ্রহণ করেন। সুবর্ণা মোস্তফার সাথে জুটি বেঁধে তিনি বেশ কিছু জনপ্রিয় নাটক দর্শকদের উপহার দেন। আফজাল হোসেনের লেখা প্রথম নাটক ‘জীবনে জীবনে’, ‘সে’, ‘নীল চিঠি’, ‘পারলে না রুমকী’ ইত্যাদি নাটকেও তারা একত্রে অভিনয় করেন।
কিন্তু টেলিভিশনে স্থির হন নি আফজাল হোসেন, বরং চলচ্চিত্রে অভিনয় শুরু করেন। অল্প কিছু চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন তিনি। কিন্তু সেখানেও স্বস্তি না পেয়ে তিনি অভিনয় থেকে দূরে সরে যান।
২০১৫ সালে তিনি চলচ্চিত্র নির্মাতা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। ফরিদুর রেজা সাগরের ‘ছোটকাকু’ সিরিজের একটি বইকে চলচ্চিত্রে রূপ দেন তিনি। ২০১৬ সালে ছবিটি মুক্তি পায়। অবশ্য এর আগে থেকেই তিনি নাট্য নির্মান শুরু করেন।
১৯৮৪ সাল থেকে আফজাল হোসেন বিজ্ঞাপন শিল্পে কাজ তথা বিজ্ঞাপনচিত্র নির্মান করা শুরু করেন। বাংলাদেশে মডেলিং-কে প্রতিষ্ঠিত করার ক্ষেত্রে তার ভূমিকা অনস্বীকার্য। আফজাল হোসেন অনেক আগে থেকে কবিতা লিখলেও তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘শুধু একটাই পা’ ২০১১ সালের একুশে বইমেলায় প্রকাশিত হয়।
ব্যক্তিগত জীবনে আফজাল হোসেন বিবাহিত। তার স্ত্রীর নাম তাজিন হালিম মনা। তাদের দু’টি পুত্রসন্তান রয়েছে।
সূত্র:
১. উইকিপিডিয়া
২. Daily Star
৩. সমকাল