শাবনূর

পরিচালক এহতেশাম এর হাত ধরে ‘চাঁদনি রাতে’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে চলচ্চিত্র জগতে যাত্রা শুরু করেন শাবনূর (Shabnur). প্রায় একই সময়ে যাত্রা শুরু করা সালমান শাহ‘র সাথে জুটিবন্ধ হয়ে একের পর এক ব্যবসাসফল ছবি উপহার দেন শাবনূর। সালমান শাহ’র মৃত্যুর পরেও তার সেই অগ্রযাত্রা বন্ধ হয় নি। মান্নারিয়াজ, শাকিল, ফেরদৌস সহ বিভিন্ন নায়কের সাথে জুটি বেধে সফল ছবি উপহার দিয়েছেন শাবনূর। চলচ্চিত্রে অভিনয় করে একবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, তিনবার বাচসাস পুরস্কার এবং রেকর্ড সংখ্যক ১০বার মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার জয় করেছেন।  Continue reading

আবুল হায়াত

আবুল হায়াত একজন অভিনেতা, নাট্যকার, নাট্য পরিচালক এবং প্রকৌশলী। এক হাজারেরও বেশী টিভি নাটকে অভিনয় করেছেন তিনি। তিনি মঞ্চ, রেডিও, টেলিভিশন এবং চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন।

মাত্র দশ বছর বয়সে প্রথম নাটকে অভিনয় করেন আবুল হায়াত – টিপু সুলতান নাটকে অভিনয়ের মাধ্যমে অভিনয় শুরু করেন। আরও আগে থেকেই রেলওয়ে কর্মকর্তা বাবার কারণে নিয়মিত মঞ্চ নাটক দেখার অভিজ্ঞতা অর্জন করেছিলেন তিনি। ১৯৬৮ সাল থেকে নিয়মিত টেলিভিশনে অভিনয় করে যাচ্ছেন আবুল হায়াত। তখন মাত্র ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করেছেন তিনি, ঢাকায় মেসে থাকতেন। এসময় তিনি জানতে পারেন নাগরিক নাট্য সম্প্রদায় গ্রুপ থিয়েটারের একটি নাটক তৈরী হবে যা টেলিভিশনে দেখানো হবে। আমেরিকা থেকে নাটকের উপর মাস্টার্স করে আসা জিয়া হায়দার সেই নাটকের নির্দেশনা দেবেন। নাটকের নাম ইডিপাস। এর মাধ্যমেই টেলিভিশনে নাটকের যাত্রা শুরু করেন আবুল হায়াত।

চলচ্চিত্রে অভিনয়ের প্রতি খুব বেশী মনযোগ দেন নি বলেই চলচ্চিত্রে সফল হন নি – এমনটা মনে করেন আবুল হায়াত। ১৯৭২ সালে ঋত্বিক কুমার ঘটকের ‘তিতাস একটি নদীর নাম’-এ অভিনয়ের মাধ্যমে তিনি চলচ্চিত্রে আগমন করেন। সাধারণত ভিন্ন ধারার চলচ্চিত্রে অভিনয় করতেন। ১৯৮৭ সালে প্রথম বাণিজ্যিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন।

আবুল হায়াত অভিনয়ের পাশাপাশি মাঝে মাঝে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় কলাম লিখে থাকেন। দৈনিক প্রথম আলো-তে তার কলামের নাম ‘এসো নীপবনে’। ১৯৯১ সালে তার প্রথম উপন্যাস প্রকাশিত হয় যার নাম ‘আপ্লুত মরু’। তার প্রকাশিত গ্রন্হের মধ্যে রয়েছে নির্ঝর সন্নিকটে, এসো নীপবনে (তিন খন্ড), জীবন খাতার ফুটনোট (২পর্ব), অচেনা তারা, হাঁসুলি বেগমের উপকথা, মধ্যাহ্নভোজ কি হবে ?, জিম্মি ইত্যাদি।

আবুল হায়াতের পূর্বপুরুষের বাসস্থান মুর্শিদাবাদে। ১৯৪৭ সালে তার পরিবার এদেশে চলে আসে। আবুল হায়াতের জন্ম মুর্শিদাবাদে হলেও শৈশব, কৈশোর এবং যৌবনের কিয়দাংশ কেটেছে চট্টগ্রামে। আবুল হায়াতের বাবা আব্দুস সালাম ছিলেন চট্টগ্রাম রেলওয়ে ওয়াজিউল্লাহ ইন্সটিটিউটের সাধারন সম্পাদক। স্কুল জীবন কাটে চট্টগ্রাম কলেজিয়েট ও রেলওয়ে উচ্চ বিদ্যালয়ে। সেখান থেকে মেটৃকুলেশন (বর্তমান এসএসসি) পাস করে চট্টগ্রাম কলেজে ভর্তি হন। চট্টগ্রাম কলেজ থেকে আইএসসি পাস করে ১৯৬২ সালে বুয়েটে ভর্তি হন। বুয়েটে পড়ার সময় তিনি শেরেবাংলা হলে থাকতেন। এরপর বুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্ট থেকে ১৯৬৭ সালে পাস করে ১৯৬৮ সালেই ঢাকা ওয়াসার প্রকৌশলী পদে যোগ দেন।

প্রকৌশলী হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু করলেও তার ধ্যান জ্ঞান ছিল অভিনয়ে। মূলত অর্থনৈতিক কারণেই প্রকৌশলী হিসেবে পেশাগত জীবন শুরু করেন তিনি। এরপর তিনি ১৯৭৮ সালে লিবিয়ায় তিন বছর চাকুরী করেন। ফিরে এসে ১৯৮২ সালে সরকারী চাকুরী থেকে পদত্যাগ করেন এবং কনসালটেন্ট হিসেবে চাকুরী করেন।

১৯৭০ সালে আবুল হায়াতের সঙ্গে বিয়ে হয় তার মেজ বোনের ননদ মাহফুজা খাতুন শিরিনের। বিপাশা হায়াত ও নাতাশা হায়াত তার দুই কন্যা এবং তৌকির আহমেদ ও শাহেদ শরীফ খান তার দুই জামাতা।

ছবিসূত্র: সাদেক সামি

সুবর্ণা মুস্তাফা

সুবর্ণা মুস্তাফা নিয়মিত গড়পড়তা চলচ্চিত্রে অভিনয় করেননি। কিছু জীবন ঘনিষ্ঠ চলচ্চিত্রে তিনি অভিনয় করেছেন। তবে মূলধারার কিছু ছবিতেও তাঁর উপস্থিতি লক্ষ্যণীয়। অনেকের মতে চেহারায় বাঙালি রমনীর শাশ্বত সৌন্দর্যের মৌন রূপ স্পষ্ট এবং স্মিত যৌন আবেদন ও রহস্যময় ঘরানার সৌন্দর্য তার সামগ্রিক সৌন্দর্যকে প্রায় ক্ল্যাসিক রূপ দিয়েছে। আবার অনেকে মতে টিভি পর্দায় তিনি যতটা ভরাট, আকর্ষণীয়, চলচ্চিত্রের পর্দায় তিনি অতটা নন।

১৯৮০ সালে সৈয়দ সালাউদ্দিন জাকী পরিচালিত ‘ঘুড্ডি’ দিয়ে তিনি চলচ্চিত্র জগতে আসেন। ১৯৮৩ সালে ‘নতুন বউ’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করে তিনি শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেত্রী হিসেবে জাতীয় পুরস্কার পান। পরের বছর ‘নয়নের আলো’ ছবিতে তার অভিনয় সব শ্রেণীর দর্শককে নাড়া দিয়েছিল।

সুবর্ণা মুস্তাফার জন্ম ১৯৫৯ সালের ২রা ডিসেম্বর ঢাকায়। তার বাবা গুণী অভিনেতা গোলাম মুস্তাফা। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে থেকে ইংরেজী বিভাগে স্নাতক সম্পন্ন করেন। বিবাহিত জীবনে তিনি প্রথমে অভিনেতা হুমায়ূন ফরীদিকে বিয়ে করেন। ২০০৮ সালে তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ হয় এবং পরে তিনি নাট্য ও চলচ্চিত্র নির্মাতা বদরুল আনাম সৌদকে বিয়ে করেন।

গোলাম মুস্তাফা

গোলাম মুস্তাফা একজন প্রখ্যাত চলচ্চিত্র অভিনেতা ও আবৃত্তিকার। মঞ্চে, বেতারে, টিভিতে সমানভাবে জনপ্রিয় ছিলেন। ১৯৬০ সালে ‘রাজধানীর বুকে’ ছবিতে জমিদারের ভূমিকায় প্রথম অভিনয় করেন। প্রথম ছবি থেকেই তিনি নানা চরিত্রের শক্তিমান অভিনেতা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। প্রায় দুই শতাধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছিলেন তিনি। টেলিভিশনেও ছিল তাঁর দাপুটে পদচারণ। চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য পেয়েছেন তিনটি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, ও একাধিক বাচসাস পুরস্কার এবং একুশে পদকে ভূষিত হয়েছেন।

তার জন্ম ১৯৩৫ সালের ২ মার্চ বরিশালের নলছিটির দপদপিয়া গ্রামে। গোলাম মুস্তাফার স্ত্রী অভিনেত্রী হোসনে আরা। তাদের দুই মেয়ে – অভিনেত্রী সুবর্ণা মুস্তাফা ও ক্যামেলিয়া মুস্তাফা। তার জামাতা হুমায়ুন ফরীদিও কিংবদন্তি অভিনেতা। ২০০৩ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি তিনি ঢাকায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

সম্রাট

২০০৮ সালে আমি বাঁচতে চাই চলচ্চিত্রের মাধ্যমে চলচ্চিত্রে আত্মপ্রকাশ করেন নায়করাজ রাজ্জাকের ছেলে এবং বাপ্পারাজের ভাই সম্রাট।

তার শিক্ষাগত যোগ্যতা কম্পিউটার সায়েন্সে বিএ।

বাপ্পারাজ

১৯৮৬ সালে রাজ্জাকের পরিচালনায় ‘চাঁপাডাঙার বউ’ ছবি মাধ্যমে সিনেমায় আসেন বাপ্পারাজ।

শাবানা

বাংলাদেশী চলচ্চিত্রে কিংবদন্তী অভিনেত্রীর নাম শাবানা (Shabana)। মাত্র নয় বছর বয়সে চলচ্চিত্রে অভিনয় শুরু করেছিলেন, দাপটের সাথে অভিনয় চালিয়ে গেছেন দীর্ঘদিন, তারপর হঠাৎ করেই চলচ্চিত্রকেই শুধু বিদায় জানাননি, জীবনযাত্রায় আমূল পরিবর্তন এনে দেশ থেকে বিদায় নিয়ে স্বামী সন্তানসহ প্রবাসী হয়েছেন। বর্তমানে অভিনেত্রী শাবানা সজীব হয়ে আছেন সিনেমার দর্শকদের মনে, ব্যক্তি শাবানা স্বেচ্ছা নির্বাসনে আছেন। Continue reading

শবনম

পাকিস্তান এবং বাংলাদেশের একসময়কার জনপ্রিয় অভিনেত্রী শবনম। বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের প্রায় শুরু থেকেই তিনি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। অবশ্য পরবর্তীতে তিনি উর্দু চলচ্চিত্রে সফলতা লাভ করেন এবং পাকিস্তানের ছবিতে অভিনয় করেন। আশির দশকের শেষভাগে তিনি পুনরায় বাংলা চলচ্চিত্রে অভিনয় করতে শুরু করেন। কাজী হায়াৎ পরিচালিত আম্মাজান চলচ্চিত্রে আম্মা চরিত্রে অভিনয়ের জন্য তিনি সুখ্যাতি অর্জন করেন। Continue reading

বুলবুল আহমেদ

বাংলা চলচ্চিত্রের মহানায়ক খ্যাত বুলবুল আহমেদ ১৯৭৩ সালে ‘ইয়ে করে বিয়ে’ দিয়ে চলচ্চিত্রাঙ্গনে যাত্রা শুরু করেন। এই চলচ্চিত্রের পরিচালক আবদুল্লাহ ইউসুফ ইমাম তার নাম রাখলেন ‘বুলবুল’। তিনি স্মরণীয় হয়ে থাকবেন সীমানা পেরিয়ে, দেবদাস, রূপালী সৈকত, মহানায়ক এবং জীবন নিয়ে জুয়া ছবির জন্য।

তাঁর অন্যান্য উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র হল — ‘পুরস্কার’, ‘সোহাগ’, ‘বৌরানী’, ‘ঘর সংসার’, ‘বধূ বিদায়’, ‘ছোট মা’, ‘আরাধনা’, ‘সঙ্গিনী’, ‘সময় কথা বলে’, ‘স্মৃতি তুমি বেদনা’, ‘শেষ উত্তর’, ‘স্বামী’, ‘ওয়াদা’, ‘গাঙচিল’, ‘কলমিলতা’, ‘জন্ম থেকে জ্বলছি’, ‘ভালো মানুষ’, ‘বদনাম’, ‘দুই জীবন’, ‘দিপু নাম্বার টু’, ‘ফেরারি বসন্ত’, ‘দ্য ফাদার’, ‘রাজলক্ষ্মী-শ্রীকান্ত’ প্রভৃতি। তার অভিনীত সর্বশেষ চলচ্চিত্র ‘পরম প্রিয়’।

অভিনয়ের জন্য বুলবুল আহমেদ তিনবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেছেন। ১৯৭৭ সালে ‘সীমানা পেরিয়ে’, ১৯৭৮ সালে ‘বধূ বিদায়’, ও ১৯৮০ সালে ‘শেষ উত্তর’ ছবির জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন।

বুলবুল আহমেদের জন্ম ১৯৪১ সালে পুরান ঢাকার আগামসিহ লেনে। তাঁর প্রকৃত নাম তাবারক আহমেদ। বাবা-মা আদর করে ডাকতেন ‘বুলবুল’। বাবা মায়ের আট সন্তানের মধ্যে তিনি ছিলেন অষ্টম।

বুলবুল আহমেদের স্ত্রী ডেইজি আহমেদ। এই দম্পতির তিন সন্তানেরা হলেন – মেয়ে ঐন্দ্রিলা ও তিলোত্তমা এবং ছেলে শুভ।

জনপ্রিয় এই তারকা ২০১০ সালের ১৪ জুলাই হার্ট অ্যাটাকের পর তাকে ঢাকার একটি হাসপাতালে নেয়ার পর ইন্তেকাল করেন। ৭১ বছর বয়সী বুলবুল আহমেদ দীর্ঘদিন ধরে হৃদরোগ এবং উচ্চ রক্তচাপে ভুগছিলেন।

ফেরদৌস আহমেদ

জনপ্রিয় চলচ্চিত্র অভিনেতা সালমান শাহ’র মৃত্যুর পর ‘বুকের ভেতর আগুন’ ছবিতে তার স্থলাভিষিক্ত হয়ে চলচ্চিত্রে যাত্রা শুরু করেন ফেরদৌস আহমেদ (Ferdous Ahmed)। তিনি চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারসহ আরও অনেকগুলো পুরস্কার জিতেছেন, দেশে বিদেশে সম্মান কুড়িয়েছেন।

সালমান শাহের অকাল প্রয়ানে চলমান বেশ কিছু চলচ্চিত্রের কাজ বন্ধ হয়ে যায়। এর মধ্যে একটি ছিল ছটকু আহমেদ পরিচালিত ‘বুকের ভেতর আগুন’ চলচ্চিত্রটি। গল্পে কিছুটা পরিবর্তন করে অসমাপ্ত কাজ শেষ করার উদ্যোগ নেন ছটকু আহমেদ আর এভাবেই ফেরদৌস চলচ্চিত্রাঙ্গনে পরিচিত হয়ে ওঠেন। একক নায়ক হিসেবে ফেরদৌসের যাত্রা শুরু হয় অঞ্জন চৌধুরী পরিচালিত ‘পৃথিবী আমারে চায় না’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে। নৃত্য পরিচালক আমির হোসেন বাবুর হাত ধরে চলচ্চিত্র জগতে এসেছিলেন তিনি। আমির হোসেন বাবু পরিকল্পনা করেছিলেন নৃতবিষয়ক একটি চলচ্চিত্র পরিচালনা করবেন। ছবির নাম হবে ‘নাচ ময়ূরী নাচ’। ছবিতে নায়ক চরিত্রে অভিনয়ের জন্য তিনি ফেরদৌসকে নির্বাচন করেছিলেন, কিন্তু চলচ্চিত্রটি নির্মান করা হয়ে উঠে নি।

বাসু চ্যাটার্জীর ‘হঠাৎ বৃষ্টি’ ছবি দিয়ে ফেরদৌস জনপ্রিয়তা ও পরিচিতি অর্জন করেন। এরপর তিনি মৌসুমী, শাবনূর, পপি, পূর্ণিমা-সহ সকল শীর্ষস্থানীয় চিত্রনায়িকার সাথে কাজ করেন। চলচ্চিত্রে অভিনয়ে দেশের গন্ডি পেরিয়ে কলকাতার চলচ্চিত্রে অভিনয় করে জনপ্রিয়তা অর্জন করেন তিনি। বলিউডের একটি চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেছেন ফেরদৌস, ছবির নাম ‘মিট্টি’।

চলচ্চিত্রে অভিনয়ের আগে ফেরদৌস একজন র‌্যাম্প মডেল হিসেবে কাজ শুরু করেছিলেন। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ফ্যাশন ডিজাইনার বিবি রাসেলের হাত ধরে র‌্যাম্প জগতে যাত্রা শুরু করেন ফেরদৌস। নব্বইয়ের দশকের শুরুতে বেশ কিছু বড় ফ্যাশন শো’র র‌্যাম্পিং এ অংশ নিয়েছিলেন ফেরদৌস। বর্তমানে চলচ্চিত্রের পাশাপাশি বিজ্ঞাপনের মডেল হিসেবেও কাজ করছেন তিনি।

অভিনয়ের মাধ্যমে চলচ্চিত্রে যাত্রা শুরু করলেও ফেরদৌস বর্তমানে ছবি প্রযোজনাও করছেন। তার প্রতিষ্ঠান ‘সিনেমা স্কোপ’ এর প্রযোজনায় দুটি চলচ্চিত্র নির্মিত। এদের একটি বাসু চ্যাটার্জীর পরিচালনায় ‘হঠাৎ সেদিন’ (২০১৩) এবং অন্যটি ইমতিয়াজ নেয়ামুলের পরিচালনায় ‘এক কাপ চা’ (২০১৪)। উল্লেখ্য, বাসু চ্যাটার্জী পরিচালিত ‘হঠাৎ বৃষ্টি’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করেই ফেরদৌস কলকাতা জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। দুই বাংলায় জনপ্রিয়তা অর্জন করা প্রসঙ্গে বাংলামেইলের এক প্রশ্নের জবাবে ফেরদৌস নিজেকে সৌভাগ্যবান দাবী করেন এবং জানান, জন্মভূমির প্রতিই তার বেশী টান, তবে তিনি দুই বাংলায়ই জনপ্রিয়তা ধরে রাখতে চান।

২০১২ সালের জানুয়ারী মাসে বাংলানিউজ২৪ এর সাথে এক সাক্ষাতকারে ফেরদৌস জানান কুয়াকাটা এবং সেন্টমার্টিনে তিনি দুটি রিসোর্ট গড়ে তোলার কাজ শুরু করেছেন। সেন্টমার্টিনের রিসোর্টটি প্রখ্যাত উপন্যাসিক হুমায়ূন আহমেদের সাথে মিলে তার মালিকানাধীন জমিতে তৈরী। একই সাক্ষাতকারে ফেরদৌস জানান হলিউড অভিনেত্রী অ্যাঞ্জেলিনা জোলি তার প্রিয় অভিনেত্রী এবং তার সাথে একবার অভিনয় করার সুযোগ পেলে তিনি ধন্য হতেন।

ফেরদৌসের ব্যক্তিগত লাইফস্টাইল সম্পর্কে জানা যায় অজানা সব তথ্য। যেমন পোশাক আশাকের ক্ষেত্রে ট্রু রিলিজিওন, ডি অ্যান্ড জি, আরমানি, এক্সপ্রেশনস ও স্পাইকার ব্র্যান্ডের জিনস তার পছন্দ। আর আরমানি, গুচির সাধারণ নকশার রংচটা ধরনের টি-শার্ট সব সময় পরেন। ভাসাভি, নাবিলা, মান্যবর বা মানিশ মালহোত্রার বিশেষ নকশার পাঞ্জাবি যেমন পরেন, আবার পরিবেশ বুঝে সুতি বা খদ্দরের পাঞ্জাবিও পরে থাকেন। ফরমাল অনুষ্ঠানে প্রিন্স কোট বেছে নিচ্ছেন কিছুদিন ধরে। বাংলাদেশে সানমুনের দূত তিনি। সানমুনের বাইরে আরমানি ও গুচির স্যুট-কোট পরেন। ফেরদৌসের রামিম রাজ নামের একজন নিজস্ব ডিজাইনার আছেন। ব্র্যান্ডের বাইরে বেশির ভাগ পোশাকের নকশা তিনি করে থাকেন। নাইকি, রিবোক ও অ্যাডিডাসের রং-বেরঙের স্নিকারস পরতে ভালোবাসেন। নটিকা, ইসে মিয়াকে, গুচি ও ব্ল্যাক ব্র্যান্ডের সুগন্ধি ঘুরে-ফিরে ব্যবহার করেন।

পারিবারিক জীবনে বিবাহিত ফেরদৌসের স্ত্রী তানিয়া ফেরদৌস একজন বৈমানিক। পুত্র নুজহাত ফেরদৌস এবং কন্যা নুজরান ফেরদৌসকে নিয়ে তাদের সুখের সংসার।