ডা. অরূপ রতন চৌধুরী পেশায় একজন দন্ত চিকিৎসক। কিন্তু প্রায় ত্রিশ বছর ধরে তামাকজাত, ধূমপান, দাঁতের রোগ ইত্যাদি বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টির জন্য কাজ করার কারণে তিনি বেশি পরিচিতি পেয়েছেন। তার প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র স্বর্গ থেকে নরক-ও তার এ কার্যক্রমের একটি অংশ হিসেবে গণ্য। এর আগে তিনি ধূমপান বিষয়ে প্রামাণ্যচিত্র নির্মান করেছেন।
ডা. অরূপ রতন চৌধুরী ১৯৭৮ সাল থেকে নিয়মিত (সাপ্তাহিক) টেলিভিশন ও রেডিওর মত মিডিয়া তে তামাকজাত , ধূমপান, ওরাল ক্যান্সার , দাঁতের রোগ , ডায়াবেটিস ও অন্যান্য পদ্ধতিগত রোগ স্বাস্থ্য শিক্ষা কর্মসূচি গ্রহণ করেন। তাঁর সবচেয়ে জনপ্রিয় স্বাস্থ্য বিষয়ক টেলিভিশন প্রোগ্রাম ‘ধুমপান বিষপান’ ১৯৮৪ সাল থেকে বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) তে প্রচারিত হয়ে আসছে যা ধূমপানের বিপদ সম্পর্কে গণসচেতনতা সৃষ্টি করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।গনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে ডঃ চৌধুরী নিয়মিত ওরাল স্বাস্থ্য বিষয়ক প্রোগ্রাম বিশেষত তামাক ব্যবহার এর ফলে ওরাল ক্যান্সার ও অন্যান্যরোগ সৃষ্টি বিষয়ক প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করেন যা একই সময়ে জনগণ ও সরকার উভয়ের জন্য স্বাস্থ্য শিক্ষার জন্য প্রেরণা হিসেবে কাজ করে।ডা. অরূপ রতন চৌধুরীর তামাকজনিত রোগ বিশেষ করে ডেন্টাল ও ওরাল স্বাস্থ্যের উপর , ওষুধের অপব্যবহার ও প্রতিরোধ বিষয়ক ৬ টি বই প্রকাশিত হয়েছে।
দেশব্যাপী বিশেষ করে স্কুল কলেজে গামী ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে গণসচেতনতা ও শিক্ষার লক্ষ্যে দেশের বিশিষ্ট চলচ্চিত্র অভিনেতা অভিনেত্রী, শিল্পী ও তারকা নিয়ে ডঃ চৌধুরী প্রতিষ্ঠা করেন মাদক ও ধূমপানবিরোধী সংগঠন ‘মানস’। এই সংগঠনের প্রধান উদ্দেশ্য হলো,দেশের প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করে কৌতুহল ও পরিস্থিতির শিকার হয়ে তামাক ও মাদক দ্রব্য ব্যবহারে ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের অবহিত করা। মানস সংগঠন টি নিয়মিত বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে লিফলেট , পোস্টার, বই ও ভিডিও উপস্থাপনার মাধ্যমে বক্তৃতা ও সেমিনারের আয়োজন করে থাকে।সেমিনারের পর সেসকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলো কে “ধূমপান মুক্ত জোন ” হিসেবে ঘোষণা করা হয়। মানস প্রতিবছর ই এই ধরণের প্রোগ্রাম গুলো আয়োজন করে থাকে। ধূমপান ও মাদকবিরোধী আন্দোলনে বাংলাদেশে অগ্রণী ভূমিকা পালনের জন্য ১৯৯৫ সালে ‘মানস’ ও ১৯৯৮ সালে ডা. অরূপ রতন চৌধুরী বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার আন্তর্জাতিক পুরস্কার ‘টোব্যাকো অর হেলথ’ মেডেল লাভ করেন।
দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে তিনি মাদকবিরোধী কার্যক্রমের সাথে সম্পৃক্ত। তাই তাঁর কাজের একটা বৃহৎ জায়গা জুড়ে রয়েছে ‘মাদকবিরোধী অভিযান’। মাদকের কুফল ও এর চিকিৎসা নিয়ে ‘মানস’ এর ব্যানারে ডা. অরূপ রতন চৌধুরী নির্মাণ করছেন চলচ্চিত্র ‘স্বর্গ থেকে নরক’। ২০০৩ সালে মাদকাসক্তি নিয়ে নির্মিত ‘নেশা সর্বনাশা’ এর জন্য শ্রেষ্ঠ তথ্যচিত্র নির্মাতা হিসেবে বাচসাস পুরস্কার পান।
তাঁর স্ত্রী গৌরী চৌধুরী। এ দম্পতির দুই ছেলে- অনির্বাণ ও সপ্তক।