কাহিনী সংক্ষেপ
শিকদার বাড়ীতে বাস করে বৃদ্ধ মকবুল ও তার তিন স্ত্রী সহ আবুল, রশিদ, ফকিরের মা ও মন্ত এবং আরো অনেকে। বৃদ্ধ মকবুলের অষ্টাদশি বউ টুনির মনটা মকবুলের শাসন মানতে চায় না। সে চায় খোলা আকাশের নিচে বেড়াতে, হাসতে, খেলতে। তাই সঙ্গী হিসেবে বেছে নেয় অল্প বয়সী সঠামদেহী মন্তকে। মন্ত বাবা-মা হারা অনাত। বিভিন্ন কাজ করে বেড়ায়। টুনি আর মন্ত সকলের অগোচরে রাতের বেলায় বেরিয়ে পড়ে মাছ ধরতে। বর্ষায় যায় শাপলা তুলতে। এমনি করে দুজন দুজনার কাছে এসে যায়। অব্যক্ত ভালবাসার জোয়ারে ভাসে ওরা দু’জন। কিন্ত কেউ মুখ ফুঁটে বলতে পারেনা মনের কথা, লোক লজ্জার ভয়ে। সমাজের রক্ত চক্ষু ওদের দুরে রাখে। Hazar Bosor Dhore
রিয়াজের অভিনয় জীবনের একটা মাইলফলক এই মুভি। উপন্যাসে বর্ণিত মন্তু চরিত্রের মধ্যে পরিবারপ্রধাণের প্রতি আনুগত্য, সমাজের প্রতি ভয় আর টুনির প্রতি ভালোবাসার অবস্থান এবং সেই অনুভূতিগুলোর দ্বান্দ্বিক চিত্র একেবারে কানায় কানায় ফুটে উঠেছে। এর চেয়ে ভালোভাবে সম্ভব কিনা জানিনা। আর টুনি চরিত্রে শশী সম্ভবত তাঁর প্রথম মুভিতে অভিনয়েই বাজিমাত করেছিলো – সেটা একদিকে যেমন টুনি চরিত্রটি যে বয়সের এবং যেমন ছেলেমানুষি আশা করা যায় সেই একই বয়সের বলেই যেমন সম্ভব হয়েছিলো ঠিক তেমনি এককালে শক্তিমান অভিনেত্রী এবং জহির রায়হানের মত প্রতিভাবান মানুষের সহধর্মিনী সুচন্দারও নিজে হাতে শিখিয়ে দেয়ার চেষ্টা ছিলো বলাই যায়। এটিএম শামসুজ্জামান এই চরিত্রগুলোর বাংলাদেশে মনে হয় তুলনাহীনভাবে সেরা – তাই আশাতীত চরিত্র ফুটিয়ে তুলেছেন তিনিও।
পার্শ্ব চরিত্রগুলোকে একটু গুরুত্ব কম দেয়া হয়েছে চিত্রায়ণের সময় – এটা অবশ্য অস্বাভাবিক কিছু নয়। উপন্যাস থেকে মুভি বানাতে গেলে এটা হয়ই – উপন্যাসের মত ব্যাপকতা দিতে গেলে সিনেমা তার মূলসুর হারিয়ে ফেলে।
এই সিনেমার শেষের দিকে একটা হাহাকারের ভাব আছে। বাংলা সিনেমায় এটা বিরল। পুরো সিনেমাতে অভিনয়ের মান এবং দৃশ্যায়ন ছিল দূর্দান্ত। অধিকাংশ বাংলা সিনেমা যে অতি অভিনয়ের দোষে দুষ্ট, সে থেকে মুক্ত ছিলে এই সিনেমা।