আজকাল সমালোচনার ভঙ্গিতে ঢের পরিবর্তন এসেছে।সরাসরি কথা বলার জন্য মুখিয়ে থাকা লোকজনের সংখ্যাটা বেশি।সরাসরি কথা বলতে আমিও পছন্দ করি।তাই আজকে অমর প্রিয় নায়ক সালমান শাহর ‘দেন মোহর’ সিনেমাটিকে ক্লাসিক বলছি সরাসরি।কেন ক্লাসিক তার উত্তরটা লেখা পড়তে পড়তেই জানা যাবে। Continue reading
লিখেছেনঃ রহমান মতি
বাংলাদেশের চলচ্চিত্র গত শতকে যেভাবে সমৃদ্ধ ছিল সেই সমৃদ্ধির দিকে আবারও যেতে প্রতিদিনই স্বপ্ন দেখি। সেকালের সিনেমা থেকে গ্রহণ বর্জন করে আগামী দিনের চলচ্চিত্রের প্ল্যাটফর্ম গড়ে উঠুক। আমি প্রথমত একজন চলচ্চিত্র দর্শক তারপর সমালোচক হিশেবে প্রতিষ্ঠিত হবার স্বপ্ন দেখি। দেশের সিনেমার সোনালি দিনের উৎকর্ষ জানাতে গবেষণামূলক কাজ করে আগামী প্রজন্মকে দেশের সিনেমাপ্রেমী করার সাধনা করে যেতে চাই।
আমি, তুমি, সে সবাই ‘প্রেম পিয়াসী’
এমন অনেক লোকজনের সাথে আপনার অামার দেখা সাক্ষাৎ হয় যারা বলে প্রেম তারা জীবনে করেনি কিংবা তারা প্রেম পছন্দ করে না। ইউটিউবে ‘সবার জীবনে প্রেম অাসে’ গানের একটা লিংকে দেখেছিলাম একজন লিখেছে ‘এটা ফালতু গান, সবার জীবনে প্রেম অাসে না।’ তার জীবনে কখনো নাকি অাসেনি তাই সে গানটিকে গ্রহণ করতে পারেনি। অাক্ষেপ করে বলা অাসলে। ঘটে কিন্তু এটাই যেখানে প্রেম সবার জীবনেই অাসে।সেটা গলির মোড়ে দাঁড়িয়ে থাকা সেই প্রথম দেখা মেয়েটি কিংবা যাকে দেখে ভালো লাগার পরেও কখনো বলা হয়নি যে তাকে ভালো লাগত। মেয়েটি হয়তো খেয়াল করত অাবার সময়ের ব্যবধানে ভুলে যেত। অনেকদিন বাদে দেখা হলে সে মেয়েটি রাহুল দেব বর্মনের ‘রুবি রায়’ গানের মতো বলত ‘তোমাকে কোথায় যেন দেখেছি।’ Continue reading
অজ্ঞাতনামা : বাস্তবসম্মত কেস স্টাডি
ভালো সিনেমা হরহামেশা মেলে না।ভালো গল্পের সিনেমাও হরহামেশাে মেলে না।’ভালো সিনেমা’ ও ‘ভালো গল্প’ পরিপূরক।অফট্র্যাকের সিনেমায় এ দুটো ভালো মেলে।বাণিজ্যিক সিনেমার গতিপথ অনেকটাই একঘেয়েমি অাজকাল তাই অফট্র্যাকের জন্য মুখিয়ে থাকে অনেক দর্শক।বাংলাদেশ রাষ্ট্রের বাস্তবতায় অফট্র্যাক সিনেমার বাজার ভালো রকমই হতাশার।পৃষ্ঠপোষকতার অভাব অার দর্শকভেদে ‘নাটক, টেলিফিল্ম’ ব্যাখ্যা দেবার কৌশলে অবমূল্যায়নের পরিবেশ অাছে।এ পরিবেশেই নতুন অফট্র্যাক সিনেমা ‘অজ্ঞাতনামা’-র প্রসব হলো ঢালিউডে।
‘অজ্ঞাতনামা’ সিরিয়াস ঘরানার অফট্র্যাক ক্যাটাগরিতে বাস্তবসম্মত কেস স্টাডি।কেস স্টাডি বেজায় শক্ত কাজ।শক্ত কাজের চ্যালেন্জ সবাই নিতে পারে না অাবার যারা নেয় সহজে হাল ছাড়ে না।হাল না ছেড়েই বানানো হয়েছে সিনেমাটি।তৌকির অাহমেদ ‘কেস স্টাডি’ করেছেন তার সৃজনশীল স্টাইলে যেখানে দর্শকের কাছে তিনি একজন গ্রহণযোগ্য নির্মাতা হিশেবে অাস্থা অর্জন করেছেন।সিনেমাটি ৬৯ তম কান চলচ্চিত্র উৎসবের বাণিজ্যিক শাখা ‘মার্কসে দু’ ফিল্মে প্রিমিয়ার হয়।পাশাপাশি ইতালির ‘গালফ অব নেপলস ইন্ডিপেনডেন্ট ফিল্ম ফেস্টিভাল’ অর্জন করে জুরি মেনশন অ্যাওয়ার্ড।গুরুত্বপূর্ণ দুটি অান্তর্জাতিক সম্মাননা পেয়ে দেশে মুক্তি পায় সিনেমাটি।
বাস্তব বিষয়ের উপরে সিনেমা নির্মাণ যারা করতেন তৌকির অাহমেদ তাঁদের স্টাইলকে ফলো করেন এটুকু তাঁর সিনেমার ভাষাতে পরিষ্কার।তাই ‘অজ্ঞাতনামা’ চোখের সামনে থাকা বাস্তবকে তুলে এনেছে কেস স্টাডি-র মাধ্যমে।সিনেমাটির স্টোরি টেলিং, মেকিং মেসেজ সবকিছুর মধ্যে এই ‘কেস স্টাডি’-টা সূক্ষ্মভাবে করা হয়েছে।একজন কুমোর তার হাঁড়িটাকে শৈল্পিক করে তোলার জন্য চাকার সাথে সম্পর্কের পাশাপাশি নিজের হাতটিকে তুলির মতো ব্যবহার করে তাই রংবেরং অাকার ধারণ করে।এভাবে পুরো প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হয়।’অজ্ঞাতনামা’-র প্রক্রিয়াও এভাবে সম্পন্ন হয়েছে।’কেস স্টাডি’-তে একটি বিষয়কে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত গবেষণার অাকারে নিয়ে ডকুমেন্টেশন সম্পন্ন হয়।’অজ্ঞাতনামা’-তে তাই হয়েছে।
অালোচনার সুবিধার্থে পয়েন্ট করে বিশ্লেষণের প্রয়োজন অাছে..
‘নামা’ প্রসঙ্গ
**********
‘নামা’ শব্দটি ব্যবহারিক দিক থেকে বিভিন্ন অর্থ তৈরি করে।প্রয়োগটি বৈচিত্র্যময়।যেমন ধরুন- ‘চুক্তিনামা, কাবিননামা, অামলনামা।’মধ্যযুগে ‘জঙ্গনামা’ নামে এক ধরনের সাহিত্য রচিত হতো
।এ শব্দাংশটি একটা ডকুমেন্ট হিশেবে ব্যবহৃত হয়।’অজ্ঞাতনামা’ শব্দটিতে আছে বাস্তবের ডকুমেন্টেশন।
বিষয় নির্বাচনে বাস্তবতা
*********************
সিনেমার বিষয় ‘মধ্যপ্রাচ্যে জনশক্তি রপ্তানির অনিয়ম ও এর পরিণতি।’বিষয়টি সমসাময়িক এবং লং টার্ম বাস্তব।কারণ জনশক্তি রপ্তানির প্রক্রিয়া বন্ধ থাকে না।যদিও বিদেশি জটিলতা হয়ে থাকে তবে তা সাময়িক।রপ্তানির সময়টি সম্পূর্ণ একটা মৌসুমকে ঘিরে থাকে।নিপূণ সেজন্য ‘middle east’ এ যাওয়ার স্বপ্ন দেখে।এভাবে অারো অনেককে স্বপ্ন দেখায় দালাল।সিনেমায় এটা অাছে।
বাজার পদ্ধতি
************
যারা জনশক্তি রপ্তানিতে কাজ করে এদের বাজার পদ্ধতি বা market place নিম্নবিত্ত।এদের স্থানীয় নাম ‘দালাল।’নিম্নবিত্তকে টার্গেট করে তারা ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখায়।স্বপ্ন দেখানোর পদ্ধতিও সস্তা।কোনোরকমে যেতে পারলেই বিদেশি টাকা পাঠাবে বা জমাবে তারপর এককালীন সঞ্চয় নিয়ে দেশে ফিরবে।দেশে এসে ব্যবসা-বাণিজ্য করবে এবং স্বনির্ভর হবে।’দালাল’ চরিত্রে সিনেমায় শহীদুজ্জামান সেলিম টার্গেট করে এভাবেই।দালালের লোভী মানসিকতায় জাল পাসপোর্ট দিয়ে একজনের জায়গায় অার একজনকে পাঠিয়ে স্বার্থ হাসিল করার বিষয়টি অারো বাস্তব।সেলিম এ কাজটি করার ফলেই ফজলুর রহমান বাবুর ছেলের জায়গায় বেওয়ারিশ লাশ এসে পড়ে।নিম্নবিত্তরা ভালো থাকতে চায় তাই সহজে টোপে পড়ে যায়।
সরেজমিন তদন্ত
***************
সরেজমিন তদন্তের বিষয়টি এ সিনেমার শক্তিশালী জায়গা।একটা মামলাকে যেমন দীর্ঘ পরিস্থিতিতে দেখানো হয় সেভাবেই সিনেমার রহস্যপর্ব দেখানো হয়েছে।রহস্য উদঘাটনে একটি লাশের খোঁজ করতে গিয়ে শতাব্দী ওয়াদুদ তার পুলিশ ফোর্সের সাহায্যে তদন্তটি করতে থাকেন।সরেজমিনে গিয়ে কার বাড়ি, কোথায় থাকে, কে পাঠিয়েছে বিদেশে, কোন ভিসায় পাঠিয়েছে, লাশ একজনের জায়গায় অার একজ ন কিভাবে এলো, কিভাবে সেটা নিয়ে হয়রানি হলো এসব পার্ট টু পার্ট দেখানো হয়েছে।সরেজমিনে সিনেমার নামের ক্ষেত্রে সার্থকতাটা ফুটে উঠেছে।
প্রশাসনিক জটিলতা
******************
প্রশাসন অনেক বড় সমস্যা বাংলাদেশে।কারণ, অনিয়ম রন্ধ্রে রন্ধ্রে ভরপুর।যদিও প্রশাসনিক ব্যবস্থাকে সিনেমায় প্রথমদিকে অ্যাকটিভ দেখানো হয়েছে যেটা হরহামেশা দেখা যায় না।পরে লাশের হদিস করতে গিয়ে পুরো সমস্যাটি ধরা পড়ে।বেওয়ারিশ লাশ কে গ্রহণ করবে সেটা প্রধান সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়।এক প্রতিষ্ঠান অন্য প্রতিষ্ঠানকে দায়ী করে।স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাজ অাবার খাদ্য মন্ত্রণালয় বলে অন্য একটার কথা।এভাবে দায়িত্ব এড়ানো বা চাপানোর মতো সূক্ষ্ম প্রশাসনিক জটিলতা ঘটে।পুৃলিশ ক্লিয়ারেন্স পেতে ঝামেলার বিষয়টিও এর অাওতায় পড়ে।
বাস্তবসম্মত অভিনয়
******************
বাস্তবসম্মত অভিনয়ই সিনেমাটির প্রাণ।সব চরিত্রই নিজেদের জায়গায় নিজেদের চরিত্রকে ফুটিয়ে তুলেছে।’দালাল’ শহীদুজ্জামান সেলিম নিম্নবিত্তকে স্বপ্ন দেখানো বা প্রশাসেনর কাছে নিজেকে জনগণের সেবক হিশেবে তুলে ধরতে গিয়ে অাইনি জটিলতায় পড়ে যায়।নিজের ক্ষতি দালালরা চায় না তাই অার ‘ফকিরের বাচ্চা’ বলে গালি দেয়া নিম্নবিত্তের জন্য কাজ করবে না বলে জানায়।সন্তানহারা ফজলুর রহমান বাবু সিনেমার মানবিক অংশ।তদন্তে অাসা ওসির সামনে কথা বলার সময় তার এক্সপ্রেশন বাস্তবকেও হার মানায়।সেলিম যখন শিখিয়ে দেয় লাশ গ্রহণের সময় কাস্টমসে কি বলতে হবে সেটা না বলে সন্তানের কথাই বলে।সেলিম উত্তপ্ত হয়ে মারতে থাকে।তারপর ‘অাছির বাজান, অাছির বাজান’ বলে কাঁদতে থাকে জীবন্তভাবে।মোশাররফ করিম ওসির নির্দেশ মানা পুলিশের কর্মচারী হলেও মজা ও সিরিয়াসনেস দুটোই দেখায়।নিপূণের ঘরে সে তার প্রেমিক হয়ে অাসে যা দর্শককে হাসিয়েছে অাবার বাবুকে সেলিম যখন মারে রাস্তার মধ্যে মোশাররফ বুক চিতিয়ে দাঁড়ায়।নিপূণ মধ্যপ্রাচ্যের স্বপ্ন দেখা মেয়ে যার স্বপ্নভঙ্গ দিয়ে সিনেমার বাস্তবসম্মত মেসেজ অাসে যে ভুল পথে স্বপ্ন দেখার ফল খারাপ হয়।অভিনয়টা চমৎকার।শাহেদ অালি সন্তানহারা বাবুকে সান্ত্বনা দেয়া মানবিক চরিত্র, তার বডি ল্যাংগুয়েজে সেটার ভিন্ন টাচি অবস্থা ফুটে ওঠে।শতাব্দী ওয়াদুদ ওসির পদে নিজের মেজাজি অভিনয়ে অসাধারণ।তদন্তে তার তৎপরতা প্রশসংনীয়।জুঁই স্বামী শোকে পাথরমূর্তিতে অনবদ্য কিংবা মা মোমেনা চৌধুরী অাহাজারিতে অসাধারণ।অাবুল হায়াত হঠাৎ ছেলে হারানোর খবর শুনে পড়ে যেতে থাকে একজনের ওপর।তখন মানতে হয় এটা বাস্তবের দৃশ্য।
[su_box title=”অজ্ঞাতনামা নিয়ে আরও দেখুন”]”অজ্ঞাতনামা”কথা, লেখক: সৈয়দ নাজমুস সাকিব[/su_box]
ক্যামেরার ভাষা
**************
ক্যামেরায় বাস্তব দৃশ্যগুলো আনতে পারে না সব নির্মাতা।এ সিনেমায় নৌকা, স্রোত, সূর্যাস্ত, গোধূলি, রাত, ভোর সব বাস্তবিক ছিল।খোঁচা খোঁচা দাড়ির বাবুর মেকাপ বাস্তবের মতোই হতাশার মধ্যে থাকা মানুষের অবয়ব তুলে ধরে।ক্লোজ ও লং শটের সমান উপস্থিতিতে চরিত্রগুলোর বডি ল্যাংগুয়েজ বাস্তবিক করা হয়েছে।শিশুশিল্পীর নৌকা বানানো এবং ভাসিয়ে দেয়ার মাধ্যমে বাবার জন্যে অপেক্ষাকে বোঝানো হয়েছে।বাবা গেছে নদী পেরিয়ে তাই নৌকাই তার ফিরে অাসার প্রতীক।
মানবিক উন্মোচন
****************
সিনেমাটির অাগাগোড়াই মানবিক দিককে কেন্দ্র করে বা লক্ষ্য করে এগিয়েছে।গান তার সবচেয়ে বড় নমুনা।’প্রতিদিন তোমায় অামি দেখি না মা/কতশত নামের ভিড়ে অামি অজ্ঞাতনামা।’ এখানে ‘অামি’-র মাধ্যমে নির্মাতার পাশাপাশি দর্শকও হিশেবটা মেলাতে পারবে।অজ্ঞাতনামা-র পরিচয়হীন বাস্তবটা যে কারো ক্ষেত্রে সমান।বাস্তব দেখেও না দেখার ভান করা অামরা সবাই নিজেদের কাছে অজ্ঞাতনামা।’ক্ষমা কইরা দিও বাজান/ ক্ষমা কইরা দিও/ কেমন কইরা তোমার দেহ/মাটি চাপা দেব।’ চূড়ান্ত মানবিক দিক এ গান।সন্তানহারা বাবার অার্তনাদে মধ্যপ্রাচ্য জনশক্তি বাণিজ্যে অাদম ব্যবসা ভয়াবহ এখানেই।
সিনেমা হচ্ছে শেষ পর্যন্ত দেখানোর জিনিস।চোখের দেখা বলে যেটুকু থাকে পর্দায় তার একটা উপস্থিতি থাকে।’অজ্ঞাতনামা’-র পর্দা উপস্থিতি বাস্তবকে স্তরে স্তরে একটা নির্দিষ্ট বিষয়ের সম্পূর্ণ ঘটনাকে দেখানো কেস স্টাডি।এ স্টাডিতে শেষ পর্যন্ত দর্শকের লাভ হচ্ছে চোখের কোণে একফোঁটা পানি।এসময় একটা ঘটনাই ঘটে।অার তা হচ্ছে গলার রেখাটা শক্ত হয়ে অাসে।
সিনে নজরুল
আজ ২৭ অাগস্ট জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের মৃত্যুদিন। প্রিয় কবির প্রতি অসীম শ্রদ্ধা।
নজরুল আমাদের জাতীয় গর্ব, সম্পদ। তাঁর জীবনটাই বলতে গেলে চলচ্চিত্র হবার জন্য যথার্থ। কারণ, তিনি যে জীবনকে দেখেছেন তার পরতে পরতে ছিল সংগ্রাম।রুটির দোকানে কাজ করা নজরুল, লেটো গানের নজরুল, প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সৈনিক নজরুল, কবিতার বলিষ্ঠ কণ্ঠের নজরুল, প্রেম-মানবতার নজরুল, নার্গিস-প্রমীলার নজরুল, বাকশক্তি হারানো নজরুল এগুলোকে জড়ো করলে ‘চলৎ+চিত্র’ বিষয়টা অনায়াসে জীবন্ত হয়ে যায়। সেরকম মুন্সিয়ানা দেখানো নির্মাতা থাকলে নজরুলকে নিয়ে মাস্টারপিস সিনেমা হতেই পারে। Continue reading
অারেফিন শুভ ফ্যাক্ট
একুশ শতকের সিনেমা দাবি করে অাধুনিকতার। অাধুনিক হতে হতে মানুষের রুচি পুরনো থেকে বদলাতে থাকে।পুরনোকে তাই বলে অস্বীকার করতে পারে না, যদিও বা কেউ করে থাকে সেটা বেশিদিন টেকে না। গণমানুষের নায়ক হতে গেলে তাকে মানুষের কাছে পরিচিত হতে হয়। মানুষের মন জয় করতে হয়। এভাবে অনেকদূর যাবার একটা পথ নিজেকেই বানিয়ে ফেলতে হয়। একুশ শতকের ঢালিউডে ডিজিটাল সময়ের নায়ক অারেফিন শুভ দর্শকের নতুন স্বপ্ন-সম্ভাবনা-প্রত্যাশার একটা পারদে পরিণত হয়েছে। ঢালিউডে সে এখন একটা ‘ফ্যাক্ট’ যাকে ‘ফ্যাক্টর’ হতে হবে ধীরে ধীরে। যেখান থেকে শুরু হবে অন্য কারো স্বাপ্নিক অধ্যায়।
দেখা যাক কি কি অাছে সে ‘ফ্যাক্ট’-এ..
বাপ্পারাজ : একাই একশো
বিখ্যাত বাবার ছেলে হওয়ার একটা ঘোর বিপদ অাছে।ছেলেটি যা কিছু করুক না কেন লোকে বলবে অারে সে তো অমুকের ছেলে।বাপ্পারাজের ব্যাপারটাও তাই।তার নিজের জাত প্রতিভায় সে যতোই উজ্জ্বল হোক না কেন লোকে বলে ও তো নায়করাজের ছেলে।নায়করাজের সুপুত্র বাপ্পারাজ।অভিনয়ে তার জুড়ি মেলা ভার।সেদিক থেকে একটা কথাই অাসে মন থেকে ‘বাপকা বেটা বাপ্পারাজ।’ Continue reading
শিকারি : নায়কপ্রধান শিকারের অ্যাডভেঞ্চার
যৌথ সিনেমার নিয়ম নিয়ে তখন অনেক কথা হচ্ছিল।কথা না হলে সমাধান আসে না তাই কথা চলতেই থাকল। অান্দোলন হলো।পক্ষে-বিপক্ষে অনেক কথা হলো। ন্যায্য দাবি হিশেবে দর্শকের একটাই দাবি তখন, সঠিক নিয়মে যৌথ প্রযোজনা হতে হবে।শেষে শাকিব খান ঢালিউডি শীর্ষ নায়ক হিশেবে যৌথ প্রযোজনার সিনেমাতে চুক্তিবদ্ধ হওয়াতে শোরগোল পড়ল। শাকিব খানের অান্দোলন নিয়ে মিশ্র সমালোচনা অাবারও শুরু হলো তবে ভুল মানদণ্ডে বেশিরভাগ সমালোচনা হয়েছে। সত্যটা ছিল শাকিব খান অান্দোলন করেছে সঠিক যৌথ প্রযোজনার জন্য, বিপক্ষে বলেনি সেটাই অনেকের বুদ্ধিতে কুলায়নি। Continue reading
মেন্টাল : থিমে এগিয়ে টেকনিকে পিছিয়ে
এই প্রথম কোনো সিনেমার রিভিউ লিখছি যেখানে রিভিউ শুরুর অাগে সিনেমার হতাশার বিষয় নিয়ে কথা বলতে হচ্ছে। ঈদের সিনেমা ‘মেন্টাল‘ এর নির্মাণ শুরু হয়েছিল বছরদুয়েক অাগে। কিন্তু নানা জটিলতা পেরিয়ে অবশেষে মুক্তি পেল এই ঈদে।সিনেমাটি সিনেমাহলে কেমন লেগেছে বা কি অনুভূতি সেটা জানাবার অাগে সীমাবদ্ধতার কথা জানাতে হচ্ছে। সেগুলো এত অালোচনার জন্ম দিয়েছে যে ধাপে ধাপে কথা বলার অবকাশ আছে। Continue reading
সম্রাট : বাণিজ্যিক সিনেমার পাল্টে যাবার উদাহরণ
দিনরাত পাল্টে যাব, পাল্টে যাব বলে কান ভারি করে যখন দেখব চেষ্টাটা শুরু হয়েছে সেটাকে উৎসাহ দেয়াটাই কাজের কাজ হবে। ২০১৬ সালের ঈদুল ফিতর যে কারণে সিনেমাহলের জন্য শুভ এবং দর্শক ফিরতে শুরু করেছে তার অন্যতম অংশীদার ‘সম্রাট’ সিনেমা।
বাণিজ্যিক সিনেমার দিনবদল হোক এ স্বপ্ন রোজ দেখি।স্বপ্নটা একদিনে সত্যি হবে এটা স্বপ্নেও ভাবি না কারণ অাস্তে অাস্তে হলে আকারটা ভালো হবে।কেননা ‘ slow and steady wins the race’ প্রবাদটি চোখের সামনেই অাছে।ভুল হবে, পড়ে যাব, পড়ে গিয়ে অাবার উঠে দাঁড়াব এভাবে একদিন অাসবে যেদিন না পড়ে গিয়ে চলতে পারব।জানি সে দিন অাসা পর্যন্ত পথ চলতে হবে।এ পথ চলাতে ‘সম্রাট’ উদাহরণ। Continue reading
একজন অরুণা : অালোকিত অথচ উপেক্ষিত
‘অারণ্যক’ নামে বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিখ্যাত একটি উপন্যাস অাছে। উপন্যাসের নায়ক সত্যচরণ ভারতবর্ষের প্রকৃৃত বাস্তবতা অনুভবের জন্য জায়গায় জায়গায় ঘোরে। তো অাদিবাসীদের অঞ্চলে গিয়ে তার একটা বড় অভিজ্ঞতা হল যা সে ভু্লতে পারে নি। ভানুমতী নামে একটা মেয়ের সাথে সত্যচরণের কথা বলার সুযোগ ঘটে।তাকে বলে ‘ভারতবর্ষ চেনো?’ ভানু উত্তর দেয় ‘ভারতবর্ষ কোনদিকে?’ সত্যচরণের চোখ তখন কপালে। ফেরার সময় সে অঙ্ক কষে মনে মনে নিজেকে দিয়েই।ভাবে নাগরিক লোকেরা কত যে সভ্যতা এগিয়ে যাবার বড়াই করে অথচ নিজের শেকড়ে যে বড় শূন্যস্থান আছে সেটা দেখার দরকার বোধ করে না। অারো বলা যেতে পারে ‘god must be crazy’ সিনেমার কথা। এখানেও সভ্যতা একদিকে সর্বোচ্চ শিখরের উন্নতির বড়াই করে অথচ অন্যদিকে এমনই এক জংলি সভ্যতা মিলল যেখানে বিমান থেকে পড়া সামান্য কোকের বোতল দেখে ঘাবড়ে যায় লোকজন। Continue reading