মসিহউদ্দিন শাকের (Masihuddin Shaker) মূলত একজন চলচ্চিত্র সংসদকর্মী। একটি মাত্র ছবি পরিচালনা করেছেন তিনি, যৌথভাবে। কিন্তু এই একটি চলচ্চিত্রের মাধ্যমে বাংলাদেশকে সারা বিশ্বের কাছে তুলে ধরেছেন, হয়েছেন এফডিসির আজীবন সদস্য।
মসিহউদ্দিন আহমেদ একজন স্থপতি। কর্মজীবন শুরু করেছিলেন সরকারী চাকুরে হিসেবে, কিন্তু চাকরী শুরু করার কয়েকমাসের মধ্যেই কিছু অনিয়মের অভিজ্ঞতা থেকে তিনি চাকুরী থেকে ইস্তফা দানের সিদ্ধান্ত নেন। পরবর্তীতে তিনি একটি ফার্মে চাকরী শুরু করলেও ছবি বানানোর কাজ শুরু করার কারণে সেই চাকুরীও ছেড়ে দেন।
ব্যক্তিগত আগ্রহে ফিল্ম নির্মান সম্পর্কে পড়াশোনা শুরু করেছিলেন মসিহউদ্দিন শাকের। ফিল্ম সংক্রান্ত বই সংগ্রহ করতে গিয়েই পাকিস্তান ফিল্ম সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ খসরুর সাথে পরিচয় হয় এবং তিনি তাকে পাকিস্তান ফিল্ম সোসাইটির সদস্য করে নেন। মূলত তখন থেকেই চলচ্চিত্র নির্মাণের আগ্রহ ডালপালা মেলতে শুরু করে। পরবর্তীতে শেখ নিয়ামত আলীর সাথে পরিচয়ের পরে দুজনে মিলে চলচ্চিত্র নির্মানের পরিকল্পনা শুরু করেন এবং বিভিন্ন বিষয় ও চিত্রনাট্য নিয়ে চেষ্টা করার পর শেষ পর্যন্ত সূর্য দীঘল বাড়ি চলচ্চিত্র নির্মাণ বিষয়ে একমত হন এবং নির্মান কাজ শুরু করেন।
মসিহউদ্দিন শাকের অন্য কোন চলচ্চিত্র নির্মান করেন নি। অন্য কোন ছবি কেন করলেন না জানতে চাইলে মসিহউদ্দিন শাকের বলেন, “আমাদের চলচ্চিত্র অঙ্গণটা এখন কালো টাকায় ছেয়ে গেছে৷ তাছাড়া ভালো কাজের মূল্যায়ন আর পৃষ্ঠপোষকতারও অভাব প্রকট৷ সরকার চাইলে আমাদের দেশের চলচ্চিত্রকে আরো এগিয়ে নিতে পারত৷ ভালো ছবি নির্মাণের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে বড় অংকের অনুদান দেয়ার পাশাপাশি যাঁরা ভালো ছবি করে তাঁদের বিভিন্ন কর মওকুফ করে দেয়ার ব্যবস্থা থাকলে ভালো হত৷ আমাদের দেশে অনেক পরিচালক আছেন যাঁরা টাকার অভাবে ভালো ছবি করতে পারছেন না৷ সরকার একটু সচেতন হলে আমরা সবাই ভালো ছবি বানাতে পারতাম৷”
মসিহউদ্দিন শাকেরের বাবার নাম জালাল উদ্দিন আহমেদ এবং মায়ের নাম জহুরা আহমেদ। দেশভাগের আগে তাঁর বাবা কলকাতায় খাদ্য বিভাগে চাকরি করতেন৷ দেশভাগের পর তিনি ঢাকায় চলে আসেন৷ চার ভাইবোনের মধ্যে শাকের ছিলেন দ্বিতীয়৷ পারিবারিক জীবনে মসিহউদ্দিন শাকেরের স্ত্রী জেবুন্নেছা এবং একটি কন্যা সন্তান। সূর্য দীঘল বাড়ি তৈরীর সময়েই ১৯৭৯ সালে শাকের জেবুন্নেছাকে বিয়ে করেন।
মসিহউদ্দিন শাকেরের পূর্ণ জীবন সম্পর্কে জানতে মাকসুদা বেগমের গবেষণা প্রবন্ধ দেখা যেতে পারে।