পাকিস্তান এবং বাংলাদেশের একসময়কার জনপ্রিয় অভিনেত্রী শবনম। বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের প্রায় শুরু থেকেই তিনি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। অবশ্য পরবর্তীতে তিনি উর্দু চলচ্চিত্রে সফলতা লাভ করেন এবং পাকিস্তানের ছবিতে অভিনয় করেন। আশির দশকের শেষভাগে তিনি পুনরায় বাংলা চলচ্চিত্রে অভিনয় করতে শুরু করেন। কাজী হায়াৎ পরিচালিত আম্মাজান চলচ্চিত্রে আম্মা চরিত্রে অভিনয়ের জন্য তিনি সুখ্যাতি অর্জন করেন।
শৈশবেই বুলবুল ললিতকলা একাডেমিতে নাচ শিখেছিলেন শবনম। একজন নৃত্যশিল্পী হিসেবে তিনি সুপরিচিতি লাভ করেন। সেখানেই একটি নৃত্যের অনুষ্ঠানে এহতেশাম তার নাচ দেখে এদেশ তোমার আমার চলচ্চিত্রের নৃত্যে অভিনয়ের সুযোগ করে দেন। তিনি আরও কিছু ছবিতে অতিরিক্ত শিল্পী হিসেবে অভিনয় করেন। কিন্তু এহতেশামের পাশাপাশি পরিচালক মুস্তাফিজের নজর কাড়তে সক্ষম হন অতিরিক্ত শিল্পী হিসেবে অভিনয় করেই। মুস্তাফিজ পরিচালিত ‘হারানো দিন‘ ছবিতে অভিনয়ের মাধ্যমে ১৯৬১ সালে নায়িকা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন শবনম। এ ছবিতেই তিনি শবনম নাম ধারন করেন।
এরপর শবনম উর্দু এবং বাংলা দু ধরনের চলচ্চিত্রেই অভিনয় করতে থাকেন। ১৯৬২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র চান্দায় অভিনয় করে তিনি পাকিস্তানজুড়ে খ্যাতি অর্জন করতে সক্ষম হন। এ ছবিতে অভিনয়ের জন্য তিনি পাকিস্তানের নিগার পুরষ্কারও লাভ করেন। উর্দু ছবিতে সফলতার কারণে শবনম পাকিস্তানেই স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। অবশ্য পরবর্তীতে তিনি আশি’র দশকে বাংলাদেশি চলচ্চিত্রে অভিনয় করতে শুরু করেন। পাকিস্তানের অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেত্রী হিসেবে শবনম স্থায়ী আসন লাভ করেছেন। তার অভিনয় প্রতিভার স্বাক্ষর রেখে শবনম মোট বারোবার নিগার পুরস্কার এবং তিনবার পাকিস্তান জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করতে সক্ষম হন।
শবনমের জন্ম ১৯৪৬ সালের ১৭ আগস্ট। তার বাবা ননী বসাক ছিলেন ঢাকার খ্যাতনামা ফুটবল রেফারী। ব্যক্তিগত জীবনে শবনম ১৯৬৫ সালের ২১ ডিসেম্বর তারিখে বিয়ে করেন সুরকার ও সঙ্গীত পরিচালক রবীন ঘোষকে। ২০১৬ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারী তারিখে গুলশানের নিজ বাসভবনে বার্ধ্যক্যজনিত কারণে মৃত্যুবরণ করেন রবীন ঘোষ। তাদের সংসারে একটি পুত্র সন্তান রয়েছে, নাম রনি ঘোষ। এছাড়া শবনমের বড় বোন নন্দিতা দাস কলকাতায় বসবাস করছেন।