কাহিনী সংক্ষেপ
ছবিতে মূলত ফুটে উঠেছে অবহেলা আর নির্মম বাস্তবতার যাতাকলে পিষ্ট হয়ে বেড়ে ওঠা জালাল নামে একটি ছেলের গল্প।
ছবিতে মূলত ফুটে উঠেছে অবহেলা আর নির্মম বাস্তবতার যাতাকলে পিষ্ট হয়ে বেড়ে ওঠা জালাল নামে একটি ছেলের গল্প।
মোশাররফ করিম | জালালের পিতা | |
তৌকীর আহমেদ | করিম, জালালের পিতা | |
নূর এ আলম নয়ন | জালালের পিতা | |
মৌসুমী হামিদ | শিলা | |
আরাফাত রহমান | জালাল | |
মোহাম্মদ ইমন | জালাল | |
শর্মীমালা |
পুরষ্কার | বছর | ফলাফল | বিভাগ/গ্রহীতা |
---|---|---|---|
জয়পুর আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব | ২০১৫ | জয়ী | শ্রেষ্ঠ পরিচালক |
কাহিনী | আবু শাহেদ ইমন |
চিত্রনাট্য | আবু শাহেদ ইমন |
সংলাপ | আবু শাহেদ ইমন |
সঙ্গীত পরিচালক | চিরকূট |
সুরকার | - |
গীতিকার | - |
মুক্তির তারিখ | ৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৫ |
ফরম্যাট | ডিজিটাল |
রং | রঙিন |
নির্মাণ ব্যয় | ৫৫ লক্ষ টাকা |
ইংরেজী নাম | Jalal's Story |
দেশ | বাংলাদেশ |
ভাষা | বাংলা |
Capone’s khan
‘জালালের গল্প’ ! চলচ্চিত্রটির প্রথম অর্ধাংশ দেখে সন্দিহান ছিলাম নামকরণটা কতটুক স্বার্থক হবে। কিন্তু যখন পুরো চলচ্চিত্রটি শেষ হল ঠিক তখন এমন নামকরণের প্রকৃত মাহাত্ম্যটা খুঁজে পেলাম। রিভিউ লিখার আগে সবাইকে অনুরোধ করছি বিনোদনের জন্য হোক, সমালোচনার জন্য হোক, দেশের চলচ্চিত্রকে উৎসাহিত করার জন্য হোক, সবাইকে হলে যেয়ে ছবিটি দেখার জন্য। কারণ ক্রমশ অগ্রসরমান আমাদের ইন্ডাষ্ট্রিতে ‘জালালের গল্প’ নামের এমন একটা ব্যাপার সংযুক্ত হয়েছে যা কিনা ইতিমধ্যে লুফে এনেছে আন্তর্জাতিক সম্মাননা। সবচেয়ে বড় কথা পরিচালক আবু শাহেদ ইমনের প্রথম কাজ এটি। ছবিটির কনসেপশন অবশ্যই ভিন্ন ধারার। প্রচলিত ধারা থেকে বেরিয়ে যারা একটু সৃজনশীল কাজের দিকে ইন্ডাষ্ট্রিকে নিয়ে যাতে যাচ্ছেন তাদের কাতারে আরেকজন যুক্ত হলেন। চলচ্চিত্রটির গল্প এমনভাবে করা হয়েছে যাতে আপনি শেষটা পর্যন্ত দেখেন। তবে হ্যাঁ জালালের বাপ যখন তৌকির আহমেদ তখন কাহিনীটা একটু লম্বা করা হয়েছে। হয়ত সেখানে আরেকটু দ্রুত এগুনো যেত। জালালের প্রথম বাপের অভিনয় তার চরিত্রের ভিতরে থেকে করা হয়েছে। তৌকির আহমেদ অভিনয়ে ছিলেন বরাবরের মতই বলিষ্ঠ ও সাবলীল। বড়পর্দায় তাকে অবশ্যই ভালো লেগেছে। জালালের দ্বিতীয় মায়ের অভিনয়টা আরও প্রাণবন্ত হতে পারত। গল্পে পরিচালক মাঝেই মাঝেই কিছু মজার সংলাপ রেখেছেন যা দর্শকদের অবশ্যই আনন্দ দিবে। ছবিটির অর্ধাংশ যাওয়ার পর হঠাৎ মনে হল প্রাণের সঞ্চার হয়েছে। কারণ তখন অভিজ্ঞ অভিনেতা মোশাররফ করিম আসেন পর্দায়। যিনি কিনা এই চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্যই পর্তুগালের ফিল্ম ফেস্টিভেল থেকে জিতে নিয়েছেন তার প্রথম আন্তর্জাতিক পুরষ্কার। মোশাররফ করিমের অনেকগুলো সিন আছে যা দর্শক আসলেই তার কাছ থেকে আশা করে। পরিচালক সেখানে দর্শকদের আশাহত করেননি। তবে এই অভিনয়গুলো তার জন্য নতুন কিছু নয়। বরাবরের মত দর্শকদের বিনোদন দিবে। এবার আসি মৌসুমী হামিদের কথায়। চরিত্রে তাকে হয়ত মানিয়েছে কিন্তু অভিনয়টা আরও ভালো করতে পারতেন। তবে নতুন হিসেবে যথেষ্ট ভাল হয়েছে। এবার আসি যুবক জালালের কথায়। আরাফাত রহমান। পর্দায় হয়ত এবারই তাকে প্রথম দেখেছি। তার অভিনয় এবং উপস্থাপনকে আমি ১০০ তে ৯০ দিব। যেমনটা করার কথা ঠিক তেমনই করেছেন। ছবিটিতে দর্শককে স্পর্শ করে যাবে এমন কিছু সিন আছে। যেমন ছোট জালালকে যখন বস্তায় ভরে আবার নদীতে ভাসিয়ে দেয়া হয়। চলচ্চিত্রটির সিনেমটোগ্রাফি অবশ্যই আরও ভাল হতে পারত। কিছু শট আরোপ করা হয়েছে মনে হয়। প্রথমদিকটায় অনেকবার ক্যামেরায় কাঁপাকাঁপি ছিল। তবে কিছু শট একস্ট্রা অর্ডিনারিও ছিল। সবমিলিয়ে ভালো। ব্যাকগ্রাওন্ড মিউজিক প্রত্যেকটা সিনের সাথে স্যুট করেছে। তবে সর্বস্তরের দর্শকের কথা বিবেচনা করে এবং ছবিটিকে আরও বেশি প্রাণচঞ্চল করতে পরিচালক একটা গান রাখতেই পারতেন। সেই সুযোগ তার ছিল। মোটের উপর আবু শাহেদ ইমন পরিচালিত ইমপ্রেস টেলিফিল্মের ছবি ‘জালালের গল্প’ দেখে দর্শক ঠকবে না। বরং ভালোই লাগবে। হলে যেয়ে ছবিটি দেখুন। বাংলা চলচ্চিত্রকে উৎসাহিত করুন।