বাংলাদেশে অন্যতম সেরা বিজ্ঞাপন নির্মাতার নাম অমিতাভ রেজা চৌধুরী। তিনি প্রায় হাজার খানেক টেলিভিশন বিজ্ঞাপন বা টিভিসি নির্মান করেছেন। বিজ্ঞাপন নির্মানের পাশাপাশি তিনি নাটকও নির্মান করেন। আয়নাবাজি চলচ্চিত্রের মাধ্যমে তিনি চলচ্চিত্র পরিচালক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন।
অমিতাভ রেজা পড়াশোনার উদ্দেশ্যে ভারতের বিখ্যাত পুনে ইন্সটিটিউটে ভর্তি হয়েছিলেন। কিন্তু চলচ্চিত্রের প্রতি প্রচন্ড আগ্রহের কারণে তিনি ইকনোমিক্সের পরিবর্তে ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন নিয়ে পড়াশোনা করেন। তবে গ্রাজুয়েশন শেষ করার আগেই তিনি দেশে ফিরে আসেন।
২০০১ সালে হাওয়া ঘর নাটকের মাধ্যমে তার নাট্য নির্মান শুরু হয়। হাওয়া ঘরের চিত্রনাট্য তিনি পুনেতে থাকাকালীন সময়েই লিখেছিলেন। দেশে ফিরে তিনি মাছরাঙা প্রোডাকশন থেকে একুশে টেলিভিশনের জন্য হাওয়া ঘর নির্মান করেন যা দর্শক সমাদৃত হয়। ফলে তিনি বিজ্ঞাপন নির্মানের সুযোগ পান। অবশ্য এ বিজ্ঞাপন নির্মানের কারণে তার আর চলচ্চিত্র সম্পাদনা বিষয়ে পড়াশোনা করা হয়ে উঠেনি। তিনি প্রায় আটটি টেলিভিশন নাটক নির্মান করেন। হাওয়া ঘর এবং একটি ফোন করা যাবে প্লিজ নাটকের জন্য তিনি মেরিল প্রথম আলো শ্রেষ্ঠ চিত্রনাট্য এবং পরিচালনা পুরস্কার লাভ করে।
অমিতাভ রেজা তার বিজ্ঞাপন নির্মান কাজের জন্য একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন – এর নাম হাফ স্টপ ডাউন। এছাড়া তিনি চলচ্চিত্র নির্মানে আসবেন এমন কথা বহুদিন ধরে শোনা গেলেও তা বাস্তবে রূপ পেতে অনেক সময় নেয়। ২০১৩ সালে ইমপ্রেস টেলিফিল্মের উদ্যোগে বুটিক সিনেমা’র কথা ঘোষনা করা হয় যেখানে অমিতাভ রেজাও ‘প্রক্সি’ শিরোনামে একটি চলচ্চিত্র নির্মান করবেন বলে শোনা গিয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বুটিক সিনেমাই বন্ধ হয়ে যায়।
অমিতাভ রেজা ২০০৭ সালে ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন মডেল তারকা জেনিকে। কিন্তু বনিবনা না হওয়ায় তাদের এ সংসার টেকেনি। ২০১০ সালে তাদের মধ্যে ডিভোর্স হয়ে যায়। পরবর্তীতে অমিতাভ আবারও গোপনে বিয়ে করেন। প্রথম বিবাহবার্ষিকীর কেক কাটার ছবি শেয়ার করার মাধ্যমে তার এ বিয়ের খবর জানা যায়। তার দ্বিতীয় স্ত্রী জনপ্রিয় মডেল ও অভিনেত্রী মিথিলার ছোট বোন মিম।
অমিতাভ রেজার পৈতৃক বাড়ি কিশোরগঞ্জে, তবে তিনি জন্মেছেন ব্রাহ্মনবাড়িয়ায় নানাবাড়িতে এবং বড় হয়েছেন ঢাকার ভূতের গলিতে। তিনি সানফ্লাওয়ার স্কুল থেকে প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করার পর ঢাকার বিএএফ শাহিন স্কুল ও কলেজ থেকে এসএসসি এবং এইচএসসি পড়াশোনা সম্পন্ন করেন। রিমাট্যয়াড আথ্রাইটিসে আক্রান্ত হওয়ার কারণে তার পড়াশোনায় যথেষ্ট ব্যাঘাত ঘটলেও চাচা কমরেড আইয়ুব রেজা চৌধুরীর সান্নিধ্যের কারনে বাম রাজনীতি সাহিত্যের প্রতি তার আগ্রহ বাড়তে থাকে।