সালমান শাহ

বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে নব্বইয়ের দশকের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ও সুদর্শন নায়কের নাম সালমান শাহ (Salman Shah)। মাত্র চার বছরের চলচ্চিত্র জীবন তার। সোহানুর রহমান সোহানের হাত ধরে কেয়ামত থেকে কেয়ামত চলচ্চিত্রের মাধ্যমে চলচ্চিত্রজগতে পদার্পন করেন সালমান শাহ। প্রথম ছবিতেই জনপ্রিয়তা অর্জন করতে সক্ষম হন। তারপর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয় নি তাকে। একের পর এক ব্যবসাসফল চলচ্চিত্র উপহার দিয়ে গেছেন। Continue reading

কাজী হায়াৎ

কাজী হায়াৎ (Kazi Hayat) একাধারে একজন পরিচালক, কাহিনীকার, চিত্রনাট্যকার, প্রযোজক এবং অভিনেতা। ১৯৭৯ সালে ‘দি ফাদার’ নামের চলচ্চিত্রের মাধ্যমে পরিচালনা জীবন শুরু করেন। এর আগে পরিচালক মমতাজ আলীর সহকারী হিসেবে চলচ্চিত্রজগতে কর্মজীবন শুরু করেন। Continue reading

আমজাদ হোসেন

আমজাদ হোসেন একজন খ্যাতিমান বাংলাদেশি সাহিত্যিক, অভিনেতা এবং চলচ্চিত্র নির্মাতা। চলচ্চিত্র রচনা, অভিনয় এবং পরিচালনা – প্রত্যেক ক্ষেত্রেই তিনি সাফল্যের পরিচয় দিয়েছেন এবং বাংলাদেশের অন্যতম কিংবদন্তী চরিত্ররূপে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন।

আমজাদ হোসেনের জন্ম ১৯৪২ সালের ১৪ই আগস্ট জামালপুরে। ছেলেবেলা থেকেই তিনি লেখালেখির সাথে জড়িত হন। দেশ পত্রিকায় তার লেখা কবিতা ছাপা হয়। পঞ্চাশের দশকে তিনি পুরোদমে সাহিত্য চর্চায় মনোনিবেশ করেন। পাশাপাশি ঢাকায় মঞ্চনাটকে অভিনয় শুরু করেন। ১৯৬১ সালে ‘তোমার আমার’ চলচ্চিত্রে দিয়ে তিনি চলচ্চিত্রে অভিনয় শুরু করেন এবং একই বছর ‘হারানো দিন’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন।

১৯৬৩ সালে তার লেখা নাটক অবলম্বনে পরিচালক সালাহ্‌উদ্দিন নির্মাণ করেন ‘ধারাপাত’ (১৯৬৩)। এটি তার রচিত প্রথম চলচ্চিত্র এবং এতে তিনি একটি প্রধান চরিত্রে অভিনয়ও করেন। এই সময়ে তিনি নন্দিত পরিচালক জহির রায়হানের সহকারী হিসেবে বেশ কয়েকটি চলচ্চিত্রে কাজ করেন। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল ‘বেহুলা’ ও ‘আনোয়ারা’ (১৯৬৭)।

১৯৬৭ সালে তিনি নুরুল হক বাচ্চুর সাথে যৌথভাবে নির্মাণ করেন ‘আগুন নিয়ে খেলা’ (১৯৬৭)। একক পরিচালক হিসেবে তিনি আত্মপ্রকাশ করেন ‘জুলেখা’ (১৯৬৭) ছবি দিয়ে। এরপর তিনি নুরুল হক বাচ্চু, রহিম নওয়াজ ও মুস্তফা মেহমুদের সাথে যৌথভাবে ‘দুই ভাই’ (১৯৬৮) এবং এককভাবে ‘বাল্যবন্ধু’ (১৯৬৮) ও ‘পিতা পুত্র’ (১৯৭০) চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন।

আমজাদ হোসেন ইশকেমিক স্ট্রোকে আক্রান্ত হলে তাকে ঢাকার ইমপালস হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার অবস্থার অবনতি হলে উচ্চ চিকিৎসার জন্য সরকারী অনুদানে তাকে দেশের বাইরে পাঠানো হয়। ২০১৮ সালে ১৪ই ডিসেম্বর ৭৬ বছর বয়সে ব্যাংককে মৃত্যুবরণ করেন।

জহির রায়হান

প্রতিবাদী সাহিত্য চর্চা করতে করেতই একসময় চলচ্চিত্রকে মাধ্যম হিসেবে বেছে নেন প্রয়াত চলচ্চিত্রকার জহির রায়হান। পরবর্তীতে চলচ্চিত্রই তার ধ্যান-জ্ঞান হয়ে ওঠে। ১৯৩৫ সালের ৫ আগস্ট (বিভিন্ন জায়গায় তার জন্ম তারিখ উল্লেখ করা হয়েছে ১৯ আগস্ট, কিন্তু তার বোন দাবি করেছেন জহির রায়হানের জন্ম তারিখ ৫ আগস্ট) তৎকালীন নোয়াখালি জেলার ফেনী মহকুমার অর্ন্তগত মজুপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। Continue reading

সুচন্দা

সুভাষ দত্তের ‘কাগজের নৌকা’ (১৯৬৬) ছবিতে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে অভিনয় জীবন শুরু করেন সুচন্দা। পরের বছর ‘বেহুলা’ (১৯৬৭) ছবিতে তিনি রাজ্জাকের সাথে জুটি গড়েন। এটি ছিল রাজ্জাকের নায়ক হিসেবে প্রথম ছবি। পরবর্তীকালে আনোয়ারা (১৯৬৭), দুই ভাই (১৯৬৮), সুয়োরানী দুয়োরানী (১৯৬৮), কুচবরণ কন্যা (১৯৬৮), মনের মত বউ (১৯৬৯), সখিনা (১৯৬৯), জুলেখা (১৯৬৮), যোগ বিয়োগ (১৯৭০), যে আগুনে পুড়ি (১৯৭০), সংসার (১৯৬৮), প্রতিশোধ (১৯৭২), জীবন সংগীত (১৯৭২), অশ্র“ দিয়ে লেখা (১৯৭২) এই জুটির দর্শকনন্দিত সিনেমা। রাজ্জাক ছাড়া অন্য নায়ক গোলাম মুস্তাফা (চাওয়া পাওয়া, ১৯৬৭); আনোয়ার হোসেন (কোথায় যেন দেখেছি, ১৯৭০); মান্নান (পরশমনি, ১৯৬৮); আজিম (নয়নতারা, ১৯৬৭); উজ্জল (কাঁচের স্বর্গ, ১৯৭২) প্রমুখের বিপরীতেও তিনি সফল। রহমানের বিপরীতে উর্দু ছবি যাহাবাজ শেহনাই (১৯৭০), পিয়াসা (১৯৬৮) এবং বাংলা অন্তরঙ্গ (১৯৭০) ছবির নায়িকা ছিলেন তিনি।

‘বেহুলা’ ছবিতে কাজ করতে গিয়ে পরিচালক জহিরের সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। কোন আনুষ্ঠানিকতা ছাড়া তাড়াহুড়া করে বিয়ে করেন তারা। সুচন্দারা তিন বোন, বাকি দুজন হলেন ববিতা ও চম্পা।

ববিতা

বাংলাদেশি চলচ্চিত্রের ডাগর-চোখের অসাধারণ সুন্দরী প্রতিভাবান অভিনেত্রী ববিতা। অভিনয়ের যোগ্যতায় তিনি বাংলাদেশের সীমানা পেরিয়ে অভিনয় করেছেন ভারতীয় চলচ্চিত্রে, অভিনয় করেছেন অস্কারজয়ী বিখ্যাত বাঙ্গালী চলচ্চিত্র পরিচালক সত্যজিৎ রায়ের সাথে। Continue reading

এটিএম শামসুজ্জামান

এটিএম শামসুজ্জামানের (ATM Shamsuzzaman) পরিচয় একাধিক। তিনি একজন কাহিনীকার, সংলাপ রচয়িতা, চিত্রনাট্যকার, চলচ্চিত্র পরিচালক এবং অভিনেতা। সহকারী পরিচালক হিসেবে যাত্রা শুরু করে লেখক হিসেবে সুনাম অর্জন শেষে অভিনয়ে থিতু হন এটিএম শামসুজ্জামান, চলচ্চিত্র নির্মান কাজেও নিজেকে যুক্ত করেছেন বছর কয়েক আগে। Continue reading

ফারুক

বাংলা চলচ্চিত্রে গ্রামীন চরিত্রের অপ্রতিদ্বন্দ্বী নায়ক মিয়াভাই নামে পরিচিত অভিনেতার নাম ফারুক (Faruk)। ১৯৭১ সালে এইচ আকবর পরিচালিত জলছবি চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে চলচ্চিত্রে প্রবেশ করেন ফারুক। উল্লেখ্য, অভিনেতা এটিএম শামসুজ্জামান এই ছবির মাধ্যমে প্রথমবারের মত চিত্রনাট্য লিখেন। Continue reading

কবরী

বাংলা চলচ্চিত্রের মিষ্টি মেয়ে খ্যাত কবরী সুভাষ দত্ত পরিচালিত ‘সুতরাং‘ ছবিতে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে চলচ্চিত্রে আগমন করেন। পরবর্তীকালে তিনি শতাধিক চলচ্চিত্রে মূল নায়িকা হিসেবে অভিনয় করেছেন। ১৯৬০-এর দশকের শেষের দিক থেকে চিত্রনায়ক রাজ্জাকের সাথে তার জুটি জনপ্রিয়তা অর্জন করে। এই জুটি ‘আবির্ভাব‘, ও ‘বাঁশরী‘ (১৯৬৮); ‘ময়নামতি‘, ও ‘নীল আকাশের নীচে‘ (১৯৬৯);  ‘যে আগুনে পুড়ি‘, ‘ক খ গ ঘ ঙ‘, ‘কাঁচ কাটা হীরে‘, ও ‘দীপ নেভে নাই‘ (১৯৭০); ‘স্মৃতিটুকু থাক‘ (১৯৭১); ‘রংবাজ‘ (১৯৭৩); ‘গুন্ডা‘ (১৯৭৬) সহ অসংখ্য জনপ্রিয় চলচ্চিত্র উপহার দেয়।

তিনি জহির রায়হানের তৈরি উর্দু ছবি ‘বাহানা’ এবং ভারতের চলচ্চিত্র নির্মাতা ঋত্বিক ঘটকের ‘তিতাস একটি নদীর নাম’ ছবিতেও অভিনয় করেন৷ অন্যান্য চিত্রনায়কদের বিপরীতে তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রগুলো হল আজিমের সাথে লোককাহিনিধর্মী ‘সাত ভাই চম্পা‘, ‘অরুণ বরুণ কিরণমালা‘ (১৯৬৮), ও ‘পারুলের সংসার‘ (১৯৬৯); উজ্জ্বলের সাথে ‘বিনিময়‘ (১৯৭০), ও ‘বলাকা মন‘ (১৯৭৩); ফারুকের বিপরীতে ‘সুজন সখী‘ (১৯৭৫)।

১৯৭৮ সালে আব্দুল্লাহ আল মামুনেরসারেং বৌ‘ ছবিতে অভিনয় করে তিনি শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে তার একমাত্র জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান। এছাড়া ২০১৩ সালে তাকে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের আজীবন সম্মাননা প্রদান করা হয়।

কবরীর জন্ম ১৯৫২ সালের ১৯ জুলাই চট্রগ্রামে। তার প্রকৃত নাম মীনা পাল। পিতা শ্রীকৃষ্ণ দাস পাল এবং মা শ্রীমতী লাবণ্যপ্রভা পাল। তিনি ২০২১ সালের ১৭ এপ্রিল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন।

নূতন

বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে প্রায় সাড়ে তিন শতাধিক চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় অভিনেত্রী নূতন। শৈশবে গান দিয়ে সাংস্কৃতিক কার্যক্রমের সাথে যুক্ত হলেও পরবর্তীতে নৃত্য এবং মঞ্চ অভিনয়ের মাধ্যমে চলচ্চিত্রে অভিনয় শুরু করেন নূতন। প্রথম ছবিতেই তিনি সফলতা লাভ করেন। ১৯৭০ সালে তার প্রথম চলচ্চিত্র মুক্তি পায় এবং তিনি এখনো অভিনয় করে যাচ্ছেন। নূতনের আরেকটি পরিচয় হল তিনি একজন সফল চলচ্চিত্র প্রযোজক। Continue reading