এ কে আজাদ একজন নৃত্য পরিচালক। এ কে আজাদের নৃত্য পরিচালনায় মুক্তি পাওয়া ছবির মধ্যে ‘বরিশালের মাইয়া ঢাকার পোলা’, ‘দানব সন্তান’, ‘তুই যদি আমার হইতিরে’, ‘মেঘের কোলে রোদ’, ‘রং নাম্বার’, ‘জাগো’, ‘জগৎ সংসার’, ‘আকাশ কত দূরে’ প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য।
এ কে আজাদ কিশোর বয়সে চলচ্চিত্রের প্রতি দূর্বার ভালোবাসার টানে বিএফডিসি ছুটে আসেন সুদূর নড়াইল থেকে। তার বাড়ি নড়াইল জেলার লোহাগড়া থানায়। শুটিং দেখতে দেখতে আর ফিরে যেতে ইচ্ছে হয়নি। কিন্তু থাকবেন কোথায়? করবেন কী?
নানান চেষ্টা-তদবিরের পর মিলে গেলো একটা সুযোগ। বিএফডিসির ক্যান্টিনে ফুট-ফরমাশ খাটার একটা চাকরি জুটে যায়। ক্যান্টিনবয় হিসেবে শুরু হয় তার চলচ্চিত্রাঙ্গনের জীবন।
কিন্তু শুধু ক্যান্টিনবয় হয়ে থাকার জন্য তো তার জন্ম হয়নি। ছোটবেলা থেকেই নাচের প্রতি তার ছিলো তুমুল আগ্রহ। বিয়ে বাড়ি, খৎনা উৎসবে বন্ধুরা মিলে নেচেও বেড়াতেন। এফডিসিতে বসে সেই ইচ্ছাটা জেগে উঠলো আবার। সুযোগও পেয়ে গেলেন। নৃত্য পরিচালক আজিজ রেজাকে তার ইচ্ছের কথা জানান। আজিজ রেজা ছেলেটার আগ্রকে গুরুত্ব দিয়ে ভর্তি করালেন তার নিজের একাডেমিতে। শুরু হলো তালিম।
আজিজ রেজার নির্দেশনায়ই শুরু হলো তার ক্যারিয়ার। চলচ্চিত্রের গানে গ্রুপ ড্যান্সে অংশ নিতে থাকলেন তিনি। ব্যতিক্রমী প্রতিভার কারণে সেই সময় নজরে পড়ে যান বিখ্যাত নৃত্য পরিচালক আমির হোসেন বাবুর। আমির হোসেন বাবু তাকে আজিজ রেজার কাছ থেকে নিয়ে যান নিজের দলে। নিজের সহকারী হিসেবে তাকে গড়ে তোলেন।
আমির হোসেন বাবুর মতো শিক্ষক পেয়ে এ কে আজাদ যেন সত্যি সত্যি জ¦লে ওঠেন। মন-প্রাণ দিয়ে শিখতে থাকেন গুরুর কাছ থেকে। পাশাপাশি নিজেকে আরো ক্ষুরধার করতে শিখে নেন ক্ল্যাসিকাল পার্টটুকু।
প্রায় দশ বছর আমির হোসেন বাবুর সহকারী হিসেবে শ’পাঁচেক ছবির নৃত্য পরিচালনার সঙ্গে সরাসরি জড়িত ছিলেন এ কে আজাদ। অতঃপর ২০০৩ সালে আমির হোসেন বাবু মারা গেলে শুরু হয় তার একক নৃত্য পরিচালক হিসেবে পথ চলা।
চলচ্চিত্রের নৃত্য পরিচালনার পাশাপাশি তিনি একটা একাডেমিও পরিচালনা করছেন। ‘আজাদ আ স্কুল অব ডান্স’ নামের এ একাডেমিটি মগবাজার রেলগেটের পাশে অবস্থিত। এখান থেকেই নাচ শিখেছেন অভিনেতা নিলয়, আরিয়ান শাহ, রাজ ও ইমনেরা। এ ছাড়াও চিত্রনায়িকা পূর্ণিমা, শাহনুর ও কারিশমা তার নাচের ছাত্রী ছিলেন।