সম্রাট : বাণিজ্যিক সিনেমার পাল্টে যাবার উদাহরণ

দিনরাত পাল্টে যাব, পাল্টে যাব বলে কান ভারি করে যখন দেখব চেষ্টাটা শুরু হয়েছে সেটাকে উৎসাহ দেয়াটাই কাজের কাজ হবে। ২০১৬ সালের ঈদুল ফিতর যে কারণে সিনেমাহলের জন্য শুভ এবং দর্শক ফিরতে শুরু করেছে তার অন্যতম অংশীদার ‘সম্রাট’ সিনেমা।

বাণিজ্যিক সিনেমার দিনবদল হোক এ স্বপ্ন রোজ দেখি।স্বপ্নটা একদিনে সত্যি হবে এটা স্বপ্নেও ভাবি না কারণ অাস্তে অাস্তে হলে আকারটা ভালো হবে।কেননা ‘ slow and steady wins the race’ প্রবাদটি চোখের সামনেই অাছে।ভুল হবে, পড়ে যাব, পড়ে গিয়ে অাবার উঠে দাঁড়াব এভাবে একদিন অাসবে যেদিন না পড়ে গিয়ে চলতে পারব।জানি সে দিন অাসা পর্যন্ত পথ চলতে হবে।এ পথ চলাতে ‘সম্রাট’ উদাহরণ। Continue reading

বাংলা চলচ্চিত্রের “অস্তিত্ব” রক্ষার লড়াই

Ostitto bangla film by anonno mamun with arifin shuvo nusrat imroz tisha (2)প্রারম্ভিক কথাঃ

সম্প্রতি মুহম্মদ জাফর ইকবাল স্যারের অটিজম নিয়ে একটা লেখা পড়ে প্রতিবন্ধীরা যে বিশেষ কিছু গুনের অধিকারী তা জানা যায়। তাদের মধ্যে কেউ খুব সহজে অংকের সমাধান করতে পারে, কেউ ভালো ছবি আঁকতে পারে,  কেউবা ভালো গান গাইতে পারে। এই ছবির ট্রেইলার দেখে ও প্রিভিউ পড়ে আভাস পাওয়া গিয়েছিল এদের নিয়ে কিছু একটা করতে যাচ্ছে আমাদের চলচ্চিত্রশিল্প। যদিও আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশে “পা”, ”বারফি”র মত কিছু চলচ্চিত্র নির্মিত হয়েছে। আমাদের দেশে এই ধরনের চলচ্চিত্র এবারই প্রথম (আরও দুইটা আসছে)। Continue reading

বাংলা ছবির ইতিহাসে নতুন অধ্যায়ঃ অস্তিত্ব

e2

খুব গরমে দেশ-বাসীর অবস্থা যখল একেবারেই নাকাল তখন ঢাক-ঢোল পিটিয়ে অনেকটা জানান দিয়েই কাল-বৈশাখী ঝড়ের মতোই হানা দিল অস্তিত্ব। কাল বোশেখী কেন বললাম? বেশ কিছু দিন ধরেই কেমন ধীর লয়ে হাঁটছিল সিনেমা হল গুলো। সেই একই প্রেম কাহিনী আর ফাইটিং ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে, বাংলা সিনেমায় নতুন বলতে এইগুলোই। কিন্তু অনন্য মামুনের অস্তিত্ব এই সাধারণ গতির বাইরে, যারা বাংলা ছবি নিয়ে নাক শিঁটকোয় তাদের মুখে অনেক কথাই শোনা গেছে-কৃষ ছবির নকল পোস্টার আর বরফী ছবির নকল অভিনয়। তাদের উদ্দেশ্যে কেবল একটা কথাই বলি-পৃথিবীর সব মা্যের অনুভূতিই এক, কেবল সম্বোধনটাই ভিন্ন। কেউ বলে -মা, কেউ বা মাম্মি, কেউ বলে – আম্মিজান। তাহলে একজন বিশেষ শিশু তার জন্ম যে দেশেই হোক না কেন তাদের স্বভাব কি আলাদা হবে? তা যতোই নাক শিঁটকোক, অস্তিত্ব কিন্তু হাউজ ফুল। এই হাউজ ফুলের জন্য অস্তিত্ব টিম কিন্তু কম কষ্ট করেনি, পুরো আস্ত একটা সিনেমা বানিয়ে খান্ত থাকেনি, সেই ডিসেম্বর থেকেই মিডিয়া পাড়া-শপিং পাড়ায় ঘুরছে। বলা বাহুল্য, অস্তিত্ব টিম আসলেই বাংলা সিনেমার অস্তিত্বর জন্যেই লড়েছে এবং তারা সফল। Continue reading

আলাদা আলাদা নেকাব্বরের মহাপ্রয়াণ

nekabborer-mohaprayan

কবিতা অবলম্বনে নির্মিত চলচ্চিত্র দুলর্ভ না হলেও খুব একটা সুলভ নয়। যা সুলভ নয়, তা নিয়ে উচ্চকিত হবার যথেষ্ট কারণ থাকতেই পারে। নেকাব্বরের মহাপ্রয়াণ নির্মলেন্দু গুণের বিখ্যাত একটি কবিতা। সে কবিতা অবলম্বনে চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছেন মাসুদ পথিক, যিনিও একজন কবি। একজন কবি কী করে আরেকজন কবির কবিতাকে ব্যাখ্যা করে সেল্যুয়েডে রূপান্তর ঘটান সেটাও যথেষ্ট কৌতুহলজনক। এটা পাঠকের কল্পনাকে সীমায়িত করে কিনা, সে প্রশ্নও করা যেতে পারে। তবে আমরা করব না। Continue reading

রিজু’র বায়স্কোপ

BapjanBG_865460876বাপজানের বায়স্কোপের গল্প এক চরকে ঘিরে-ভাগিনার চর। একাত্তরের যুদ্ধাপরাধী সেকান্দর বক্স তার আদরের ভাগিনা জীবন সরকার (শহীদুজ্জামান সেলিম)-কে একটা চর উপহার দিয়েছিলেন। জীবন এখন সেই চরের হর্তা-কর্তা। সেই চরের কৃষক হলো হাসেন মোল্ল্যা (শতাব্দী ওয়াদুদ)। তার বাবা একসময় বায়স্কোপের মেশিন নিয়ে বায়স্কোপ দেখাতো। শতাব্দীর মুক্তিযোদ্ধা চাচাকে একাত্তর সালে পাকিস্তানিদের হাতে তুলে দিয়েছিল সেলিমের মামা সেকান্দর। হাসেন তাই চাচার মৃত্যু আর বাপজানের বায়স্কোপ নিয়ে শুরু করলো এক নতুন গল্প বলা। যে গল্পে সরাসরি তুলে ধরা হয়েছে যুদ্ধাপরাধী সেকান্দরের কীর্তিকলাপ। সেকান্দর এখন সম্মানী মানুষ, সংসদ নির্বাচনেও দাঁড়াবেন। তার নামে যাতে কোন “মিথ্যা রটনা” না ছড়ানো হয়, তাই সেলিম বায়স্কোপ দেখানো বন্ধ করতে বললেন। কিন্তু শতাব্দী তার কথা না শোনায়, সেলিম এলাকায় লবণের সরবরাহ বন্ধ করে দিলেন। সবার রাগ গিয়ে পড়লো হাসেনের উপরে। Continue reading

হলে গিয়ে কৃষ্ণপক্ষ দেখে আসুন। কেঁদে আসুন।

Krishnopokkhoমেহের আফরোজ শাওন কৃষ্ণপক্ষ উপন্যাস থেকে চিত্রনাট্য করেছেন, সেই চিত্রনাট্য অবলম্বনে তিনি সিনেমা বানিয়েছেন। উপন্যাস থেকে তিনি কিছু বাদ দিয়েছেন, কিছু যোগ করেছেন। বর্তমান সময়ের উপযোগী করতে কিছু জিনিস এডাপ্টেশন করেছেন। হলে গিয়ে আপনি ‘কৃষ্ণপক্ষ’ সিনেমা দেখতে পাবেন। ‘কৃষ্ণপক্ষ’ উপন্যাস সিনেমা হলে দেখতে পাবেন না। Continue reading

সুইটহার্ট : (সমদ্বিবাহু) ত্রিভুজ প্রেমের ছবি

Sweet Heart romantic bangladeshi film with bappy, bidya sinha mim riazবাংলাদেশী সিনেমাগুলো হয় ঝালমুড়ির মত- ড্রামা, রোম্যান্স, অ্যাকশন, সোশ্যাল মেসেজ, কমেডি-ট্র্যাজেডি সব মিলিয়ে পাঁচ মিশালী ফ্লেভারে ভরপুর। ক্ষেত্র বিশেষে এত বিপরীতধর্মী সাবজেক্টের সম্মিলন মেনে নিলেও, সব সময় তা দেখতে ভালো লাগে না। শুরুতে এতখানি কথা বলে নিলাম কারণ, রোম্যান্টিক মুভি সুইটহার্ট আগাগোড়া রোম্যান্টিকই থেকেছে। অযথা অ্যাকশন দেখিয়ে কখনো তার জনরার সাথে বেঈমানি করেনি। Continue reading

আন্ডার কনস্ট্রাকশনে দর্শকের গন্তব্য

rubayet-uc1

রুবাইয়াত হোসেনেরআন্ডার কনস্ট্রাকশনে’ পাওয়া যাবে ভিন্ন ভিন্ন অর্থে জীবনকে সমর্পণ করা কয়েকজন নারীকে। প্রধান চরিত্র রয়া। সিনেমাটির প্রতিটি দৃশ্যে তার উপস্থিতি। এমনকি যখন দালান-কোঠা নির্মাণের দৃশ্য দেখানো হয় বা গৃহকর্মী দূর থেকে লিফটম্যানের সঙ্গে ইশারায় কথা বলে— তখনও। একটি শহরের নানান টুকরো দৃশ্যের সমান্তরালে রয়ার চলাচল। অর্থপূর্ণ দৃশ্যমানতা। মানুষ তার পারিপার্শ্বিকতার অংশ, আবার একাও। বাক বিনিময়ও সংক্ষিপ্ত ও সংযত। যা হয়ত নীরবতার মাঝে জীবনের অর্থময় হয়ে উঠার কথা বলে। যা এখনও ‘আন্ডার কনস্ট্রাকশন’। Continue reading

ফিল্ম রিভিউঃ আন্ডার কনস্ট্রাকশন

5901edfa5f8a2313cb3cc495c97987d4-Underconstruction_thumbnail-caption-2রুবাইয়াত হোসেনের দ্বিতীয় চলচ্চিত্র ‘আন্ডার কনস্ট্রাকশন’। ছবিটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘রক্ত করবী’ নাটকের উপর ভিত্তি করে নির্মিত বললে ভুল বলা হবে তবে ‘রক্ত করবী’ নাটককে ঘিরেই নির্মিত হয়েছে ‘আন্ডার কনস্ট্রাকশন’। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নাটককে ভিত্তি করে অথবা কেন্দ্র করে বাংলা চলচ্চিত্র নির্মাণ একেবারে নতুন নয়। আমার জানা মতে এর আগে ঋতুপর্ন ঘোষের ‘চিত্রাঙ্গদা’, কৌশিক মুখার্জির ‘তাসের দেশ’ নির্মিত হয়েছে। বাংলাদেশে রুবাইয়াত হোসেন তৈরি করলেন ‘আন্ডার কনস্ট্রাকশন’।
Continue reading

ইমতিয়াজ আসলে পুঁজিবাদী, একটা পিউর পুরুষতন্ত্র, সে প্লেয়ার এবং রয়া তার ফাঁদে

10314750_1120658794645158_7292627879107535726_n

রয়া একজন পুরুষতান্ত্রিক নারী
‘আন্ডার কন্সট্রাকশন’ নিয়ে প্রথমেই যা শুনলাম সেটা হলো ‘নারীবাদী সিনেমা’। প্রচলিত নারীবাদের মূল লক্ষ্য মানুষ হওয়া এমন আমার মনে হয় না। মনে হয় এ নারীবাদ অন্য কিছু বলতে চায়। সে নারীকে ‘নারী’ (কিন্তু এ ‘নারী’ কোন নারী?) হিসাবেই আলাদা এক সত্ত্বা হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করতে চায়, তবে সেটা সে করে পুরুষের সাথে প্রতিযোগিতা করেই। তাই নারীর পুরুষ হয়ে ওঠার ইচ্ছাই নারীবাদ হিসাবে দেখতে পাই। নারীবাদের যে প্রচলন সেটা শেষমেশ পুরুষতন্ত্রেরই একটা আচরণ। তাই রয়াও পিতৃতন্ত্র থেকে বের হওয়া একজন পরাধীন পুরুষতান্ত্রিক নারী। যে নারী ১২ বছর ধরে থিয়েটার করছে, আধুনিক পোশাক পড়ছে, স্বামী বিদেশে থাকা অবস্থায় পরকীয়া করছে সে কীভাবে পরাধীন পুরুষতান্ত্রিক হয়? কীভাবে, সেটা ব্যখা করছি। Continue reading