মোস্তফা সরয়ার ফারুকী

মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বাংলাদেশের একজন স্বনামধন্য বিজ্ঞাপন, টিভি নাটক ও চলচ্চিত্র নির্মাতা – প্রযোজক, চিত্রনাট্যকার এবং পরিচালক। ব্যাচেলর চলচ্চিত্রের মাধ্যমে চলচ্চিত্রাঙ্গনে যাত্রা শুরু করলেও নির্মানের সাথে তিনি জড়িত বহুবছর ধরে। মূলত টিভি নাটক পরিচালনার মাধ্যমে তিনি নির্মান কাজ শুরু করেন।

মোস্তফা সরয়ার ফারুকী সবসময় সিনেমা নির্মান করতে চেয়েছেন। সিনেমা বানাতে পারেন নি বলে টিভির জন্য নাটক বানিয়েছেন। তার এই ছবি নির্মানের আগ্রহ তৈরী হয় ১৯৯৩-৯৪ সালের দিকে বিভিন্ন ফিল্ম সোসাইটিতে বন্ধুদের সাথে মিলে দেখা ফিল্মের কারণে। কোন নির্দিষ্ট চলচ্চিত্র তাকে ছবি বানানোর ব্যাপারে উৎসাহিত না করলেও মাজিদ মাজেদি, ওজু, ফেদরিকো ফেলিনি, তারকাভস্কি প্রভৃতি নির্মাতা তাকে চলচ্চিত্র নির্মানে অনুপ্রাণিত করেছে, এমনটা জানা যায়।

ফারুকী পরিচালিত প্রথম নাটক ‘ওয়েটিং রুম’ ১৯৯৯ সালে প্রচারিত হয়। নাটকটি ইটিভিতে প্রচারিত হয়। প্রথম এই নাটকটি ইটিভিতে জমা দেয়ার পর তাকে জানানো হয়েছিল নাটকটি মনোনীত হয়নি, বাতিল হয়ে গেছে। ফারুকী ভেবেছিলেন পরিচালক হিসেবে সেখানেই তার ইতি, কিন্তু ইটিভি কর্তৃপক্ষ পরবর্তীতে আবার নাটকটি দেখে এবং প্রচারের উদ্যোগ নেয়।

সাহিত্যিক আনিসুল হকের সাথে জুটি বেঁধে তিনি বেশ কিছু নাটক নির্মান করেন। আনিসুল হক এর কাহিনী অবলম্বনে তার নির্মিত এ নাটকগুলোতে ফারুকীর নিজস্ব ঢঙ যোগ হওয়ায় এ সকল নাটক যুবসমাজের মধ্যে বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করে। আনিসুল হকের সাথে তার বোঝাপোড়া ভালো এবং তারা একইরকম চিন্তা করতে পারেন বলে একসাথে কাজ করেছেন এমনটি জানিয়েছেন ফারুকী নিজেই। খন্ড নাটকের পাশাপাশি ধারাবাহিক এবং মেগাধারাবাহিক নাটক নির্মান করেও তিনি সফলতা অর্জন করেন। তার পরিচালনায় ৪২০, ৫১বর্তী প্রমুখ ধারাবাহিক নাটক বিপুল জনপ্রিয়তা অর্জন করে। বিডিনিউজের সাথে এক সাক্ষাতকারে ফারুকী জানিয়েছিলেন, টিভির জন্য তিনি যা নির্মান করেছেন সেগুলো নাটক নয়, তিনি এগুলোকে ‘ভিডিও ফিল্ম’ হিসেবে অভিহিত করেন।

মোস্তফা সরয়ার ফারুকী পরিচালিত প্রথম চলচ্চিত্র ব্যাচেলর ২০০৩ সালে মুক্তি পায়। এই চলচ্চিত্রটি মূলত তার পরিচালিত টেলিফিল্ম চড়ুইভাতি এর সিক্যুয়েল। নানা কারণে ছবিটি বেশ আলোচিত এবং সমালোচিত হয়। বিশেষ করে, তার এ চলচ্চিত্রটি নাটক না চলচ্চিত্র – এ বিষয়ে বিতর্ক তৈরী করে। একই ধারাবাহিকতায় তার দ্বিতীয় ছবি মেড ইন বাংলাদেশ আলোচিত-সমালোচিত হয়। অবশ্য তৃতীয় ছবি থার্ড পারসন সিঙ্গুলার নাম্বার থেকে শুরু করে পরের সব ছবিই আন্তর্জাতিকক্ষেত্রে প্রশংসা অর্জন করে এবং বিভিন্ন পুরস্কারে ভূষিত হয়। মোস্তফা সরয়ার ফারুকী তার প্রথম এবং দ্বিতীয় ছবিকে শিক্ষামূলক প্রচেষ্টা হিসেবে গন্য করেন। মেড ইন বাংলাদেশ ছবির পর তিনি ‘আই হেট মাই মাদার’ শিরোনামে একটি চলচ্চিত্র নির্মানের ঘোষনা দিয়েছিলেন, কিন্তু শেষ পর্যন্ত ছবিটি নির্মান করেন নি।

মোস্তফা সরয়ার ফারুকী এবং তার সমমনা ব্যক্তিদের নিয়ে সংগঠন ছবিয়ালের পুরোধা তিনিই। প্রধানত তার সহকারী হিসেবে কাজ করেছে এবং একই ঢঙ এ নাটক নির্মানের সাথে জড়িত তারাই এই সংগঠনের সদস্য। চলচ্চিত্র নির্মাতা রেদোয়ান রনি, ইফতেখার আহমেদ ফাহমি প্রমুখ এই সংগঠনের অন্যতম সদস্য।

ব্যক্তিগত জীবনে মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বিবাহিত। ২০১০ সালের জুলাই মাসে তিনি জনপ্রিয় অভিনেত্রী নুসরাত ইমরোজ তিশাকে বিয়ে করেন।

 

উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র

ব্যক্তিগত তথ্যাবলি

পুরো নাম মোস্তফা সরয়ার ফারুকী
জন্ম তারিখ মে ২, ১৯৭৩
জন্মস্থান নাখালপাড়া, ঢাকা।
স্বামী/স্ত্রী নুসরাত ইমরোজ তিশা

কর্মপরিধি