অবন্তী বিশ্বাস অপু বাংলাদেশি চলচ্চিত্রের নায়িকা। অবশ্য এ নামে খুব অল্প মানুষই চিনে তাকে, সবাই চিনে অপু বিশ্বাস নামে। ২০০৫ সালে ‘কাল সকালে’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে চলচ্চিত্রাঙ্গনে আবির্ভূত হলেও পরিচিতি পান শাকিব খানের বিপরীতে ‘কোটি টাকার কাবিন’ ছবিতে অভিনয় করে। দর্শক এতটাই পছন্দ করেছিল এই জুটিতে যে – অপু বিশ্বাসের বেশিরভাগ ছবির নায়কই শাকিব খান। অবশ্য পরবর্তীতে শাকিব খানকে ঘিরে নানা আলোচনা-সমালোচনার মুখেও পড়েন তিনি।
বিএমডিবি-তে অপু বিশ্বাসের সকল সংবাদ পড়ুন এখানে
ছোটবেলা থেকেই নাচ এবং গান শিখেছেন অপু বিশ্বাস। চলচ্চিত্রে অভিনয়ের কথা ভাবেন নি, তবে মডেলিং এ আগ্রহী ছিলেন অপু বিশ্বাস। ২০০৪ সালে লাক্স এর ফটোসুন্দরী প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে সেরা দশে স্থান পেয়েছিলেন তিনি। পরবর্তীতে ‘কাল সকালে’-তে অভিনয়ের মাধ্যমে তিনি চলচ্চিত্রের রূপালী পর্দায় আত্মপ্রকাশ করেন। ‘কোটি টাকার কাবিন’ চলচ্চিত্রে তিনি নায়িকা হিসেবে আবির্ভূত হন। এ ছবিতে তার বিপরীতে ছিলেন শাকিব খান। পরবর্তীতে মুক্তিপ্রাপ্ত অর্ধশতাধিক চলচ্চিত্রের আশি/নব্বই শতাংশ ছবির নায়িকা ছিলেন অপু বিশ্বাস। অবশ্য এর পরে তিনি অন্য নায়কদের সাথে জুটি বেঁধেও অভিনয় শুরু করেন।
বেশিরভাগ ছবিতেই শাকিব খানের সাথে জুটি বেঁধে অভিনয় করার কারণে চলচ্চিত্রে কাজ শুরু করার কয়েক বছরের মধ্যেই তাদের সম্পর্ক নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়। ২০১১ সালে দুর্গাপূজার সময় অপু বিশ্বাসের বাড়িতে শাকিব খানের উপস্থিতিকে কেন্দ্র করে এ গুঞ্জন জোরদার হয়েছিল। এছাড়াও নানা রকম মুখরোচক কাহিনীর সন্ধান পাওয়া যায় এই জুটিকে কেন্দ্র করে। বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান অনলাইন পত্রিকা বাংলানিউজ২৪ একটি রিপোর্টে লিখে, ‘দীর্ঘদিন একসঙ্গে কাজ করতে করতে শাকিব খান আর অপু বিশ্বাসের মধ্যে গড়ে ওঠেছে হৃদয়ঘটিত সম্পর্ক। শাকিবের মা বিষয়টি সহজভাবে নেন নি। আপত্তি তোলেন তিনি ধর্ম নিয়ে। শাকিব তার মাকে আশ্বস্ত করেন, অপু ধর্ম পরিবর্তনে রাজি আছেন। সেই অনুযায়ী এক মধ্যরাতে অপুকে নিয়ে মিরপুর মাজারে যান শাকিব খান এবং সেখানে অপু ধর্ম পরিবর্তন করেন। শাকিব অপুকে শর্ত দিয়েছিলেন, তার বিপরীতে ছাড়া অপু কারো সঙ্গে ছবি করতে পারবেন না। অপুকে এমন শর্ত দিলেও নিজে চুটিয়ে অন্যান্য নায়িকাদের সঙ্গে কাজ চালিয়ে যান। যা অপু বিশ্বাস ভালোভাবে নেননি। তিনিও শর্ত ভেঙে অন্য নায়কদের সঙ্গে অভিনয় করা শুরু করেন।’
২০১০ এর দশকে অপু বিশ্বাস চলচ্চিত্রে বেশ অনিয়মিত হয়ে পড়েন। শাকিব খানও নতুন নায়িকাদের সাথে অভিনয় শুরু করেন। অপু বিশ্বাসও তখন চলচ্চিত্র থেকে দূরে সরে যান। পরবর্তীতে তিনি ওজন কমিয়ে ফিরে এলেও চলচ্চিত্রে নিয়মিত হন নি এবং আবারও স্বেচ্ছা নির্বাসনে যান। এ সময় শাকিব-অপু’র বিয়ে নিয়ে পত্র পত্রিকায় অনেক রিপোর্ট প্রকাশিত হয়। অপু বিশ্বাস ভারতে স্থায়ী হতে যাচ্ছেন এমন সংবাদও প্রকাশ করে গণমাধ্যমগুলো। শাকিব-অপুর সংসারে একটি সন্তান রয়েছে বলেও সংবাদ প্রকাশিত হয়। অপু বিশ্বাস দীর্ঘ দশ মাস পরে ভারত থেকে ফিরে এলেও এ ব্যাপারে সরাসরি কিছু বলেন নি।
২০১৭ সালের ১০ এপ্রিল তারিখে অপু বিশ্বাস টেলিভিশনের লাইভ সাক্ষাতকারে শিশুপুত্রকে নিয়ে হাজির হন তিনি, জানান ২০০৬ সালে শাকিব খানের সাথে বিয়ে হয়েছে তার। বিয়ের সময় নাম পরিবর্তন করে অপু ইসলাম খান রাখা হয়। ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বর মাসে তাদের পুত্র সন্তান আব্রাহাম খান জয় জন্মগ্রহণ করেন। অপুর সাক্ষাতকার প্রচারের কিছুক্ষণ পরেই শাকিব খান সন্তানের বিষয়ট স্বীকার করেন। তবে তিনি সন্তানের দায়িত্ব নেয়ার কথা বললেও অপুর দায়িত্ব নেয়ার ব্যাপারে আপত্তি জানান।
অপু বিশ্বাসের জন্ম বগুড়ায়। শৈশব এবং কৈশোর বগুড়াতেই কেটেছে। তার বাবার নাম উপেন বিশ্বাস এবং মা শেফালী বিশ্বাস। তাদের তিন মেয়ে এবং এক ছেলে – সবার ছোট অপু বিশ্বাস।