কাহিনী সংক্ষেপ
নীরা ও অমিত স্বামী স্ত্রী। কাজের খাতিরে নীরাকে প্রায়ই দেশের বাইরে যেতে হয়। একবার আর দেশে ফেরে না নীরা। আরেকটি সম্পর্কে জড়িয়ে সংসার ছাড়ে। এরপর সড়ক দুর্ঘটনায় ছেলে অর্কর মৃত্যুতে পাগল হয়ে যায় অমিত। এদিকে গ্রামের মেয়ে সোনিয়া কবি সেজে থাকা এক নারী পাচারকারির খপ্পরে পড়ে বিক্রি হয়ে যায়। সম্ভ্রম হারানোর পর মানসিক ভারসাম্যও হারিয়ে ফেলে মেয়েটি। হাসপাতালে পরিচয় হয় অমিত ও সোনিয়ার। প্রতিশোধের আগুতে জ্বলতে থাকা দুটি মানুষ একে অপরের সঙ্গে হাত মেলায়। (Zero Degree)
বলাকাতে মর্নিং শোতে দেখে ফেললাম বহুল আলোচিত জিরো ডিগ্রী ।
সিনেমার গল্পে প্রচুর অসঙ্গতি আছে , কিন্তু আমি কোন স্পয়লার করতে চাই না, তাই সেগুলি উল্লেখ করলাম না!!! তবে বাংলা মুভিতে সাইকো থ্রিলারের খানিকটা স্বাদ পেলাম , এটাই প্লাস পয়েন্ট। সিনেমার এক ঘনটায় বিরতি দিসিল , তাই ২ ঘণ্টা পর ভাবসিলাম একটা খুনের মাধ্যমে কাহিনী শেষ!! কিন্তু না, আসল টুইস্ট এবং মজ পাইসি হল দুই ঘণ্টার পড়ে শেষ আধা ঘনটায়!!!
জিরো ডিগ্রী ইজ এ মাস্ট ওয়াচ !!! কেন দেখবেন??
জিরো ডিগ্রী হল বিশ্বাস ভঙ্গ ও প্রতিশোধের গল্প। টিপিকাল বাংলা সিনেমার মত বাবার হত্যার প্রতিশোধ না !!! এখানে নায়কের নায়িকার সাথে কোমর দুলানো নাচও নাই। কিন্তু দুইটা ছেলে ও মেয়ে তাদের ভিন্ন প্রেক্ষাপটে কিভাবে প্রিয়জন্দের দ্বারা বিশ্বাস ঘাতকতার শিকার হয় এবং এরপর কিভাবে প্রতিশোধ নেয় সেটাই এখানে দেখানো হইসে।
তবে এই সিনেমা কিভাবে আমাদের সেন্সর বোর্ড সাধারণ বিভাগে মুক্তি দিল আমি বুঝলাম না!!!
সিনেমায় অতিরিক্ত পরিমাণ ধুম্পানের দৃশ্য আছে, আমার মতে মানসিকভাবে বিষণ্ণ যারা তাদের এই মুভি দেখতে দেয়া উচিত না এবং সিনেমাটি ১৫+ হিসেবে ঘোষণা করা দরকার ছিল। কোন শিশু এই সিনেমা দেখলে মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে যেতে পারে ।
তবে সব কথার শেষ কথা , এমন সিনেমা মাত্র ২৫ টি হলে মুক্তি পাওয়া আমাদের জন্যই দুর্ভাগ্যজনক । বাংলাদেশে সিনেমার বিপ্লব হচ্ছে , আপনারা হলে যান ।
আমার ব্যাক্তিগত রেটিং : ৮/ ১০
বাংলা সিনেমার জয় হোক
দেখে আসলাম প্রথম (আমার দেখা) বাংলাদেশী “সাইকো+থ্রিলার” মুভি “Zero Degree (জিরো ডিগ্রী)”
ছবিটা দেখতে যে এক্সপেকটেশন নিয়ে গিয়েছিলাম তার চেয়ে ঢের বেশি পেয়েছি। প্রথমেই অনিমেষ আইচকে ধন্যবাদ জানাই নতুন ধারার মোড়ক উন্মোচনের জন্য। আপনাদের জন্যই আজও আশা নিয়ে হলে যাই।
কাহিনী (স্পয়লার নাই) : ছবির কাহিনী বিন্যাস ছিল ধীর কিন্তু টেনশনের। আস্তে আস্তে আপনার নার্ভের সাথে খেলবে ছবিটি। একটি পর্যায়ে আপনি ভাবতে থাকবেন শেষে কি হবে। দুটি ভিন্ন মানুষের কাহিনী সমান্তরালে চলতে চলতে একটি বিন্দুতে এসে মিলবে। তারপর হবে আসল খেলা। অনেকে ছবিটি দেখে ভাবতে পারেন এটিকে বোধহয় “রিভেঞ্জ” ক্যাটাগরিতে ফেলা উচিত। আমি অবশ্য তা বলব না। চিত্রনাট্যটা অন্য ধাঁচের। গড়পড়তা বাংলা ছবির সাথে একে মেশানো ঠিক হবে না।
দৃশ্যায়ন: এক কথায় মাসকারা। বেশ কিছু চিত্র আপনি আগে হয়তো দেখেনও নি।
অভিনয়: জয়া আর মাহফুজ। এদের সম্পর্কে নতুন করে কিছু বলার নাই। তবে বলার মতো হলো রুহির অ্যাকটিং। এতো বড় মাপের দুই জনের সাথে পাল্লা দিয়ে তাদের ভিড়ে সে হারিয়ে যায়নি। জয়া আহসান, ওরে সে কি ভিলেনি হাসিটাই না দিলো! সাইকোপ্যাথদের মধ্যে এই হাসিটা দেখা যায়। লেকটারের হাসি।
ডায়লগ: যথাযোগ্য স্হানে যথাযোগ্য ডায়লগ। যেখানে ডায়লগের দরকার নেই সেখানে রবীন্দ্র সংগীত মেরে দিয়েছে। আরে হেসে ফেললেন নাকি? হাসির কিছু নাই ভাই। সিকোয়েন্সের সাথে রবীন্দ্র সংগীতের এতো ভাল সংমিশ্রন আমি আর দেখি নি। ছবিতে একটা জেমসের গানও আছে।
পরিচালনা: পরিচালক বেশ বড়সড় একটা রিস্ক নিয়েছেন। জাজ মাল্টিমিডিয়ার বিভিন্ন বানিজ্যিক ছবির সাথে টেক্কা দেয়া মতো ছবি এটা না। সবাই খাবেও না। আমি দেখেছি অনেকেই ছবি শেষ না করেই বেরিয়ে যাচ্ছে। তবে পরিচালনায় যথেষ্ট নৈপুণ্যের ছোঁয়া আছে। আশাকরি, ভবিষ্যতে আরো ভালো কিছু ছবি পাবো।