নুসরাত ফারিয়ার প্রথম পরিচয় তিনি একজন উপস্থাপক এবং মডেল। বিজ্ঞাপনচিত্রে গ্লামারাস উপস্থিতি এবং উপস্থাপনায় ভিন্নধর্মী স্টাইলের কারণে নজর কাড়তে সক্ষম হন তিনি। চলচ্চিত্রে তার আগমনও বেশ জাকজমকের সাথে। নায়িকা মাহিয়া মাহির সাথে জাজ মাল্টিমিডিয়ার সম্পর্কের অবনতি ঘটার কিছুদিন পর পাঁচতারকা হোটেলে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে জাজ মাল্টিমিডিয়া তাদের নতুন নায়িকা হিসেবে নুসরাত ফারিয়াকে সবার সামনে তুলে ধরেন এবং বাংলাদেশ-ভারত যৌথ প্রযোজনার ছবি প্রেমী ও প্রেমী’র নায়িকা হিসেবে ঘোষনা করেন।
তবে প্রেমী ও প্রেমীই নুসরাত ফারিয়ার প্রথম চলচ্চিত্র নয়। ২০১৪ সালে রেদওয়ান রনি পরিচালিত মরীচিকা চলচ্চিত্রে নায়িকা হিসেবে অভিনয়ের জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়েছিলেন নুসরাত ফারিয়া, কিন্তু অজ্ঞাত কারণে চলচ্চিত্রটির কাজ শুরু হয়নি। বরং কিছুদিন পরে চলচ্চিত্রে নাম এবং পাত্র-পাত্রী বদল করে রেদওয়ান রনি নতুন চলচ্চিত্রের কাজ শুরু করেন। অন্যদিকে, জনপ্রিয় নায়িকা মাহিয়া মাহি হঠাৎ চলচ্চিত্র ছেড়ে দেয়ার ঘোষনা দেয়ার কিছুদিন পরে আবারও ফিরে আসলেও জাজ মাল্টিমিডিয়ার সাথে সম্পর্কের অবনতি ঘটে এবং জাজ মাল্টিমিডিয়ার পক্ষ থেকে নুসরাত ফারিয়াকে জাজের নতুন নায়িকা হিসেবে সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়া হয়। একই অনুষ্ঠানে জাজ ফাল্গুনী রহমান জলি নামের আরেক নায়িকাকেও পরিচয় করিয়ে দেয়া হয়।
২০১০ সালে বাংলাদেশ টেলিভিশনের ‘জাতীয় টেলিভিশন বিতর্ক’ প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে মিডিয়ায় যাত্রা শুরু করেন নুসরাত ফারিয়া। ওই বছর শ্রেষ্ঠ বক্তা হিসেবে পুরস্কার অর্জন করেন তিনি। পরে ডিজে হিসেবে বেশ কয়েকদিন কাজ করেন তিনি। আরটিভির ‘ঠিক বলছেন তো‘ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রথম টিভি পর্দায় উপস্থাপনায় আসেন নুসরাত। ২০১২ সালে এনটিভির ‘থার্টিফাস্ট ধামাকা কক্সবাজার’ অনুষ্ঠানটি ফারিয়ার ক্যারিয়ারের টার্নিং পয়েন্ট হিসেবে ধরা দেয়। ২০১৩ সালের জানুয়ারিতে বলিউড প্লেব্যাক শিল্পী সুনিধি চৌহানের ‘সুনিধি লাইভ কনসার্ট’ শিরোনামের অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করে দারুণ প্রশংসিত হন তিনি। তার উপস্থাপিত বিভিন্ন জনপ্রিয় অনুষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে আরটিভির ‘লেট নাইট কফি উইথ নুসরাত ফারিয়া’, এসএ টিভির ‘ক্লিয়ার এসএ লাইভ স্টুডিও’, এটিএন বাংলার ‘ট্রেন্ড’, জিটিভির ‘লাক্স ওয়ার্ল্ড অব গ্ল্যামার’ এবং এনটিভির ‘স্টাইল অ্যান্ড ট্রেন্ড’, রেডিও ফুর্তিতে ‘নাইট শিফট উইথ ফারিয়া’ ইত্যাদি। এছাড়া নুসরাত ফারিয়অ ‘ডোর’ নামে ফ্যাশন হাউসের ব্র্যান্ড মডেল এবং ফেয়ার অ্যান্ড লাভলি, সিম্ফনি, সিটিসেল রিচার্জের বিজ্ঞাপনচিত্রে মডেল হয়ে কাজ করেন।
নুসরাত ফারিয়ার দাদা আর্মি অফিসার ছিলেন। সেই সূত্রে ঢাকার ক্যান্টনমেন্টে যৌথপরিবারে তার শৈশব কৈশোর কেটেছে। তিন বোন, এক ভাইয়ের মধ্যে তিনি মেজ। শহীদ বীরউত্তম লে. আনোয়ার গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজের ছাত্রী ছিলেন নুসরাত ফারিয়া। সেখান থেকে ২০১০ সালে জিপিএ-৫ পেয়ে এসএসসি এবং ২০১২ সালে রাজউক উত্তরা মডেল কলেজ থেকে গোল্ডেন এ প্লাস পেয়ে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন তিনি। তিনি ইন্ডিপেন্ডন্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ (আইইউবি) তে বিবিএ-তে গ্রাজুয়েশন করছেন। ফারিয়ার বাবা মাজহারুল ইসলাম এবং মা ফেরদৌসি বেগম, বোন মারিয়া এবং ছোট ভাই ফরিদ।
তথ্য কৃতজ্ঞতা: শেখ সামিরাহ